🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚

🌷শ্রীমনঃ শিক্ষা🌷

🦚💐🏵️🌷🌺💐🦚

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I (শ্রীমনঃ শিক্ষা শ্রীল-রঘুনাথদাস-গোস্বামিপাদ বিরচিত)

 

আজানুলম্বিত – ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎ প্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

 

(৭)

প্রতিষ্ঠাশা ধৃষ্টা স্বপচরমণী মে হৃদি নটেৎ

কথং সাধু-প্রেমা স্পৃশতি শুচিরেতন্ননু মনঃ।

সদা ত্বং সেবস্ব প্রভুদয়িতসামন্তমতুলং

যথা তাং নিষ্কাশ্য ত্বরিতমিহ ত্বং বেশয়তি সঃ।।৭।।

অর্থাৎ,- হে মন! প্রতিষ্ঠাশারূপা ধৃষ্টা স্বপচরমণী আমার হৃদয়ে নৃত্য করিতেছে, অতএব বিশুদ্ধ সাধুপ্রেম কিরূপে এই হৃদয় স্পর্শ করিবে? তুমি সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরূপ অতুলনীয় সামন্তরাজের সেবা কর, যাহাতে তিনি সেই প্রতিষ্ঠাশারূপা ধৃষ্টা শ্বপচরমণীকে হৃদয় হইতে অপসারিত করিয়া সাধুপ্রেমকে তথায় প্রবিষ্ট করাইবেন।।৭।।

 

কপটতা হইলে দূর, প্রবেশে প্রেমের পূর

জীবের হৃদয় ধন্য করে।

অতএব বহু যত্নে, আনিবারে প্রেমরত্নে

কাপট্য রাখহ অতি দূরে।।

 

শুন মন, নিগূঢ় বচন।

প্রতিষ্ঠাশা ধৃষ্টাধম, চণ্ডালিনী হৃদে মম

যতকাল করিবে নৰ্তন।।

 

কাপট্য তদুপপতি, না ছাড়িবে মম মতি

শ্বপচিনী যাহে হয় দূর।

তদর্থে যতন করি’, প্রভুপ্রেষ্ঠ-পদ ধরি’

সেবা তুমি করহ প্রচুর।।

 

তেঁহ প্রভু-সেনাপতি, বিক্রম করিয়া অতি

শ্বপচিনী-সঙ্গ ছাড়াইয়া।

রাধাকৃষ্ণ-প্রেমধনে, দিবে কবে অকিঞ্চনে

বলে ভক্তিবিনোদ কাঁদিয়া।।৭।।

 

(৮)

যথা দুষ্টত্বং মে দবয়তি শঠস্যাপি কৃপয়া

যথা মহ্যং প্রেমামৃতমপি দদাত্যুজ্জ্বলমসৌ।

যথা শ্রীগান্ধৰ্বা-ভজন-বিধয়ে প্রেরয়তি মাং

তথা গোষ্ঠে কাক্কা গিরিধরমিহ ত্বং ভজ মনঃ।।৮।।

অর্থাৎ,- হে মন! শ্রীগিরিধর শ্রীকৃষ্ণ যাহাতে কৃপাপূর্বক মাদৃশ শঠজনের দুষ্টত্ব দূরীভূত করিয়া উজ্জ্বল প্রেমামৃত প্রদান এবং শ্রীরাধিকা-ভজন বিধিতে প্রেরণা উৎপাদন করেন, তুমি এই গোষ্ঠে কাতরোক্তিদ্বারা তাঁহাকে সেইরূপ ভজন কর।।৮।।

 

ব্রজভূমি চিন্তামণি, চিদানন্দ-রত্নখনি

যথানিত্য রসের বিলাস।

‘জীবে দিব গূঢ় ধন’, চিত্তি' কৃষ্ণ বৃন্দাবন

জড়ে আনি' করিল প্রকাশ।।

 

কৃষ্ণ মোর দয়ার সাগর।

তুমি মন ব্রজধাম, ভ্ৰমি’ ভ্ৰমি’ অবিরাম

ডাক কৃষ্ণে হইয়া কাতর।।

 

অবিদ্যা-বিলাসবশে, ছিলে তুমি জড়রসে

দুষ্টতা হৃদয়ে পাইল স্থান।

হৈলে তুমি শঠরাজ, ভুলিলে আপন কাজ

হৃদয়ে বরিলে অভিমান।।

 

এবে উপদেশ শুন, গাইয়া যুগলগুণ

গোষ্ঠে গোষ্ঠে করহ রোদন।

দয়া করি গিরিধর, শুনিয়া কাকুতি-স্বর

তবে দোষ করিবে শোধন।।

 

উজ্জ্বল-রসের প্রীতি, শ্রীরাধা-ভজন-নীতি

অনায়াসে দিবেন আমায়।

রূপ-রঘুনাথ-মোরে, কৃপা করি অতঃপরে

এই তত্ত্ব গোপনে শিখায়।।৮।।

 

(৯)

মদীশানাথত্বে ব্রজবিপিনচন্দ্রং ব্রজবনে-

শ্বরীং মন্নাথত্বে তদতুলসখীত্বে তু ললিতাম্।

বিশাখাং শিক্ষালীবিতরণ-গুরুত্বে প্রিয়সরো-

গিরীন্দ্রৌ তৎপ্রেক্ষা-ললিতরতিদত্বে স্মর মনঃ।।৯।।

অর্থাৎ,- হে মন! তুমি বৃন্দাবনচন্দ্র শ্রীকৃষ্ণকে মদীয় ঈশ্বরী শ্রীরাধিকার নাথরূপে, বৃন্দাবনেশ্বরী শ্রীরাধিকাকে নিজের নাথরূপে, শ্রীরাধিকার অতুলনীয়া সখীরূপে শ্রীললিতাকে, শিক্ষাসমূহের প্রচারণ গুরুরূপে শ্রীবিশাখাকে এবং শ্রীরাধা কুণ্ড ও শ্রীগোবর্ধনকে শ্রীরাধাকৃষ্ণের দর্শন ও ললিত-রতি-প্রদরূপে স্মরণ কর।।৯।।

 

ব্রজবন-সুধাকর, ব্রজবনের ঈশ্বর

ব্রজেশ্বরী আমার ঈশ্বরী।

ললিতা তাঁহার সখী, তুল্য তার নাহি লিখি

বিশাখা শিক্ষিকা পদ ধরি।।

 

এইভাবে ভাব ওরে মন।

রাধাকুণ্ড-সরোবর, গোবর্ধন-গিরীশ্বর

রতিপ্রদ তত্ত্ব তদীক্ষণ।।

 

ব্রজে গোপীদেহ ধরি, মঞ্জরী আশ্রয় করি’

প্রাপ্ত সেবা কর সম্পাদন।

মঞ্জরীর কৃপা হবে, সখীর চরণ পাবে

সখী দেখাইবে নিত্যধন।।

 

প্রহরে প্রহরে আর, দণ্ডে দণ্ডে সেবাসার

করিয়া যুগলধনে ডাক।

সকল অনর্থ যাবে, চিদ্বিলাস-রস-পাবে

ভক্তিবিনোদের কথা রাখ।।৯।।

ক্রমশঃ…