Sunday, September 5, 2021

🌳🦚💐🦘🏵️🌺🌷🌺🏵️🦘💐🦚🌳

💐🐰🐥শ্রীকৃষ্ণের অবতার সমূহ🐥🐰💐

🌳🦚💐🦘🏵️🌺🌷🌺🏵️🦘💐🦚🌳

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’গুরু - বৈষ্ণব  - ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় বিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ  I I’’

 

গুরবে গৌরচন্দ্রায় রাধিকায়ৈ তদালয়ে ।

কৃষ্ণায় কৃষ্ণভক্তায় তদ্ভক্তায় নমো নমঃ ।।

 

হিন্দুধর্মে অবতার বলতে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে স্বেচ্ছায় মর্ত্যে অবতীর্ণ পরম সত্ত্বাকে বোঝায়। কেবলমাত্র পরম সত্ত্বা বা পরমেশ্বরের অবতারগণ ধর্মানুশীলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এই সকল অবতার সর্বজন -শ্রদ্ধেয় অতি -লৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন। অন্যান্য অবতারগণ ঈশ্বরের গৌণ সত্ত্বার রূপ অথবা কোনো গৌণ দেবদেবীর অবতার।

অবতার শব্দটি হিন্দুধর্মে মূলত বিষ্ণুর অবতারদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। হিন্দুধর্মের অন্যতম বৃহৎ শাখা বৈষ্ণবধর্মে এই সকল অবতারের পূজার বিধান রয়েছে। বৈষ্ণবরা বিষ্ণুর দশাবতারকে পরমেশ্বরের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যরূপে কল্পনা করেন। পুরাণে শিব গণেশের অবতারের কথাও পাওয়া যায়। গণেশ পুরাণ মুদ্গল পুরাণে গণেশের অবতার সমূহের বর্ণনা রয়েছে। তবে এই সকল অবতারের তুলনায় হিন্দুধর্মে বিষ্ণুর অবতার গণের গুরুত্ব অধিক। অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য অবতারেরা বৈষ্ণব শাস্ত্রের বর্ণিত অবতারদের অনুসরণে কল্পিত হয়ে থাকে।

বিষ্ণুর অবতারঃ-
শ্রীবিষ্ণু ত্রিমূর্তির অন্যতম দেবতা হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী জগতের পালক রক্ষাকর্তা। গরুড় পুরাণ মতে বিষ্ণুর দশ অবতার এই দশ অবতারই মানব সমাজে তাঁদের প্রভাবের ভিত্তিতে সর্বাপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য হন। দশাবতারের প্রথম চার জন অবতীর্ণ হয়েছিলেন সত্যযুগে। পরবর্তী তিন অবতারের আবির্ভাব ত্রেতাযুগে। অষ্টম অবতার দ্বাপর যুগে এবং নবম অবতার কলিযুগে অবতীর্ণ হন। পুরাণ অনুসারে, দশম অবতার এখনো অবতীর্ণ হননি , তিনি কলিযুগের শেষ পর্বে অবতীর্ণ হবেন।

গরুড় পুরাণ অনুসারে বিষ্ণুর দশ অবতার হলেন:
সত্যযুগে অবতীর্ণঃ-
) মৎস্য, ) কূর্ম, ) বরাহ, ) নরসিংহ

ত্রেতাযুগে অবতীর্ণঃ-
) বামন , ) পরশুরাম, ) রামচন্দ্র 

দ্বাপরযুগে অবতীর্ণঃ-
) কৃষ্ণ ( বলরামের সঙ্গে )

কলিযুগে অবতীর্ণঃ
) বুদ্ধ ,  
১০ ) কল্কিসর্বশেষ অবতার , কলিযুগের অন্তে তাঁর আবির্ভাব ঘটবে।

