💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

🌷💞শ্রীহরিনাম💞🌷

💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’গুরু - বৈষ্ণব - ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় সর্ববিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

 

হরে কৃষ্ণ, আজ বিশেষ শুভদা হরিবাসর তিথি গৌর - একাদশী। নির্জ্জলা একাদশীর উপবাস। (পারণ - পরদিন ৭/৭ মিঃ গতে এবং পূর্ব্বাহ্ন ০৯/২৩ মিঃ মধ্যে একাদশীর পারণ) I আপনি নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন ও অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন।

 

নাম জপের নিয়ম

ভক্তরা প্রায়ই বলে থাকেন, "জপ করার জন্য কোনো ধরা - বাধা নিয়ম নেই। যেহেতু জপের সময় কোনো বিধিনিষেধ নেই, তাই অনেক ভক্তরাই মনে করেন জপ করার সময় ইন্টারনেট সার্চ করা, গাড়ি চালানো, পাঠ শোনা, শুয়ে থাকা, বাজার করা, ভিডিও দেখায় কোনো সমস্যা নেই। আর তাদের এ ধারণা যে ঠিক তার প্রমাণ দেয়ার জন্য তারা শিক্ষাষ্টকমের ২য় শ্লোকটি উল্লেখ করেন,-

 

নাম্নামকারি বহুধা নিজসর্বশক্তি-

স্তত্রার্পিতা নিয়মিতঃ স্মরণে ন কালঃ।

এতাদৃশী তব কৃপা ভগবন্মমাপি

দুর্দৈবমীদৃশমিহাজনি নানুরাগঃ।।২।।

অর্থাৎ,- হে ভগবান! তোমার নামই জীবের সর্বমঙ্গল বিধান করেন। এইজন্য তোমার ‘কৃষ্ণ’, গোবিন্দাদি বহুবিধ নাম তুমি বিস্তার করেছ। সেই নামে তুমি তোমার সর্বশক্তি অর্পণ করেছ এবং সেই নাম স্মরণের কালাদি-নিয়ম (বিধি বা বিচার) কর নি। হে প্রভু! এইভাবে কৃপা করে জীবের পক্ষে তুমি তোমার নামকে সুলভ করেছ, তবুও আমার নামপরাধরূপ দুর্দৈব এমনই প্রবল যে তোমার সুলভ নামেও আমার অনুরাগ জন্মাতে দেয় না।

 

"ভগবানের দিব্য নাম স্মরণে কোনো প্রকার বাধা-নিষেধ নেই।"

উল্লেখ্য, এখানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন যে ভগবানের নাম 'স্মরণে' বাধা-নিষেধ নেই। তিঁনি বলেননি যে ভগবানের 'নাম জপে' কোনো নিয়ম নেই। উপরোক্ত শ্লোকের মন্তব্যে মহাপ্রভু বলেন,-

"খাইতে শুইতে যথা তথা নাম লয়।

কাল দেশ নিয়ম নাহি, সর্বসিদ্ধি হয়।"

 

মহাপ্রভুর মন্তব্যেকে অপব্যবহার করে অনেক ভক্তরাই উপসংহার টানে, "দেখুন, মহাপ্রভু স্বয়ং বলেছেন যে জপ করার সময় শোয়া, খাওয়া কিংবা অন্য কিছু করাতে সমস্যা নেই।" দুঃখিত, এই যুক্তি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। মহাপ্রভু এখানে কেবল দিব্য নামের প্রভাব এবং কার্যক্ষমতার পুনরাবৃত্তি করছেন। জপের সময় শোয়া বা প্রসাদ পাওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করছেন না। সমগ্র শিক্ষাষ্টকম এবং উপরোক্ত মন্তব্যে মহাপ্রভু শুধুমাত্র ভগবানের দিব্য নামের অচিন্ত্য শক্তি, কৃপা এবং মহিমা কীর্ত্তন করেছেন।মহাপ্রভু বলছেন যে যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা ভগবানকে স্মরণ অথবা তাঁর নাম নিতে পারি এবং এটাই আমাদের করা উচিত। তাই দিব্য নাম কীর্ত্তনের ক্ষেত্রে মূলত কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই। কিন্তু নাম জপের ক্ষেত্রে নিয়ম রয়েছে। যদি আমরা এসব নিয়ম উপেক্ষা করি এবং জপ চালিয়ে যেতে থাকি, তাহলে শুধু অপরাধ বৃদ্ধি পাবে এবং শ্রীরাধাকৃষ্ণ প্রতি বিশুদ্ধ ভালোবাসা অর্জন করতে পারব না।

