Wednesday, September 22, 2021

💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐

🦚শ্রীকৃষ্ণই মূল নারায়ণ🦚

💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’গুরু - বৈষ্ণব  - ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় বিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ I’’

 

যৎকীর্ত্তনং যৎস্মরণং যদীক্ষণং 
যদ্বন্দনং যচ্ছ্রবনং যদর্হণম্  
লোকস্য সদ্যো বিধুনোতি কল্মষং 
তস্মৈ সুভদ্রশ্রবসে নমো নমঃ ।।  (ভাগবত //১৫)

অর্থাৎ,- আমি সেই সর্ব মঙ্গলময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি; যাঁর যশগাথা কীর্ত্তন, স্মরণ, দর্শন, বন্দন, শ্রবণ পূজনের ফলে সমস্ত পাপরাশি অচিরেই ধৌত হয়। 

 

‘’জ্ঞানযোগমার্গে তাঁরে ভজে যেই সব
ব্রহ্ম আত্মারূপে তাঁরে করে অনুভব ।।
উপাসনা ভেদে জানি ঈশ্বর মহিমা
অতএব সূর্য তাঁর দিয়ে উপমা ।।
সেই নারায়ণ  কৃষ্ণের স্বরূপ অভেদ
একই বিগ্রহ কিন্তু আকারে বিভেদ ।।
ইঁহো দ্বিভূজ তিঁহো ধরে চারি হাথ
ইঁহো বেণু ধরে , তিঁহো চক্রাদিক সাধ ।।‘’      

 

স্বরূপত শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীনারায়ণ অভিন্ন একইরূপ; কিন্তু অঙ্গ সন্নিবেশে তাঁদের পার্থক্য আছে শ্রীনারায়ণ হলেন শ্রীকৃষ্ণের বিলাসমূর্তি উভয়েই সচ্চিদানন্দঘন বিগ্রহ নার +অয়ণ = নারায়ণ ; 'নার' শব্দ অর্থে জীব আর অয়ণ শব্দ অর্থে আশ্রয় অর্থাৎ সকল জীবকুলের আশ্রয় যিনি তিনিই নারায়ণ আবার ব্র হ্মাণ্ড আর ব্রহ্মাণ্ডস্থিত জীবের সৃষ্টি-স্থিতি- প্রলয়ের অব্যবহতি কারণ যে কারণার্ণবশায়ী পুরুষ , গর্ভোদকশায়ী পুরুষ ক্ষীরোদশায়ী পুরুষ তাঁদেরও আশ্রয় হলেন শ্রীকৃষ্ণ সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ হলেন মূল নারায়ণ।

 

শিশু বৎস হরি ব্রহ্মা    করি অপরাধ
অপরাধ ক্ষমাইতে      মাগেন প্রসাদ ।।
তোমার নাভিপদ্ম হৈতে      মোর জন্মোদয়
তুমি পিতা-মাতা       আমি তোমার তনয় ।।
পিতা-মাতা বালকের     না লয় অপরাধ
অপরাধ ক্ষম মোরে          করহ প্রসাদ ।।
কৃষ্ণ কহেন ব্রহ্মা       তোমার পিতা নারায়ণ
আমি গোপ, তুমি কৈছে        আমার নন্দন ?


ব্রহ্মা বলে তুমি কিনা        হও নারায়ণ ?
তুমি নারায়ণ ,       শুন তাহার কারণ
প্রাকৃতা প্রাকৃত সৃষ্টে যত জীব রূপ
তাহার যে আত্মা তুমি মূল স্বরূপ ।।
পৃথ্বী যৈছে ঘটকুলের কারণ আশ্রয়
জীবের নিদান তুমি , তুমি সর্বাশ্রয় ।।
নার শব্দে কহে সর্ব জীবের নিচয়
অয়ণ শব্দেতে কহে তাহার আশ্রয় ।।
অতএব তুমি হও মূল নারায়ণ
এই এক হেতু , শুন দ্বিতীয় কারণ ।। ২২৩০

 

প্রাকৃত ব্রহ্মাণ্ডে এবং অপ্রাকৃত ভগবদ্ধামে যে সকল জীব আছে সকলই তোমার আশ্রয় জীব দুই প্রকার ---- মায়াবদ্ধ সংসারী জীব এবং নিত্য মায়ামুক্ত জীব নিত্যমুক্ত জীব ভগবানের পার্ষদগণের অন্তর্গত সেই বিভিন্নাংশ জীব দুইপ্রকার এক হল নিত্যমু্ক্ত একের নিত্য সংসার ।।

নিত্যমুক্ত --- নিত্য কৃষ্ণচরণে উন্মুখ

 কৃষ্ণ পারিষদ নাম --- ভুঞ্জে সেবাসুখ ।।

জীবের ঈশ্বর পুরুষাদি অবতার
তাহা সভা হৈতে ---- তোমার ঐশ্বর্য অপার ।।
অতএব অধীশ্বর তুমি সর্ব পিতা


