🌳🍁🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚🍁🌳

💐শ্রীপুরুষোত্তম ব্রত - মাহাত্ম্য💐

🌳🍁🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚🍁🌳

🍇খুব গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট🍇

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I হরে কৃষ্ণ, আগামী ১ শ্রাবণ, ১৮ জুলাই ইং রোজ - মঙ্গলবার শ্রীপুরুষোত্তম মাস ব্রতারম্ভ। সকলকে জানাই অগ্রিম কৃষ্ণপ্রীতি শুভেচ্ছা। যাঁহারা রাধাকৃষ্ণের কৃপা ও কৃষ্ণভক্তি লাভ করতে চান - তাঁহারা অবশ্যই এই ব্রত পালন করিবেন।

 

''যথা তরোর্মূলনিষেচনেন-

তৃপ্যন্তি তৎস্কন্ধভুজোপশাখাঃ ।

প্রাণোপহারাচ্চ যথেন্দ্রিয়াণাং

তথৈব সর্বার্হণমচ্যুতেজ্যা ।।''       (ভাগবত ৪/৩১/১৪)

অর্থাৎ,- গাছের মূলে জল সেচন করলে যেমন সেই গাছের কাণ্ড, ডাল, উপশাখা প্রভৃতি সকলেই তৃপ্তিলাভ করে এবং উদরে আহার্যদ্রব্য প্রদানের দ্বারা যেমন ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তি হয়, তেমনই শ্রীকৃষ্ণের পূজা করলে সমস্ত দেবতাদের পূজা হয়ে যায়।।

 

পুরুষোত্তম মাস কী এবং কেন?

সৌর বছরকে সাধরণত ভাবে গনণা করা হয় ৩৬৫ দিনে, প্রক্ষান্তরে চন্দ্র বছর গণনা করা হয় ৩৫৫ দিনে। ফলে ৩৬৫ থেকে ৩৫৫ দশ দিনের পার্থক্য সৃষ্টি হয় সৌরদিবস ও চান্দ্র তিথির মধ্যে। তাহলে তিন বছরের পার্থক্য দাঁড়ায় ৩০ দিনে এবং ৩০ দিনে হয় একমাস। এ কারণে ভারতে বৈদিক যুগে প্রতি ৩ বছর অন্তর একটি বাড়তি মাস যুক্ত করে চাঁন্দ্র বছরের সাথে সৌর বছর সমন্বয় করা হয়। এটি ভগবৎপ্রণীত। একে অধিমাস বলা হয়। এ মাসে কোন কোন সকাম কর্মীয় কাজ হয় না। যেমন বিবাহ, পূজা এবং অনন্য অনুষ্ঠানাদি।

 

বৈশাখ, মাঘ এবং কার্ত্তিক মাস থেকেও এ মাস সহস্র সহস্র গুণে শ্রেষ্ঠ। এ মাসে সক্ষম ব্যক্তি  হবিষ্যন্ন গ্রহণ ব্রত এবং সকলেরই শ্রীপুরুষোত্তম কৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদন করা কর্ত্তব্য।

 

একবার অসিত, দেবল, অঙ্গিরা বামদেব প্রবৃত্তি ঋষিগণ, নৈমিষ অরণ্য ক্ষেত্রে সমবেত হয়েছিলেন ঠিক সেই সময়, সেই পথদিয়ে তীর্থ যাত্রা কালে সে খানে উপস্থিত হন মহর্ষি সুতপুরানি তাকে পরম সমাদরে অভ্যর্থনা যানিয়ে ঋষিগণ, তার কাছে মোক্ষ প্রাপ্তি বিষয়ে কথা শুনতে আগ্রহী হন। মহর্ষি সুত বলেন,- একবার নারদ মহর্ষি নর - নারায়ণের আশ্রমে উপস্থিত হয়ে ঋষিকে বিনিত ভাবে বলেন; হে প্রভু! পৃথিবীতে ক্রমবর্ধমান ভোগবিলাসী মানুষের অন্ধকার যুগ এ কলিযুগে, মোক্ষ লাভের পথ কি ? উত্তরে মহর্ষি বলেন এ কলিযুগের মানুষ এ জীবনে পুরুষোত্তম নারায়ণের পবিত্র লীলা কথা শ্রবণ করলে, তার বন্ধনমোচন মোক্ষ প্রাপ্তি ঘটবে। এ কথা শোনার পর সমবেত ঋষিগণ মহর্ষি সুতের কাছে, এ অধিমাসে ভগবানের লীলাকথা শুনতে লাগলেন।

