💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐
🌷সোমবতী অমাবস্যা🌷
💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম।
‘’নিম্নগানাং যথা গঙ্গা দেবানামচ্যুতো যথা ।
বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভুঃ পুরাণানামিদং তথা ।।‘’ ( ভা. ১২ - ১৩/১৬ )
অর্থাৎ,- নদীগণের মধ্যে গঙ্গা, দেবগণের মধ্যে বিষ্ণু এবং বৈষ্ণবগণের মধ্যে শম্ভু সর্ব্ব শ্রেষ্ঠ, সেইরূপ পুরাণগণের মধ্যে শ্রীমদ্ভাগবত শ্রেষ্ঠ হইয়া থাকে।
দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ স্ত্রোত্র:-
সৌরাষ্ট্রে সোমনাথং চ শ্রীশৈলে মল্লিকার্জুনম্।
উজ্জয়িন্যাং মহাকালমোঙ্কারামমলেশ্বরম্।।
পরল্যাং বৈদ্যনাথং চ ডাকিন্যাং ভীমশঙ্করম্।
সেতুবন্ধে তু রামেশং নাগেশং দারুকাবনে।।
বারাণস্যাং তু বিশ্বেশম ত্র্যম্বকং গৌতমীতটে।
হিমালয়ে তু কেদারং ঘুশ্মেশং চ শিবালয়ে।।
এতানি জ্যোতির্লিঙ্গানি সায়ং প্রাতঃ পঠেন্নরঃ।
সপ্তজন্মকৃতং পাপং স্মরণেন বিনশ্যতি।।
এতেশাং দর্শনাদেব পাতকং নৈব তিষ্ঠতি।
কর্মক্ষয়ো ভবেত্তস্য যস্য তুষ্টো মহেশ্বরাঃ।।
সোমবতী অমাবস্যা কেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ ? সংসারের মঙ্গলের জন্য এই কাজগুলি করুন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সোমবতী অমাবস্যার নির্ঘণ্ট, পূজোর বিধি। সঙ্গে জেনে নিন, এই দিন ঠিক কী কী নিয়ম পালন করা শুভ?
সোমবার পড়ার কারণে এই অমাবস্যার নাম
সোমবতী আমাবস্যা
। এই দিন শুধু মহাদেব নয়, পার্বতী, গণেশ, কার্ত্তিক এবং নন্দীকেও পূজো করে থাকেন ভক্তরা। জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে, এই দিনটিতে চাঁদ, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র এবং শনি নিজেদের স্থানে থাকে। কেউ কারও উপর প্রকট হয় না। সোমবতী অমাবস্যার সঙ্গেই অবস্থান করে হরিয়ালি অমাবস্যা। তাই এই দিনে পার্বতী মাতার পূজো করলে সংসারে শান্তি বজায় থাকে। এই দিনে অনেক সধবা
নারী স্বামীদের শুভকামনায় উপোস করেন। আবার অবিবাহিত মেয়েরা শিবের মতো স্বামী পেতে উপোস থেকে পূজো দেন।
সোমবতী অমাবস্যায় কোন কাজগুলি করা শুভ?
এই দিনটিতে গাছ লাগালে এবং প্রকৃতির দেখভাল করলে সংসারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। ঈশ্বরের আশীর্বাদ মেলে বলেই বিশ্বাস করা হয়। এছাড়াও পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রেও দিনটি অত্যন্ত শুভ। দুস্থ-গরিবদের খাওয়াতে পারলে কিংবা তাঁদের হাতে বস্ত্র তুলে দিতে পারলে মঙ্গল হবে।
পূজোর আচারবিধি:-
ব্রহ্ম মুহূর্ত অর্থাৎ সূর্য ওঠার ঘণ্টা দুয়েক আগে উঠে পড়তে পারলে খুব ভাল। এরপর মেডিটেশন বা ধ্যান করে স্নান করে ফেলুন। স্নানের পর অবশ্যই পরিষ্কার পোশাক পরুন। দিনটি পবিত্রভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাটানোর সংকল্প করুন। এদিন চাল বা গম জাতীয় খাবার এবং আমিষ খাবার খাবেন না। সূর্যকে জল দিয়ে প্রণাম সেরে শিব, পার্বতী, কার্ত্তিক, গণেশ এবং নন্দীর পূজো করুন। তুলসী গাছে অবশ্যই জল দেবেন ও আরতি করবেন।
ব্রজে ভাণ্ডারীবন শ্রীকৃষ্ণের লীলাস্থলী। তাঁর কাছে বংশীবট বা ভাণ্ডারবট আছে যেখানে বংশী বাজিয়ে গোপীদের আকর্ষণ করেছিল শ্রীকৃষ্ণ। এখানে ব্রহ্মা রাধাকৃষ্ণের বিবাহ দিয়ে ছিলেন। এখানে এক অপূর্ব বিগ্রহ আছে রাধারাণী আর কৃষ্ণের। কৃষ্ণ রাধার কপালে সিঁদুর দিচ্ছেন। চরণটা উঁচু করে। এখানে বেণুকুপ আছে যা ভাণ্ডারবনে অবস্থিত। এই কুপ শ্রীকৃষ্ণ নিজের গোপসখাদের ও গো বাছুরদের তৃষ্ণা মিটাতে এই কুপ সৃষ্টি করে। পৃথিবীর উপরে বেণু রেখে তাতে ফুকার দিলেন আর তখন পানি বের হতে লাগল। তাই সেই কুপের নাম বেণুকুপ।