 

মালা জপের সময় নাম স্মরণ মন্ত্রঃ-

''নাম চিন্তামণি-রুপং নামৈব পরমা গতিঃ।

নাম্নঃ পরতরং নাস্তি তস্মান্নাম উপাস্মহে।।''

অর্থাৎ,- শ্রীহরি নাম চিন্তামণি ও পরমা গতি, নাম হইতে শ্রেষ্ঠ(উপাস্য) বস্তু আর কিছুই নাই; তাই শ্রীনামের স্মরণ নিলাম।

 

নামের মধ্যে দিয়াই শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান,-

''ত্রিভঙ্গ-ভঙ্গিম-রুপং বেনুরন্ধ্র-করাঞ্চিতং।

গো, গোপ, গোপী মণ্ডল-মধ্যস্থং শোভিতং নন্দ নন্দনং।।''

অর্থাৎ,- গো, গোপ, গোপীগণ মধ্যস্থ বেনুরন্ধ্রে করে যুক্ত, বাদনরত ত্রিভুজঙ্গ ভঙ্গিম শ্রীনন্দের নন্দন শ্রীকৃষ্ণকে ধ্যান করিতেছি। নাম জপের প্রথমে ও শেষে শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করিবেন।

 

শ্রীকৃষ্ণ প্রণাম মন্ত্রঃ-

'নমো নলিন-নেত্রায় বেণু বাদ্য-বিনোদিনে।

রাধা ধর সুধা পান শালিনে বন মালিনে।।'

 

মালা জপ আরম্ভের মন্ত্রঃ-

'অবিঘ্ন করু মালে, ত্বং হরি নাম-জপেষু চ।

শ্রীরাধা কৃষ্ণয়োর্দাস্যং দেহি মালে, তু প্রার্থয়ে।।'

অর্থাৎ,- হে মালে তোমাতে হরি নাম জপ করিতেছি, আমার সর্ব্ব বিঘ্ন দূরকর এবং শ্রীরাধাকৃষ্ণের দাস্য দান কর, এই প্রার্থনা করিতেছি।

 

মালা জপান্তে নিন্মরুপ জপ সমর্পণ করিতে হয়ঃ-

‘’গুহাতিগুহ গোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মং কৃতং জপং ।

সিদ্বি ভবতু-মে দেব ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দ্দন ।।‘’

অর্থাৎ,- হে পরম দেব, পরম অভিষ্ঠ, পরমপ্রিয় শ্রীকৃষ্ণ তুমি গুহ্য ও অতি গুহ্য বস্তুকে রক্ষা কর। অতএব আমার এই নাম জপ তুমি গ্রহণ কর। হে দেব তোমার প্রসাদে আমার সর্ব সিদ্ধি লাভ হয়।

 

ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্রঃ-

'নমো যদরং পরিভ্রস্টং মাত্রা হিনঞ্চ যদ ভবেৎ।

পূর্ণং ভবতু তৎ সর্বং ত্বৎ প্রসাদাত জনার্দ্দন।।'

অর্থাৎ,- আমার উক্ত কার্যে যদি কোন আচার বাদ যাইয়া থাকে বা মাত্রা বিবর্তিত থাকে হে ভগবান তোমার অনুগ্রহে তা পূর্ণত্ব প্রাপ্ত হউক।