 

পুরুষোত্তম মাস সম্পর্কে শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর :-

"হে জীব! পুরুষোত্তম মাসে হরিভজনে তুমি এত অলস কেন? এই মাস, যা স্বয়ং পরমেশ্বর গোলক সৃষ্টি করেছেন, সমস্ত মাসের শিরোমণি। এমনকি এটি মহতী পবিত্র কার্তিক, মাঘ ও বৈশাখ মাসের চেয়েও উত্তম। বিশেষ ভজনের মাধ্যমে রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা কর। তুমি সবকিছু লাভ করবে।"

 

পুরাণ অনুসারে ব্রতের বর্ণনা:-

বৃহন্নারদীয় পুরাণে পুরুষোত্তম মাসের কথা বর্ণিত হয়েছে। সকল মাসের প্রধান, অধিমাস, যেহেতু অধিমাসে কোনো সকাম কর্ম হয়না তাই, কর্মকাণ্ডীয় লোকেরা পুরুষোত্তম মাসকে মলমাস বলে ঘৃণা করে। তো এই অধিমাসের অধিষ্ঠাতা নিজের অপমান এবং অন্য বারোটি মাসের আধিপত্য বিচার করে বৈকুণ্ঠপতি ভগবান শ্রীনারায়ণের সমীপে গিয়ে নিজের দুঃখের কথা নিবেদন করেন। বৈকুণ্ঠপতি নারায়ণ কৃপা করে অধিমাসকে সঙ্গে নিয়ে গোলোকবৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের কাছে উপস্থিত হন। তিনি অত্যন্ত দুঃখিত ছিলেন কেননা তার জীবনে কোন লক্ষ্য ছিলনা, কোন উদ্দেশ্য ছিলনা; তিনি কাঁদছিলেন। গোলক বৃন্দাবনে, শ্রীকৃষ্ণের পরম আলয়ে, কৃষ্ণ তাকে বললেন, ‘’তুমি এখানে কেন কাঁদছ?

 

এটি চিন্ময় জগৎ, এখানে কেউ কাঁদে না, এখানে কোন দুর্দশা নেই’’ কিন্তু তার জীবনে কোন লক্ষ্য ছিলনা, তিনি কেবল তাঁর পদকমলকেই আশ্রয় করতে চেয়েছিলেন। সুতরাং কৃষ্ণ তাকে তাঁর আশ্রয়ে নিলেন এবং মলমাসের দুঃখের কথা শুনে, করুণাপূর্ণ হয়ে নিম্নরূপ বললেন। কৃষ্ণ বললেন,- “হে রমা দেবীর পতি, জগতে আমি যেভাবে পুরুষোত্তম নামে পরিচিত, এই অধিমাসও তেমনি সারা বিশ্বে পুরুষোত্তম মাস নামে খ্যাত হবে। আমার সকল গুণ এই মাসের মাঝে প্রবেশ করবে। আমারই মত, এই মাস সকল মাসের মাঝে শ্রেষ্ঠ হবে। এই মাস পূজনীয় এবং স্তুতির দ্বারা প্রশংসার যোগ্য। অন্য সকল মাস সকাম, জাগতিক বাসনায় পরিপূর্ণ। এই মাস নিষ্কাম, জাগতিক বাসনাবিহীন।

 