তোমার শক্তিতে তারা জগৎ রক্ষিতা ।।
নারের অয়ণ যাতে করহ পালন
অতএব হও তুমি মূল নারায়ণ ।।
তৃতীয় কারণ শুন শ্রীভগবান্
অনন্ত ব্রহ্মান্ড বহু বৈকুন্ঠাদি ধাম ।।
ইথে যত জীব তার ত্রৈকালিক কর্ম
তাহা দেখ , সাক্ষী তুমি , জান সব মর্ম ।।
তোমার দর্শনে সর্ব জগতের স্থিতি
তুমি না দেখিলে কারো নাহি স্থিতি গতি ।।
নারের অয়ণ যাতে কর দরশন
তাহাতেও হও তুমি মূল নারায়ণ ।।
কৃষ্ণ কহেন ---- ব্রহ্মা তোমার না বুঝি বচন
জীব হৃদি-জলে বৈসে সেই নারায়ণ ।। ৩১৩৮

 

কারণার্ণবশায়ী প্রথম পুরুষ, গর্ভোদকশায়ী দ্বিতীয় পুরুষ , এবং ক্ষীরোদশায়ী তৃতীয় পুরুষ এই সকল পুরুষাদি অবতার থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বর্য অনেক বেশী

শ্রীকৃষ্ণ এদেরও ঈশ্বর অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণই অধীশ্বর বা পরমেশ্বর ত্রৈকালিক কর্ম বলতে ভূত , ভবিষ্যত বর্তমান -- এই তিন কালের কর্মকে বলে মায়াবদ্ধ মায়ামুক্ত জীব অতীতকালে যে কর্ম করেছে , বর্তমানে যা করছে , এবং ভবিষ্যতে যা করবে --- তার সকল কর্মের সাক্ষীই ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ সেই ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ সকল জগত দর্শন করেন বলেই সমম্ত জগত রক্ষা পাচ্ছে তিনি যদি জগত দর্শন না করতেন তবে জগতের কোন অস্তিত্বই থাকত না ফলে শ্রীকৃষ্ণের কৃপাদৃষ্টি ব্যতিরেকে জগত জীব রক্ষা পেতে পারে না জীবকুলের সাক্ষাৎ দ্রষ্টা পুরুষাদি অবতারকে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেন বলে শ্রীকৃষ্ণ মূল নারায়ণ

 

শ্রীকৃষ্ণের দৃষ্টির অভাবে তাঁদের ( জগতের ) সৃষ্টি-স্থিতি সংক্রান্ত কোন ক্ষমতাই থাকে না। অন্তর্যামীরূপে জীবের হৃদয়ে এবং জলে বাস করেন যিনি তিনিতো নারায়ণ পুরুষাদি অবতারই জলে বাস করেন প্রথম পুরুষ কারণ জলে , দ্বিতীয় পুরুষ ব্রহ্মান্ড গর্ভজলে আর তৃতীয় পুরুষ ক্ষীর জলে বাস করেন সুতরাং এই তিন পুরুষাবতারও নারায়ণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মাকে এই কথা বলেছেন কিন্তু ব্রহ্মা বললেন,- একথা সত্য ঠিকই ,  কিন্তু তাঁরাও তোমার অংশ একথা সত্য

 

জনম সফল তা',      কৃষ্ণ-দরশন যা',

ভাগ্যে হইয়াছে একবার।

বিকশিয়া হৃন্নয়ন        করি' কৃষ্ণ দরশন,

ছাড়ে জীব চিত্তের বিকার।।

বৃন্দাবন-কেলি চতুর বনমালী।

ত্রিভঙ্গ-ভঙ্গিমারূপ            বংশীধারী অপরূপ,

রসময় নিধি, গুণশালী।।

বর্ণ নব জলধর        শিরে শিখিপিচ্ছবর,

অলকা তিলক শোভা পায়।

পরিধানে পীতবাস বদনে মধুর হাস,

হেন রূপ জগৎ মাতায়।।

ইন্দ্রনীল জিনি কৃষ্ণরূপখানি হেরিয়া কদম্বমুলে।

মন উচাটন না চলে চরণ সংসার গেলাম ভুলে।।

(সখি হে) সুধাময় সে রূপ মাধুরী।

দেখিলে নয়ন, হয় অচেতন, ঝরে প্রেমময়বারি।।

বিবা চুড়া শিরে কোবাবংশী করে কিবা সে ত্রিভঙ্গ ঠাম।

চরণ কমলে, অমিয়া উছলে, তাহাতে নূপুর দাম।।

সদা আশা করি ভৃঙ্গরূপ ধরি চরণকমলে স্থান।

অনায়াসে পাই কৃষ্ণগুণ গাই আর না ভজিব আন।।

 

🍁জয় শ্রীরাধাগোবিন্দের জয়🍁🍁জয় সকল ভক্তগণের জয়🍁




 

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...