Tuesday, March 31, 2020


শ্রীভগবানের দর্শন
ভগবানের সাথে কথা বলতে চান? সাক্ষাৎ দর্শন লাভ করতে চান?

তাহলে     ১৬  ৩২  ১০        এই নাম্বারে ডায়েল করুন। এটা বৈকুণ্ঠের ভগবানের নাম্বার। তবে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ডায়েল করতে হবে। আসুন কিভাবে ডায়েল করবেন একটু জেনে নিন।

প্রথম সংখ্যা আছে  , নিজে কে শূন্য হইতে হবে। অর্থাৎ অহংকার দূর করুন, আমি আমার এই আমীত্ত্ব দূর করুন। অহংকার বা হিংসা দেখালে চলবে না। ''জীবের স্বরূপ হয় কৃষ্ণ নিত্য দাস'' তাই নিজেকে শূন্য মনে করে পূর্ণতম শ্রীভগবানের শ্রীচরণে প্রার্থনা করুন।

এরপর সংখ্যা আছে   অর্থাৎ ভক্তির নয় অঙ্গ দ্বার শ্রীভগবানের ভক্তি (দিব্য প্রেমময়ী সেবা) করতে হবে। শ্রীমদ্ভাগবতে  নববিধা ভক্তির কথা বলা হয়েছে

''শ্রবণং কীর্ত্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্।
অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদনম্।।

ইতি পুংসার্পিতা বিষ্ণুর্ভক্তিচেৎ নবলক্ষণা।
ক্রিয়েত ভগবতীহদ্ধা যন্মন্যেহধীতুত্তমম্।।''

তারপর সংখ্যা আছে  ১৬, ৩২ ভক্তির প্রকাশ ঘটলে ১৬ নাম ৩২ অক্ষর মহামন্ত্র যপ করুন। কলিযুগের যুগধর্ম হচ্ছে নাম সংকীর্ত্তন। সম্বন্ধে শ্রীমদ্ভাগবতে (১২//৫২) শুকদেব গোস্বামী পরিক্ষিত মহারাজকে বলেছেন,-
''কৃতে যদ্ধ্যায়তো বিষ্ণুং ত্রেতায়াং ঘজতো মখৈ।
দ্বাপরে পরিচর্যায়াং কলৌ তদ্ধরিকীর্ত্তনাৎ।।'' 

অর্থাৎ, সত্যযুগে বিষ্ণুকে ধ্যান করে, ত্রেতাযুগে যজ্ঞের মাধ্যমে যজন করে এবং দ্বাপর যুগে অর্চন আদি করে যে ফল লাভ হত, কলিযুগে কেবলমাত্র ''হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র'' কীর্ত্তনে সেই সকল ফল লাভ হয়। হে আমার প্রাণধন শ্রীকৃষ্ণ তুমি আমাদের হৃদয়ে ভক্তির ভাব জাগিয়ে দাও। এইভাবে একমনে তন্ময় হয়ে শ্রীহরিনাম জপ করতে হবে,-
''হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।''

এরপর সংখ্যা আছে  ১০। অর্থাৎ মহামন্ত্র যপ করার ফলে চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক, বাক, পানি, পাদ, পায়ু, উপস্থ  এই দশটি ইন্দ্রিয় আপনার চরণ তলে বসীভূত হবে আর ১০ নাম অপরাধকেও এড়িয়ে চলতে হবে।
দশ নাম অপরাধ কি?
০১) সাধু (মহতের) নিন্দা,
০২) বিষ্ণু হইতে শিবের গুণমাদিকে ভিন্ন করে মানা।
০৩) শ্রীগুরুদেবকে অবঞ্জা, মানুষ বুদ্ধি করা।
০৪) বেদ এবং বেদানুগত শাস্ত্রের নিন্দা।
০৫) হরিনাম মাহাত্ম্যে অর্থবাদ অর্থাৎ স্তুতিবাদ কল্পনা করা।
০৬) প্রকারান্তরে নাম মাহাত্ম্যের অল্পতা কল্পনা করা।
০৭) নাম বলে পাপে প্রবৃত্তি হেওয়া।
০৮) অন্য শুভ ক্রিয়ার সাথে নামের তুলনা করা।
০৯) শ্রদ্ধাবিহীন, বিমুখ এবং শ্রবণে রুচিরহিত ব্যাক্তিকে হরিনামের উপদেশ দেওয়া এবং
১০) নাম মাহাত্ম্য শ্রবণ করেও নামে অরুচি।