যদি কেউ অকাম বা জাগতিক বাসনা ব্যতীত, অথবা সকাম বা জাগতিক বাসনাযুক্ত হয়ে এই মাসের আরাধনা করে, তাহলেও তার সকল কর্মফল নিঃশেষ হয়ে যায় এবং সে আমাকে লাভ করে। আমার ভক্তেরা অনেক সময় অপরাধ করে ফেলে, কিন্তু এই মাসে কোন অপরাধ হয় না। এই মাসে যারা সবচেয়ে নির্বোধ এবং কোন জপ ও দান প্রভৃতি করে না, নিজের পারমার্থিক উন্নতির জন্য যারা কোন কর্ম করে না এবং যারা স্নানাদি করে না, এবং যারা দেবতাগণ, পবিত্র ধাম ও ব্রাহ্মণদের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ, এই সকল দুষ্ট, অসাধু, মন্দভাগ্য লোকেরা, অন্যের সম্পদের উপর জীবন নির্বাহ করে, তারা তাদের স্বপ্নেও সুখ লাভ করে না। এই পুরুষোত্তম মাসে, যিনি প্রেম ও ভক্তিসহকারে আমার আরাধনা করেন, তিনি সম্পদ ও পুত্রাদি লাভ করে, সুখ ভোগ করে, সবশেষে গোলকবাসী হয়।‘’

 

কীভাবে ব্রত পালন করতে হবে:-

সর্বোচ্চ যত্ন সহকারে পুরুষোত্তম ভগবানের সেবা করুন। পুরুষোত্তমের প্রতি এই সেবাই সর্বোচ্চ সাধনা এবং সর্ববৃহৎ ফল দান করে। ভক্তির সাথে মন্ত্র উচ্চারণ করুন যেমন গোবর্ধনধরং মন্ত্র,-

''গোবর্ধনধরং বন্দে গোপালম গোপরূপিণম। 

গোকুলোৎসবমীশানং গোবিন্দং গোপিকাপ্রিয়ম।।'' এবং এভাবে আপনি পুরুষোত্তমদেবকে লাভ করবেন। রাধারাণীর সাথে কৃষ্ণের ধ্যান করুন যিনি নবঘনশ্যাম বর্ণ ধারণ করে দুই হাতে মুরলী বাঁশি ধারণ করেছেন এবং পীত বসন পরিধান করেন। যেভাবে দামোদরব্রত পালন করা হয়, সেভাবেই এই ব্রত পালন করা উচিত, পুরুষোত্তমের প্রীতির জন্য দীপ দান করা উচিত, ঘৃত প্রদীপ বা সামর্থ্য না হলে তিলের তৈলের প্রদীপ।

 

ব্রতপালনকারীর ব্রাহ্ম মূহূর্তের পূর্বে স্নান করা উচিত, এরপর আচমন করে গোপীচন্দন দ্বারা তিলক, শংখ ও চক্র ধারণ করা উচিত। এই মাসে রাধা-কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে আরাধনা করা উচিত। পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই মাসের প্রধান আরাধ্যদেব। আরো সেবা আছে যা এই মাসে করা যেতে পারে যেমন- শ্রীকৃষ্ণকে ষোড়শ উপাচার দ্বারা পূজা করা, ভোরে স্নান করা ইত্যাদি, ভক্তিভরে শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণ করা, শালগ্রামশিলার অর্চন করা। যিনি এই ব্রত পালন করেন, তার মাঝে সকল পবিত্র ধাম ও দেবতারা বাস করেন। এই মাসে বৈষ্ণবদের সেবা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

একবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, যুধিষ্ঠির ও দ্রৌপদীর দিকে করুণাদৃষ্টি নিক্ষেপ করে অর্জুনকে বলতে লাগলেন,- ‘’হে পুরুষব্যাঘ্র, তোমরা কি তোমাদের দুঃখের কারণ জানো ? তোমরা আমার প্রিয় ও অত্যন্ত দুর্লভ পুরুষোত্তম ব্রত পালন করনি। এজন্য তোমরা দুঃখ পাচ্ছ। তোমরা ব্যাসদেবের উপদেশে সমস্ত বর্ণাশ্রমোচিত আচার পালন করেছ। কিন্তু পুরুষোত্তম মাসের পূজা না করা পর্যন্ত আমাতে শুদ্ধভক্তি লাভ করতে পারবে না।‘’