ভাগবত পুরাণ অনুসারে বলরাম শেষনাগের অবতার। কোনো কোনো বৈষ্ণব শাস্ত্রে তাঁকে বিষ্ণুর নবম অবতার মনে করা হয়। উল্লেখ্য, এই সকল গ্রন্থে বুদ্ধের কোনো উল্লেখ নেই। ভাগবত পুরাণের প্রথম স্কন্দে সংখ্যাক্রম অনুসারে বিষ্ণুর যে বাইশ অবতারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা নিম্নরূপ,-
) চতুর্সন (ব্রহ্মার চার পুত্র), ) বরাহ , ) নারদ , ) নর- নারায়ণ , ) কপিল , ) দত্তাত্রেয় , ) যজ্ঞ , ) ঋষভ , )পৃথু , ১০) মৎস্য , ১১) কূর্ম , ১২) ধন্বন্তরী , ১৩) মোহিনী , ১৪) নৃসিংহ , ১৫) বামন , ১৬) পরশুরাম ,১৭) ব্যাসদেব , ১৮) রামচন্দ্র, ১৯) বলরাম , ২০) কৃষ্ণ , ২১) বুদ্ধ , ২২) কল্কি এই বাইশ অবতার ছাড়াও উক্ত গ্রন্থের পরবর্তী অংশে আরও তিন অবতারের কথা আছে :-  ) প্রশ্নিগর্ভ, ) হয়গ্রীব, ) হংস  

কল্কি অবতারের বর্ণনা দেওয়ার পর ভাগবত পুরাণে ঘোষিত হয়েছে, বিষ্ণুর অবতার অসংখ্য। যদিও উপরি উল্লিখিত পঁচিশ অবতারের গুরুত্বই সর্বাধিক। ভাগবত পুরাণের একটি শ্লোক, মহাভারতের কতকাংশ এবং অন্যান্য পৌরাণিক ধর্মগ্রন্থের মতে, চৈতন্য মহাপ্রভু হলেন বিষ্ণুর অন্যতম অবতার। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ঐতিহ্য অনুসারে তাঁকে অবতার রূপে পূজা করার বিধান রয়েছে। এই কারণেই চৈতন্য মহাপ্রভুকে গৌরাঙ্গ অবতার নামে অভিহিত করা হয়।

বৈষ্ণবধর্মে অন্যান্য অবতারগণ
) পুরুষ অবতারঃ
অনেক সময় নিম্নোক্ত পুরুষ অবতারদের মহাবিশ্বে বিষ্ণু বা কৃষ্ণের প্রকৃত অবতার বলে গণ্য করা হয় I বাসুদেব, সঙ্কর্ষণ, প্রদ্যুম্ন ও অনিরুদ্ধ

) গুণ অবতারঃ
ত্রিমূর্তি,- ব্রহ্মা বিষ্ণু ও মহেশ্বর  
হিন্দু ত্রয়ী দেবতা ত্রিমূর্তি অনেক সময় গুণ অবতার নামে অভিহিত হয়ে থাকেন। এর কারণ তাঁদের প্রকৃতির এক- একটি গুণের নিয়ন্ত্রক রূপে কল্পনা করা হয়। যদিও তাঁরা কখনই জীবের রূপ ধারণ করে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন না, তবুও তাঁদের অভিধার সঙ্গে অবতার কথাটি যুক্ত করা হয় I বিষ্ণুসত্ত্বগুণের নিয়ন্ত্রক,  ব্রহ্মারজো গুণের নিয়ন্ত্রক,  শিবতমোগুণের নিয়ন্ত্রক  

) মন্বন্তর অবতারঃ-
মন্বন্তর অবতারগণ বিশ্বজুড়ে বংশধর উৎপাদনের জন্য দায়ী। তাঁরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং তাঁদের কোনোপ্রকার জন্মগ্রহণ নেই।

) শাক্ত্যাবেস অবেস অবতারঃ-
অবতারদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়:
সাক্ষাৎঅবেস
যখন বিষ্ণু স্বয়ং অবতীর্ণ হন, তখন তাকে সাক্ষাৎ বা শাক্ত্যবেস অবতার বলা হয়। কিন্তু যখন তিনি নিজে অবতীর্ণ না হয়ে কারোর মাধ্যমে প্রকাশিত হন, তখন তাকে বলা হয় অবেস অবতার।