তারপর সংখ্যা আছে  , অর্থাৎ ষড় রিপু দমন করা। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ আর মাৎসর্য্য - এই ষড়রিপু আপনাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এরপর সংখ্যা আছে  , অর্থাৎ কায়,মন বাক্যে শ্রীভগবানের শ্রীচরণে পূর্ণ সমর্পণ হওয়া।

তারপর সংখ্যা আছে  , অর্থাৎ পঞ্চমহাভূত ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ব্যোম; এই পঞ্চভূতে গড়া শরীরটা কেবল শ্রীভগবানের সেবা নিমিত্ত মনুষ্য তনু হরি ভজনের মূল। এই পঞ্চভূতে গড়া দেহটা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়ে গঠিত হবে চিন্ময় দেহ। আর এই চিণ্ময় দেহে শ্রীভগবানের দর্শন লাভ হবে।  

তবে নেটওয়ার্ক না থাকলে সম্ভব নয়। আর এখানে নেটওয়ার্ক হচ্ছে শুদ্ধভক্তি।
‘’শুদ্ধ ভকত - চরণ - রেণু ভজন - অনুকূল
ভকত - সেবা পরম সিদ্ধি প্রেমলতিকার মূল।
মাধব - তিথি ভক্তি জননী যতনে পালন করি
কৃষ্ণবসতি, বসতি বলি' পরম আদরে বরি।‘’
অর্থাৎ,- সদগুরুদেবের চরণাশ্রয় করে গুরু, বৈষ্ণব ভগবানের সেবা করা।সেবাতে সর্বোচ্চ সিদ্ধি লাভ হয় আর প্রেম ভক্তি উদয় হয়। মাধব তিথি অর্থাৎ শ্রীএকাদশী ব্রত ভক্তির মাতা ,তাই পরম যত্ন সহকারে শ্রীএকাদশী ব্রত পালন করা সবার কর্তব্য। এতে শ্রীকৃষ্ণে নিশ্চিত রূপে বাস করেন, এইভাবে  দৃঢতার সঙ্গে শ্রীএকাদশী ব্রতের খুব আদর করা উচিত।

‘’একাদশী, জন্মাষ্টমী, বামনদ্বাদশী।
শ্রীরামনবমী, আর নৃসিংহচতুর্দ্দশী।।
এই সবে বিদ্ধা-ত্যাগ, অবিদ্ধা-করণ।
অকরণে দোষ, কৈলে ভক্তির লভন।।‘’

অর্থাৎ,- বিদ্ধা দোষ পরিত্যাগ পূর্বক শ্রীভগবানের অতিপ্রিয় এই  ব্রতগুলি পালন করলে অচিরে হৃদয় নির্ম্মল হবে, অন্তঃকরণ শুদ্ধ হলে ভক্তির উদয় হবে। আর ভক্তি উদয় হলে শ্রীভগবানের  দর্শন লাভ হবে। ভক্তির মাধ্যমেই ভগবানকে জানা যায়।শ্রীকৃষ্ণের প্রদর্শিত পন্থা ছাড়া আর অন্য কোন ভাবে শ্রীকৃষ্ণকে জানা যায় না, তাই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই অর্জুনকে বলেছেন,-
''ভক্ত্যা মামভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ।
ততো মাং তত্ত্বতো জ্ঞাত্বা বিশতে তদনন্তরম্।।''

অর্থাৎ,- ভক্তির দ্বারা কেবল স্বরূপত আমি যে রকম হই, সেরূপে আমাকে কেউ তত্ত্বত জানতে পারেন। এই প্রকার ভক্তির দ্বারা আমাকে তত্ত্বত জেনে, তার পরে তিনি আমার ধামে প্রবেশ করতে পারেন।(গীতা ১৮/৫৫)

নিতাই গৌর হরিবোল নিতাই গৌর হরিবোল

💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐 🌷 কামদা একাদশী 🌷 💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐 শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ সকল সাধু , গুরু , বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের...