Tuesday, March 10, 2020


 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যইপরমতত্ত্ব 
উপনিষদে যাঁকে অদ্বৈত ব্রহ্ম বলেন, তিনিই এই (শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যের) অঙ্গজ্যোতি।যোগশাস্ত্রে যোগীগণ যে পুরুষকে অন্তর্যামী আত্মা (পরমাত্মা) বলেন, তিনিও এঁরই আংশিক  বিভুতি।এমনকী তত্ত্ববিচারে যাঁকে ষড়ৈশ্বর্যপূর্ণ ভগবান বলা হয়,তিনিও স্বয়ং ইনিই অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যেরই অভিন্ন স্বরূপ এই জগতে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য অপেক্ষা পরতত্ত্ব বা শ্রেষ্ঠ বস্তু আর  কিছু নাই।

অর্থাৎ,-  'সাধন পন্থা সাধারণত তিন প্রকার - 'জ্ঞান', 'যোগ' 'ভক্তি'
'জ্ঞানমার্গের সাধকেরা নির্বিশেষ ব্রহ্মকে পরতত্ত্ব বা শ্রেষ্ঠতত্ত্ব বলেন।'
'যোগমার্গের সাধকেরা পরমাত্মার ধ্যান করেন পরমাত্মাকেই পরতত্ত্ব বলেন।''ভক্তিমার্গের সাধকেরা ভক্তির দ্বারা ভগবানের ভজনা করেন এই মার্গের সাধকদের দৃষ্টিতে অসমোর্ধ্বমাধুর্য দ্বিভুজ মুরলীধর শ্রীকৃষ্ণই পরতত্ত্ব এবং স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণই শ্রীচৈতন্যরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন বলে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যই পরতত্ত্ব।''

বহুকাল পর্যন্ত পূর্বে যা অর্পণ করা হয়নি, সেই উন্নত - উজ্জ্বল রসময়ী নিজস্ব ভক্তি - সম্পদ দান করবার জন্য যিনি কৃপা করে, এই কলিযুগে অবতীর্ণ হয়েছেন, স্বর্ণ থেকেও অতি উজ্জ্বল দ্যুতিসম্পন্ন সেই শচীনন্দন শ্রীগৌরহরি সকলের হৃদয় - কন্দরে সর্বদা প্রকাশিত হোন।

'সত্য', 'ত্রেতা', 'দ্বাপরের ন্যায় বহু বহুকাল পর্য্যন্ত  ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর ভক্তি - সম্পত্তি দান করেননি স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এক কল্পে (অর্থাৎ ব্রহ্মার একদিনে) একবার জগতে অবতীর্ণ হন যে দ্বাপরে তিনি ব্রজে অবতীর্ণ হয়ে রাসলীলাদি প্রকাশ করেন, ঠিক তার পরবর্তী কলিতেই তিনি শ্রীরাধার ভাবকান্তি অঙ্গীকার করে শ্রীশ্রীগৌরসুন্দররূপে নবদ্বীপে অবতীর্ণ হয়ে অতি সুদুর্লভ কৃষ্ণপ্রেম বা ভক্তিসম্পত্তি (ব্রজপ্রেম) দান করেন কিন্তু তার পরে এবং বর্ত্তমান কলির পূর্বে এই সুদীর্ঘকাল সেরূপ প্রেমভক্তি আর দান করেননি পুনরায় এই কলিতে সেই লুপ্তপ্রায় উন্নত -  উজ্জ্বল রসময়ী শৃঙ্গার বা মধুর ভাবসম্পন্ন প্রেমভক্তি কলিহত জীবের মধ্যে বিতরণের জন্য স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৃপাপূর্বক শ্রীশ্রীগৌর - সুন্দররূপে অবতীর্ণ হলেন

শ্রী শ্রী গৌরসুন্দরের বিতরিত বস্তুকে উন্নত এবং উজ্জ্বল রস বলা হল কেন ? উন্নত অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ, রস হল মধুর রস ব্রজেন্দ্র - নন্দন শ্রীকৃষ্ণ ব্রজে চার ভাবের ভক্তের প্রেমরস আস্বাদন  করেছেন, যথা দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য মধুর ব্রজবাসি জনের শ্রীকৃষ্ণে মমতা - বুদ্ধির গাঢ়তা অনুযায়ী প্রীতিবিধানের উৎকণ্ঠাও তীব্র থেকে তীব্রতম হয়ে থাকে শ্রীকৃষ্ণ তাঁহাদের একান্ত আপনজন, কিন্তু তাঁদেরও মমতা - বুদ্ধির তারতম্য আছে তাই দাস্য অপেক্ষা সখ্য, সখ্য অপেক্ষা বাৎসল্য, বাৎসল্য অপেক্ষা মধুর রসের মমতা - বুদ্ধির তারতম্য বেশি। 

শ্রীকৃষ্ণের রসাস্বাদন চমৎকারিতা এবং প্রেমবশ্যতাও বেশি এই কারণে দাস্য অপেক্ষা সখ্য, সখ্য অপেক্ষা বাৎসল্য, বাৎসল্য অপেক্ষা মধূর ভাব উন্নত মধুর রসের আর একটি নাম শৃঙ্গার রস শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন,- "সব রস হৈতে শৃঙ্গারে অধিক মাধুরী '' এবং "পরিপূর্ণ কৃষ্ণপ্রাপ্তি এই প্রেমা হইতে" আর ভক্ত কেবল প্রেমের মাধ্যমেই শ্রীকৃষ্ণের মাধুর্য রস আস্বাদন করতে পারেন সুতরাং "দাস্য,সখ্য বাৎসল্য অপেক্ষা মধুরভাবেই শ্রীকৃষ্ণমাধুর্য আস্বাদনের শ্রেষ্ঠ উৎকর্ষতা এই উন্নত উজ্জ্বল রস অর্থাৎ শ্রেষ্ঠবস্তু সকলকে দান করবার জন্যই ভগবান 'শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য' এই কলিযুগে অবতীর্ণ হয়েছেন।

💐 "হরে কৃষ্ণ"💐  💐 "হরে কৃষ্ণ"💐  💐 "হরে কৃষ্ণ"💐  💐 "হরে কৃষ্ণ"💐

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...