🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚

🌷শ্রীমনঃ শিক্ষা🌷

🦚💐🏵️🌷🌺💐🦚

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I (শ্রীমনঃ শিক্ষা শ্রীল-রঘুনাথদাস-গোস্বামিপাদ বিরচিত)

 

‘’গুরু - বৈষ্ণব  - ভগবান তিনেহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় বিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’ 

 

আজানুলম্বিত – ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎ প্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

 

অসদ্বাৰ্ত্তা-বেশ্যা বিসৃজ মতিসর্বস্বহরণীঃ

কথা মুক্তিব্যাঘ্রা ন শৃণু কিল সর্বাত্মগিলনীঃ।

অপি ত্যক্ত্বা লক্ষ্মীপতিরতিমিতো ব্যোমনয়নীং

ব্রজে রাধাকৃষ্ণৌ স্বরতিমণিদৌ ত্বং ভজ মনঃ।।৪।। 

অর্থাৎ,- হে মন! তুমি কৃষ্ণেতর অসৎকথা-রূপা বেশ্যাকে পরিত্যাগ কর, যেহেতু উহা বুদ্ধিরূপ সর্বস্ব অপহরণ করিয়া থাকে। এইরূপে মুক্তিস্বরূপা ব্যাঘ্রীর কথাও শ্রবণ করিও না, যেহেতু উহা সর্বশরীর গ্রাস করিয়া থাকে। অপিচ যে লক্ষ্মীনারায়ণ-ভক্তি এই ব্রজধাম হইতে পরব্যোমে লইয়া যায়, তাহাও পরিত্যাগপূর্বক ব্রজধামে রাধাকৃষ্ণের উপাসনা কর; যেহেতু ঐ রাধাকৃষ্ণ হৃদয়মধ্যে প্রেমমণি প্রদান করেন ।।৪।। 

 

কৃষ্ণবার্তা বিনা আন, ‘অসদ্বাৰ্ত্তা’ বলি জান

সেই বেশ্যা অতি ভয়ঙ্করী।

শ্ৰীকৃষ্ণবিষয়া মতি, জীবের দুর্লভ অতি

সেই বেশ্যা মতি লয় হরি'।।

 

শুন মন! বলি হে তোমায়।

‘মুক্তি’ -নামে শার্দুলিনী, তার কথা যদি শুনি

সর্বস্বসম্পত্তি গিলি খায়।।

 

তদুভয় ত্যাগ কর, মুক্তিকথা পরিহর

লক্ষ্মীপতিরতি রাখ দূরে।

সে রতি প্রবল হলে, পরব্যোমে দেয় ফেলে

নাহি দেয় বাস ব্রজপুরে।।

 

ব্রজে রাধাকৃষ্ণ-রতি, অমূল্য-ধনদ অতি

তাই তুমি ভজ চিরদিন।

রূপ রঘুনাথ-পায়, সেই রতি প্রার্থনায়

এ ভক্তিবিনোদ দীনহীন ।।৪।।

 

(৫)

অসচেষ্টা-কষ্টপ্রদ-বিকটপাশালিভিরিহ

প্রকামং কামাদি-প্রকটপথপাতিব্যতিকরৈঃ।

গলে বদ্ধা হন্যেঽমিতি বকভিদ্বত্মপগণে

কুরু ত্বং ফুৎকারানবতি স যথা ত্বাং মন ইতঃ।।৫।।

অর্থাৎ,- হে মন! কাম প্রভৃতি কুপথপ্রাপক বঞ্চকগণ-কর্তৃক আমি গলদেশে অসৎ-চেষ্টারূপ ক্লেশদায়ক পাপসমূহ দ্বারা আবদ্ধ হইয়া বিনষ্ট হইতেছি; অতএব তুমি বকশত্রু নন্দনন্দনের

বৰ্ত্মরক্ষক শ্রীবৈষ্ণবগণকে এরূপভাবে কাতরস্বরে আহ্বান কর, যাহাতে তাঁহারা তোমাকে উহা হইতে রক্ষা করে ।।৫।।

 

কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ, মদ-মৎসরতা-সহ

জীবের জীবন-পথে বসি।

অসচেষ্টা রজ্জুফাঁসে, পথিকের ধর্ম্মনাশে

প্রাণ লয়ে করে কষাকষি।।

 

মন, তুমি ধর বাক্য মোর।

এই সব বাটপাড়, অতিশয় দুর্নিবার

যখন ঘেরিয়া করে জোর।।

 

আর কিছু না করিয়া, বৈষ্ণবের নাম লঞা

ফুকারিয়া ডাক উচ্চরায়।

বকশত্রু-সেনাগণে, কৃপা করি নিজজনে

যাতে করে উদ্ধার তোমায়।।

 

বাটপাড় ছয়জন, অসচ্চেষ্টা-রজ্জুগণ

দিয়া গলে করিল বন্ধন।

প্রাণবায়ু গত প্রায়, রূপরঘুনাথ হায়

কর ভক্তিবিনোদে রক্ষণ।।৫।।

 

(৬)

অরে চেতঃ! প্রোেদ্যৎকপটকুটিনাটী -ভরখর-

ক্ষরক্ষূত্রে স্নাত্বা দহসি কথমাত্মানমপি মাম্।

সদা ত্বং গান্ধর্বা-গিরিধরপদপ্রেমবিলসৎ-

সুধাম্ভোধৌ স্নাত্বা স্বমপি নিতরাং মাঞ্চ সুখয়।।৬।।

অর্থাৎ,- হে মন! তুমি কি জন্য প্রকৃষ্টরূপে উদীয়মান কপটতা জনিত কুটিনাটিরূপ গর্দভের ক্ষরিত মূত্রে স্নান করিয়া নিজেকে এবং আমাকে দগ্ধ করিতেছ? তুমি সর্বদা শ্রীরাধাকৃষ্ণের পাদদ্বন্দ্ব-বিষয়ক প্রেমভক্তিরূপ বিলসমান সুধাসমুদ্রে স্নান করিয়া নিজেকে এবং আমাকে অতিশয় সুখী কর।।৬।। 

 

কাম, ক্রোধ আদি করি’, বাহিরে সে সব অরি

আছে এক গূঢ় শত্রু তব।

কপটতা নাম তার, তারে কুটিনাটি ভার

খরমূর্তি পরম কিতব।।

 

ওরে মন গূঢ় কথা ধর।

সেই খরমূত্রে ভুলে’, স্নান করি কুতুহলে

‘পবিত্র বলিয়া মনে কর।।

 

বনে বা গৃহেতে থাক, সেই খরে দূরে রাখ

যার মূত্রে তুমি আমি জ্বলি।

ছাড়িয়া কাপট্য-বশ, যুগলবিলাস-রস-

সাগরে করহ স্নানকেলি।।

 

রূপ-রঘুনাথ-পায়, এ ভক্তিবিনোদ চায়

দেখিতে যুগলরসসিন্ধু।

জীবন সার্থক করে, সর্বজীব-চিত্ত হরে

সেই সাগরের এক বিন্দু।।৬।।

ক্রমশঃ…