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলতে লাগলেন,- আমি এখন দ্রৌপদীর পূর্বজন্ম বৃত্তান্ত বলব। পূর্বজন্মে দ্রৌপদী মেধা ঋষির কন্যা ছিলেন। শৈশবেই তার মাতৃবিয়োগ হলে তিনি পিতার তত্ত্বাবধানে পালিত হন। ক্রমে সে বড় হয়ে। সর্বশাস্ত্র নিপুণা পরমা সুন্দরী ছিল দ্রৌপদী। তার বিয়ের জন্য তাঁর বাবা উপযুক্ত বরপাত্র সন্ধানে অসফল হন।

 

একদিন তাঁর বাবা বাইরে ভিক্ষার জন্য গিয়ে সন্ধ্যা সময় বাড়িতে আসার মাত্রেই হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন। এখন দ্রৌপদী  বাবার মাথা কোলে নিয়ে জোর জোর করে কাঁদতে আরাম্ভ করে। বনের মধ্যে কে কান্না করেছে এই চিন্তা করে অন্য ঋষিরা এসে দেখলেন যে মেধা ঋষি মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন তারা  সঙ্গে সঙ্গে সৎকারের ব্যবস্থা করলেন। দ্রৌপদীর  অবস্থা তখন  আরও শোচনীয় হলো। সে কেবল এই কথা বলে কাঁদে যে কে আমাকে বিয়ে করবে আর আমার ভবিষ্যৎ কি হবে। সৌভাগ্য ক্রমে একদিন দুর্বাসা মুনি সেখানে আগমন করলেন। দুর্বাসা মুনিকে দেখে দ্রৌপদী তারাতারি উঠে মুনিকে এক আসনে বসালেন এবং কিছু ফল ও জল খাবার ব্যবস্থা করলেন। পরে দ্রৌপদী মুনির কাছে  তার সমস্ত দুঃখ-দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন এবং বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র সম্বন্ধে ও নিবেদন করেন।

 

দুর্বাসা মুনি বললেন,- পুত্রী, আগামী দুই মাসের মধ্যে পরমপবিত্র পুরুষোত্তম মাস শুরু হবে। এই পবিত্র মাসটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট সবথেকে প্রিয়। আসন্ন পুরুষোত্তম মাসকে যত্ন সহকারে পূজা করলে তুমার সকল মনস্কামনা পূর্ণ হবে। দুর্ভাগ্যবশত সেই ব্রাহ্মণকন্যা দুর্বাসা ঋষির কথায় বিশ্বাস করলেন না বরং ক্রোধান্বিতা হয়ে নিন্দাপূর্ণ বাক্য বলতে লাগল,- ‘’হে মহামুনি, আপনি মিথ্যা বলছেন। কীভাবে এই অতিরিক্ত মাসটি, যাকে মলমাস বলা হয়, তা অন্য সকল মাস এমনকি, কার্ত্তিক বা মাঘ বা বৈশাখ হতেও শ্রেষ্ঠ হবে ?’’

 

