💐🏵️💞🌺��🌺💞🏵️💐

🌷বৈষ্ণবের বিরহ তিথি🌷

💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I হরে কৃষ্ণ, আজ বিশেষ শুভদা তিথি। আজ শ্রীমন্মহাপ্রভুর বরাহ নগরে শুভবিজয় মহোৎসব। পরম বৈষ্ণব শ্রীমন্মহাপ্রভুর প্রিয় পার্ষদ শ্রীল গোবিন্দ ঘোষ প্রভুর শুভ তিরোভাব তিথি পূজা।

 

‘’কলাবতী', 'রসোল্লাসা', 'গুণতুঙ্গা' ব্রজে স্থিতা ।

শ্রীবিশাখাকৃতং গীতং গায়ন্তি স্মাদ্য তা মতাঃ ।।

গোবিন্দ মাধবানন্দ - বাসুদেবা যথাক্রমম ।।‘’

ব্রজ লীলায় যিনি 'কলাবতী' তিনি গৌরলীলায় 'শ্রীগোবিন্দ ঘোষ'। ইনি উত্তর রাঢ়ীয় শৌক্রকায়স্থ কূলে আবির্ভূত হইয়াছিলেন। অগ্রদ্বীপে ইঁহার শ্রীপাট। শ্রীমাধব ও শ্রীবাসুদেব ঘোষের ইনি ভ্রাতা।ইঁহারা প্রসিদ্ধ সুকণ্ঠ কীর্ত্তনীয়া ছিলেন।

‘’সুকৃতি মাধব ঘোষ কীর্ত্তন তৎপর।

হেন কীর্ত্তনীয়া নাহি পৃথিবী ভিতর।।

গোবিন্দ,মাধব, বাসুদেব তিনি ভাই।

যাঁ - সবার কীর্ত্তনে নাচে চৈতন্য - নিতাই।।‘’

 

গৌড়ে প্রচারে আসিবারে কালে শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর সহিত শ্রীবাসুদেব ঘোষ ও শ্রীমাধব ঘোষ আসিয়াছিলেন। কিন্তু শ্রীগোবিন্দ তৎকালে নীলাচলেই শ্রীমন্মহাপ্রভুর নিকটে ছিলেন। ''প্রভু সঙ্গে রহে গোবিন্দ পাইয়া সন্তোষ''। ইনি শ্রীগৌরাঙ্গের শাখায় গণিত হইয়াছেন। শ্রীগোবিন্দ ঘোষ শ্রীমন্মহাপ্রভুর সঙ্গে শ্রীবাস - অঙ্গনে,কাজীদলন দিবসে নগর সংকীর্ত্তনে ও রাঘব ভবনে কীর্ত্তনে সঙ্গী ছিলেন।এতদ ব্যতীত পুরীতে রথাগ্রে সাত সম্প্রদায়ের চতুর্থ সম্প্রদায়ে ইনি মূল কীর্ত্তনীয়া ছিলেন, দোহার ছিলেন হরিদাস (ছোট), বিষ্ণুদাস, রাঘব, মাধব ও বাসুঘোষ যে সম্প্রদায়ে শ্রীবক্রেশ্বর পণ্ডিত নৃত্য করিয়াছিলেন।

 

ইনি শ্রীমন্মহাপ্রভুর নির্দ্দেশ ক্রমে প্রাপ্ত কৃষ্ণশীলা হইতে অগ্রদ্বীপে শ্রীগোপীনাথ বিগ্রহ প্রকটিত করেন। শ্রীমন্মহাপ্রভুর নির্দ্দেশ ক্রমে শ্রীগোবিন্দ ঘোষ গৃহস্থাশ্রম স্বীকার করিয়াছিলেন। প্রবাদ আছে তাঁহার স্ত্রী ও পুত্র স্বধামে গমন করিলে তিনি চিন্তিত হইয়াছিলেন তাঁহার মৃত্যুর পর কে পিণ্ড দিবে, সেই সময় শ্রীগোপীনাথ গোবিন্দ ঘোষকে স্বপ্নে বলিয়াছিলেন,- ''তুমি চিন্তা করিও না, আমি পিণ্ড দিব।'' শ্রীগোবিন্দ ঘোষ তিরোধান লীলা করিলে পরদিবস শ্রীগোপীনাথ তাঁহার পিণ্ড প্রদান করিয়াছিলেন । আজও শ্রীগোবিন্দ ঘোষ ঠাকুরের অপ্রকট তিথিতে শ্রীগোপীনাথ পিণ্ড প্রদান করেন । চৈত্র কৃষ্ণাদ্বাদশী তিথিতে শ্রীগোবিন্দ ঘোষ ঠাকুরের তিরোধান হয়।

 

শ্রীগোবিন্দ ঘোষ ঠাকুরের রচিত পদাবলী,-

 

হেদে রে নদীয়া বাসী কার মুখ চাও ।

বাহু পসারিয়া গৌরাচাঁদে ফিরাও ।।

তো সবারে কে আর করিবে নিজ কোরে ।

কে যাচিয়া দিবে প্রেম দেখিয়া কাতরে ।।

কি শেল হিয়ায় হায় কি শেল হিয়ায় ।

পরাণ পুতলী নবদ্বীপ ছাড়ি যায় ।।

আর না যাইব মোরা গৌরাঙ্গের পাশ ।

আর না করিব মোরা কীর্ত্তন বিলাস ।।

কাঁদয়ে ভক্তগণ বুক বিদারিয়া ।

পাষাণ গোবিন্দ ঘোষ না যায় মিলিয়া ।।

 

হরি হরি কবে মোর হবে হেন দিন।

বিমল বৈষ্ণবে, রতি উপজিবে', বাসনা হইবে ক্ষীণ ।।১।।

অন্তর-বাহিরে, সম ব্যবহার, অমানী মানদ হ'ব ।

কৃষ্ণ - সংকীর্ত্তনে, শ্রীকৃষ্ণ - স্মরণে,   সতত মজিয়া র'ব ।।২।।

এ দেহের ক্রিয়া, অভ্যাসে করিব, জীবন যাপন লাগি' ।

শ্রীকৃষ্ণ - ভজনে, অনুকুল যাহা,  তাহে হব অনুরাগী ।।৩।।

ভজনের যাহা, প্রতিকুল তাহা, দৃঢ়ভাবে তেয়াগিব ।

ভজিতে ভজিতে, সময় আসিলে, এ দেহ ছাড়িয়া দিব ।।৪।।

ভকতিবিনোদ, এই আশা করি,' বসিয়া গোদ্রুমবনে ।

প্রভু-কৃপা লাগি,  ব্যাকুল অন্তরে,  সদা কাঁদে  সঙ্গোপনে ।।৫।।