Friday, March 27, 2020


শরণাগত ভক্তের রক্ষক স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ 
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব  গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার দণ্ডবৎ প্রণাম I
''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।
তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন  বিনাশন।।
অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।''

পৃথিবীর প্রায় বড় বড় শহরগুলিতে সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা অনেক বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। শত শত লোক নিহত হয়েছে। এইরকম বিপজ্জনক অবস্থায় কে আছেন যে রক্ষা করবেন? একমাত্র পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণই এইরকম ভয়াবহ অবস্থায় রক্ষা করেন। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় তিনি আমাদের কাছে অর্জুনের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, –

‘’ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বচ্ছান্তিং নিগচ্ছতি।
কৌন্তেয় প্রতিজানীহি মে ভক্তঃ প্রণশ্যতি।।‘’(গীতা, /৩১)

অর্থাৎ,-“তিনি শীঘ্রই ধর্মাত্মায় পরিণত হন এবং নিত্য শান্তি লাভ করেন। হে কৌন্তেয় ! তুমি দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা কর যে, আমার ভক্ত কখনও বিনষ্ট হন না।

‘’হে ভগবান, যেহেতু আপনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, যিনি আপনার কাছে সুরক্ষা প্রার্থনা করেন, আপনি তাঁকে রক্ষা করেন। তাই আমরা আপনাদের কাছে আমাদের সুরক্ষা প্রার্থনা করি।‘’এইভাবে আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারি যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেমন করে আমাদের রক্ষক পালক। তাই যে কোনও অবস্থায়, তা যতই বিপদজ্জনক হোক না কেন, কেবল ভগবান শ্রীকৃষ্ণই আমাদের রক্ষা করতে পারেন। কিন্তু সবাই শ্রীকৃষ্ণের সুরক্ষা প্রাপ্ত হন কি? না, তবে যাঁর পূর্ণবিশ্বাস তথা শ্রদ্ধা আছে, তিনিই কেবল সুরক্ষা প্রাপ্ত হন।

যে ভক্ত পূর্ণ শরণাগত, তাঁর বিশ্বাস আছে যে কৃষ্ণ অবশ্যই তাঁকে রক্ষা করবেন।অবশ্য রক্ষিবে কৃষ্ণ, এবং পরিণামে তিনি কৃষ্ণের দ্বারা রক্ষিত হন।
''দৈন্য, আত্মনিবেদন, গোপ্তৃত্বে বরণ।
'অবশ্য রক্ষিবে কৃষ্ণ' - বিশ্বাস পালন।।''

''ষড়ঙ্গ শরণাগতি হইবে যাঁহার।
তাঁহার প্রার্থনা শুনে শ্রীনন্দকুমার।।''

এই শরণাগতির নির্দিষ্ট কতকগুলি বিশেষ লক্ষণ আছে,-

‘’শরণাগতির ছয় প্রকার লক্ষণ,- কৃষ্ণভক্তির অনুকূল যা গ্রহণ করা, কৃষ্ণভক্তির প্রতিকূল বিষয় বর্জন করা, কৃষ্ণ সবসময়ই রক্ষা করবেন এই বিশ্বাস, শ্রীকৃষ্ণকে প্রভুরূপে গ্রহণ করা, সমগ্ৰ ইন্দ্ৰিয়গুলির দ্বারা সম্পূৰ্ণ রূপে শরণাগত হওয়া এবং তৃণাদপি সুনিচ বা দৈন্যতা।‘’(হরিভক্তিবিলাস ১১/৪১৭)

শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরবিশ্বাসসম্বন্ধে তাঁর মত ব্যক্ত করে বলেছেন যে, শ্রীকৃষ্ণ রক্ষা করবেন যখন কেউ কাতর স্বরে বলেন, “হে প্রভু, আমার এই দৃঢ়বিশ্বাস আছে যে, আপনি অবশ্যই আমাকে সর্বতোভাবে সর্বপ্রকার বিপদ দুর্বিপাক হতে রক্ষা করবেন।‘’ এটাই শ্রদ্ধা তথা দৃঢ় বিশ্বাস। সাধু, শাস্ত্র, গুরু এবং কৃষ্ণের কথায় দৃঢ় বিশ্বাস ব্যতীত কেউ শরণাগত হতে পারে না।

অন্য একটি লক্ষণ হচ্ছে 'আত্মনিবেদন' শরণাগত ভক্ত নিজের সুরক্ষা কামনায় হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে ক্রন্দন সহকারে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন। নাম - নামী অভিন্ন হেতু কলিযুগে শরণাগতির অর্থ ‘’পবিত্র নাম’’ এর শরণাগত হওয়া।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

অধিকন্তু, ভগবানের নাম স্বয়ং ভগবান অপেক্ষাও অধিক কৃপাময়। এই প্রসঙ্গে যামুনাচার্য একটি চমৎকার উপমা দিয়েছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করছেন যে, একজন 'মা' রাগ করে তার স্তন্যপায়ী শিশুপুত্রটিকে যদি দূরে ঠেলে দেয়, তাহলে শিশুটি মায়ের আশ্রয় ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে কি? না, শিশুটি সম্পূর্ণভাবে তার মায়ের উপর নির্ভরশীল। ঠিক তেমনই পূর্ণ শরণাগত ভক্ত একটি শিশুর মতো। শিশুটি যেমন তার মাকে ছেড়ে যেতে পারে না, তাতে তার মা তার উপর রাগ করুক আর স্নেহ করুক যাই করুক না কেন  তাই পূর্ণ নির্ভরশীল - সম্পন্ন ভক্তের মনোভাব এইভাবে বর্ণিত হয়েছে, “কৃষ্ণের ইচ্ছা যা আমি কেবল তাই করব এবং আমি আমার নিজ ইচ্ছানুসারে কিছু চিন্তা করব না।‘’

হে আমার প্রাণোধন কৃষ্ণ তুমি আমাদের হৃদয়ে ভক্তির ভাব জাগিয়ে দাও। সবাই একমনে  তন্ময় হয়ে শ্রীহরিনাম জপ করুন,-

''হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।''

🌺🌹জয় নিতাই জয় গৌরসুন্দর 🌹🌺🌹 জয় নিতাই জয় গৌরসুন্দর 🌹🌺

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...