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলতে লাগলেন,- ‘’হে অনঘ ! দুর্বাসা মুনি দ্রৌপদীর কথায় রাগ নাকরে বলিলেন, - তোমার বাবা আমার মিত্র ছিল, সেই হিসাবে তুমি আমার কন্যা তুল্য।  তাই তোমাকে  অভিশাপ দেবনা বরং বলি যে তুমি যে এই পুরুষোত্তম মাস সম্বন্দে কিছু না জেনে তার ভৎসনা করলে ইহার ফল কিন্তু তোমাকে ভোগতে হবে, এই বলে দুর্বাসা মুনি চলে যাওয়ার সাথে সাথে ব্রাহ্মণকণ্যা তার সমস্ত ঐশ্বর্য হারালো। পুরুষোত্তম মাসের প্রতি অপরাধের ফলে সে কুৎসিত দেহ লাভ করল। তখন সে মহাদেব শিবের আরাধনা করতে মনস্থ করল।''  ধ্যানে তার নয় হাজার বছর অতীত হলে শ্রীশিব তার সম্মুখে আবির্ভূত হলেন ও বর দিতে চাইলেন, তখন ব্রাহ্মণকন্যা বলতে লাগল, ‘’হে দীনবন্ধু, আমাকে গুণবান স্বামী প্রদান করুন।‘’ একথাটি সে পরপর পাঁচবার বলল। তখন শিব বললেন,- ‘’যেহেতু তুমি পাঁচবার এ কথাটি বলেছ, তাই তোমার পঞ্চস্বামী হবে।‘’

 

পরবর্তীতে ব্রাহ্মণকণ্যা,  দ্রুপদ রাজার কন্যা দ্রৌপদী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঘটনাক্রমে পঞ্চপাণ্ডবকে পতি হিসেবে লাভ করেন। অতঃপর ক্রমান্বয়ে বস্ত্রহরণ, বনবাস, পুত্রবিয়োগাদি নানা দুঃখসমুদ্রে পতিত হন। বনবাসের সময় তাঁরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে এত দুঃখের কারণ এবং নিস্কৃতির উপায় জিজ্ঞেস করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তখন দ্রৌপদীর পূর্বজন্মে পুরুষোত্তম ব্রতের অবজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এই ব্রত আচরণ করে, সকলে বনবাস দুঃখের পার প্রাপ্ত হন।

 

স্ত্রোত্রপাঠঃ-

এ মাসে প্রতিদিন চৌরাগ্রগণ্যং পুরুষাষ্টকম, জগন্নাথাষ্টকম, নন্দনন্দনাষ্টকম, রাধা কৃষ্ণ কৃপা-কটাক্ষস্তোত্রম প্রভৃতি নিজাভীষ্ট স্তোত্রবলী পাঠ ও পূর্বতন আচার্যবৃন্দগণ কৃত ভজন কীর্ত্তন করা উচিৎ।

 

বিশেষ সংখ্যাঃ৩৩

এ মাসে তেত্রিশ সংখ্যাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তাই রাধা-কৃষ্ণের প্রতি ৩৩ বার দণ্ডবৎ প্রণাম নিবেদন করা, ৩৩ সংখ্যক প্রদীপ দান, ৩৩ সংখ্যক ফল ও পুষ্প প্রভৃতি যে কোন সেবায় ৩৩ সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। পুরাণে বর্ণিত আছে, এ মাসে কৌশিক মুনি ও তাঁর পুত্র মৈত্রেয় মুনি ব্রাক্ষণগণকে ৩৩ সংখ্যক আপুপ - দান করেছিলেন। আপুপ মানে আতপচাল, শর্করা ও ঘৃত দিয়ে তৈরি পিষ্টক বিশেষ।

 

দীপ দানঃ-

এ মাদে দামোদর মাসের মত পরম পুরুষোত্তম ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য প্রতি সন্ধ্যায় ঘৃত প্রদীপ নিবেদন করতে হয়। সামর্থ না হলে ঘিয়ের পরিবর্তে তিল তেলের প্রদিপও ব্যবহার করতে পারেন।

‘’যোগো জ্ঞানং তথা সাংখ্যংতন্ত্রনি সকলানপি।

পুরুষোত্তম দীপস্য কলা নার্হন্তি ষোড়শীম।।‘’

অর্থাৎ,- অষ্টাঙ্গযোগ, ব্রক্ষজ্ঞান, সাংখ্যজ্ঞান এবং সমস্ত ত্রান্তিক অপেক্ষা পুরুষোত্তম মাসে ভগবানকে দীপ দানের ষোড়শী কলারও তুল্য হয় না।