সখারা সেই মধুর জল পান করে পিপাসা মিটিয়ে ছিল। কৃষ্ণ নিজ পিপাসা মিটিয়ে ছিল। ওখানে এই অমাবস্যা তিথিতে মেলা বসে। বহুপ্রথাতে আছে, এই সোমবতী অমাবস্যা তিথিতে এই বেণুকুপে দুধের ধারা বের হয়। অতি সুস্বাদু এই কুপের জল। এই অমাবস্যা তিথিতে কুপের জলে স্নান করলে নিঃসন্তান দম্পতি সন্তান প্রাপ্তি হয়।
সোমবতী অমাবস্যার কথা
সোমবতী আমাবস্যা সম্পর্কে একটি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের গল্প। ব্রাহ্মণের পতি পত্নী আর তাঁর একটি মেয়ে ছিল যিনি খুব প্রতিভাবান এবং সর্বব্যাপী ছিলেন। তাঁর মেয়ে যখন বিবাহের জন্য যোগ্য হয় ব্রাহ্মণ তাঁর জন্য যোগ্য ছেলে সন্ধান শুরু করলেন। সেই মেয়েটি অত্যন্ত সুন্দরী সংস্কারী আর গুণবতী ছিল কিন্তু অনেক চেষ্টা করার সত্যেও দারিদ্রতার জন্য বিবাহ হইতে পারছিল না।
একদিন এক সন্ন্যাসী ব্রাহ্মণের বাড়িতে এলেন। সন্ন্যাসী সেই মেয়ের সেবাতে অত্যন্ত প্রসন্ন হয়ে দীর্ঘায়ু হওয়ার আশীর্বাদ দেন এবং মেয়ের হাতে বিয়ের রেখা না থাকার কথা জানান। তখন ব্রাহ্মণ দম্পতি এর সমাধান জানতে চাইলে সন্ন্যাসী কিছুক্ষণ বিচার করে জানালেন, পাশের গ্রামে সোনা নামে ধোবিনের একটি পরিবার রয়েছে, যে অত্যন্ত সংস্কারী ও পতি পরায়ণ । যদি মেয়েটি সেই ধোবিনের সেবা করে তাকে প্রসন্ন করতে পারে আর সেই মহিলা যদি নিজের মাথার সিন্দুর যদি এই মেয়ের মাথায় লাগায় তাহোলে এই মেয়ের বিবাহ হইতে পারবে। সন্ন্যাসী আরও বলেন যে সেই মহিলা কোথায় যাওয়া আসাও করেন না।
এই কথা শোনার পরে, ব্রাহ্মণী নিজের মেয়েকে সেই ধাবিনীর সেবা করতে বলল। পরদিন থেকে, মেয়েটি প্রতিদিন সকালে ধোবিনের বাড়ি গিয়ে সাফ - সাফাই আর বাড়ির সমস্ত কাজ করে নিজের বাড়ী চলেআসে । একদিন ধোবিন পুত্রবধূকে বললেন যে তুমি খুবই ভালো কারণ সকালে তারাতারি উঠে ঘরের সমস্ত কাজ শেষ করে নাও, তখন বহু বলল যে,- মাতাজী আমিত ভাবলাম আপনি প্রতিদিন সকালে তারাতারি ঘুম থেকে উঠে ঘরে সমস্ত কাজ করেন কারণ আমিত দেরিতে ঘুম থেকে উঠি। তারপর দু’জনেই অবাক হয়েছিলেন যে বাড়ী ঘরের সমস্ত কাজ কে করে। দুজনেই তারা গুপ্তভাবে প্রতীক্ষা করতে লাগলেন। কিছুদিন পর তারা দেখতে পেলেন যে একটি মেয়ে অরুণোদয়ের আগে এসে বাড়ির সকল কাজ শেষ করে চলে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে ধোবিন সেই মেয়ের পায়ে পড়ে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন তুমি কে ? কেন তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে বাড়ির সমস্ত কাজ করে চলেযাচ্ছ ?
তখন সেই মেয়েটি সন্ন্যাসী দ্বারা কহে গয়ে সমস্ত কথা সেই ধোবিনর সামনে বলল । ধোবিন পতি পরায়ণ ছিল। তার গায়ে তেজ ছিল তাই সে রাজি হয়েগেল। সোনা ধোবিনের পতি অস্বস্থ ছিল তাই তিনি বহু কে ঘরে থাকতে বলে সেই মেয়ের সঙ্গে ব্রাহ্মণের বাড়ী চলতে লাগল। সেখানে গিয়ে ধোবিন নিজের মাথার সিন্দুর সেই মেয়েটির মাথায় লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ধোবিনের পতি মারা গেলে আর ধোবিন এ কথা জানতে পারল। সেই দিন সোমবতী অমাবস্যা ছিল। ঘর থেকে ধোবিন নিরাহার গিয়েছিল তাই ফিরে আসার পথে পিপল গাছের উপাসনা করে ১০৮ বার সাদা সুতার ভঁওরী দিয়ে ১০৮ বার পিপল গাছের পরিক্রমা করেছিল। ইহার ফলে তিনি বাড়ি ফিরে এসে দেখলেন যে তাঁর স্বামী বেঁচে আছেন। তিনি ভগবানকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দেন । তখন থেকেই ধারণা করা হয় যে সোমাবতী অমাবস্যাতে পিপল গাছের উপাসনা করলে সুহাগের বয়স দীর্ঘ হয়।
💐হর হর মহাদেব💐ওঁ নমঃ শিবায়💐জয় শিবশঙ্কর💐
No comments:
Post a Comment