মনে করা হয়, অবেস অবতারের সংখ্যা অনেক। বিশিষ্ট অবেস অবতার হলেন নারদ, শাক্যমুণি বুদ্ধ পরশুরাম। পরশুরামই প্রসিদ্ধ দশাবতারের অন্যতম যিনি প্রত্যক্ষভাবে বিষ্ণুর অংশ সম্ভূত নন। হিন্দুধর্মের শ্রীবৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মতে প্রধান প্রত্যক্ষ অবতারদের দুটি শ্রেণি, পূর্ণ অবতার অংশ রূপাবতার:

পূর্ণ অবতার সেই অবতায়গণ, যাঁদের ক্ষেত্রে বিষ্ণু প্রত্যক্ষভাবে অবতীর্ণ হন এবং ঈশ্বরের সকল শক্তি গুণাবলি প্রদর্শন করেন। (যেমন, নৃসিংহ, রাম কৃষ্ণ) অংশ রূপাবতারের ক্ষেত্রেও বিষ্ণু প্রত্যক্ষভাবে অবতীর্ণ হন, কিন্তু তিনি আংশিকভাবে সেই রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। (যেমন, মৎস্য পরশুরাম)

অবেস অবতারগণ পরমেশ্বর রূপে পূজিত হন না। কেবলমাত্র প্রত্যক্ষ প্রধান অবতারগণই ওইরূপে পূজিত হন। প্রকৃতপক্ষে যে সকল প্রত্যক্ষ অবতার আজ পূজিত হন তাঁরা হলেন পূর্ণ অবতার নৃসিংহ, রাম কৃষ্ণ। অধিকাংশ বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মতে, কৃষ্ণ হলেন সর্বোচ্চ পূর্ণ অবতার। যদিও ইসকন সহ চৈতন্য মহাপ্রভু, নিম্বার্ক বল্লভ আচার্যের অনুগামীদের দার্শনিক মত রামানুজাচার্য মাধবাচার্যের মতো অপরাপর বৈষ্ণবদের থেকে পৃথক। তাঁরা কেবল কৃষ্ণকে অবতার বলেই মানেন না, তাঁকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মনে করেন। তবে সকল হিন্দুই বিশ্বাস করেন বিষ্ণু তাঁর অবতারদের পূজার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ সকলেই বিষ্ণুর সঙ্গে সংযুক্ত। দ্বৈত দর্শনের প্রবক্তা মাধবাচার্যের মতে, বিষ্ণুর সকল অবতার শক্তি অন্যান্য গুণে একে অপরের সমান। তাঁদের উচ্চনিচ ক্রম নেই। তাঁদের মধ্যে ভেদবুদ্ধি করা মহাপাপ।

ক্রমশ…

 

গায় গোরা মধুর স্বরে

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।

গৃহে থাক, বনে থাক,    সদা 'হরি' 'লে ডাক,

সুখে দুঃখে ভুল না'ক। 

বদনে হরিনাম কর রে ।।

মায়াজালে বদ্ধ 'য়ে,    আছ মিছে কাজ 'য়ে,

এখনও চেতন পে'য়ে। 

রাধা - মাধব নাম বল রে ।।

জীবন হইল শেষ,    না ভজিলে হৃষীকেশ

ভক্তিবিনোদ - (এই) উপদেশ,

এক বার নামরসে মাতরে ।।

গায় গোরা মধুর স্বরে ……..

No comments:

Post a Comment

🦚💐🏵 ️ 🌺🌷🌺🏵 ️ 💐🦚 🍁🌻🌷 চাতুর্মাস্য ব্রত 🌷🍁 🦚💐🏵 ️ 🌺🌷🌺🏵 ️ 💐🦚 শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ সকল সাধু , গুরু , ব...