 

শ্রীশ্রীপ্রেমবিবর্ত্ত:-
 অসাধু সঙ্গে নাম  হয়না:
অসাধু সঙ্গে ভাই কৃষ্ণনাম নাহি হয়। 
নামাক্ষর বাহিরায় বটে 
তবু নাম কভু নয়॥
কভু নামাভাস হয়, সদানাম-অপরাধ। 
এসব জানিবে ভাই কৃষ্ণভক্তির বাধ॥

নাম ভজন-প্রণালী:
যদি করিবে কৃষ্ণনাম সাধুসঙ্গ কর। 
ভুক্তি-মুক্তি-সিদ্ধি-বাঞ্ছাদূরে পরিহর॥
“দশ-অপরাধ” ত্যজ মান অপমান। 
অনাসক্ত্যে বিষয়ভুঞ্জ আর লহ কৃষ্ণনাম॥
কৃষ্ণভক্তির অনুকূল সব করহ স্বীকার। 
কৃষ্ণভক্তির প্রতিকূল সব কর পরিহার॥
জ্ঞানযোগ চেষ্টা ছাড় আর কর্ম্ম সঙ্গ। 
মর্কট বৈরাগ্য ত্যজ যাতে দেহরঙ্গ॥
কৃষ্ণ আমায় পালেরাখে জান সর্ব্বকাল।
আত্মনিবেদন দৈন্যে ঘুচাও জঞ্জাল॥
সাধু পাওয়া কষ্ট বড় জীবের জানিয়া। 
সাধুগুরু- রূপে কৃষ্ণ আইল নদীয়া॥
গোরাপদ আশ্রয় করহ বুদ্ধিমান্। 
গোরাবৈ সাধুগুরু আছে কেবা আন॥

 🌷বৈরাগীর কর্ত্তব্য🌷
বৈরাগী ভাই গ্রাম্যকথা না শুনিবে কানে। 
গ্রাম্যবার্তা না কহিবে যবে মিলিবে আনে॥
স্বপনেও না কর ভাই স্ত্রী-সম্ভাষণ। 
গৃহে স্ত্রী ছাড়িয়া ভাই আসিয়াছ বন॥
যদি চাহ প্রণয় রাখিতে গৌরাঙ্গের সনে। 
ছোট হরিদাসের কথা থাকেযেন মনে॥
ভাল না খাইবে আর ভাল না পরিবে। 
হৃদয়েতে রাধাকৃষ্ণ সর্ব্বদা সেবিবে॥

বড় হরিদাসের ন্যায় কৃষ্ণনাম বলিবে বদনে। 
অষ্টকাল রাধাকৃষ্ণ সেবিবে কুঞ্জবনে॥

🏵️গৃহস্থ ও বৈরাগীর প্রতি আদেশ🏵️
গৃহস্থ বৈরাগী দুঁহে বলে গোরা রায়। 
‘’দেখ ভাই নাম বিনা যেন দিন নাহি যায়’’ ॥
বহু-অঙ্গ সাধনে ভাই নাহি প্রয়োজন।
কৃষ্ণ নামাশ্রয়ে শুদ্ধ করহ জীবন॥
বদ্ধজীবে কৃপাকরি’ কৃষ্ণ হইল নাম। 
কলি জীবে দয়াকরি’ কৃষ্ণ হইল গৌরধাম॥
একান্ত-সরল-ভাবে ভজ গৌরজন। 
তবেত’ পাইবে ভাই শ্রীকৃষ্ণচরণ॥
গৌরজন সঙ্গ কর গৌরাঙ্গ বলিয়া। 
‘হরেকৃষ্ণ’ নাম বল নাচিয়া নাচিয়া॥
অচিরে পাইবে ভাই নাম প্রেমধন। 
যাহা বিলাইতে প্রভুর নদেএ আগমন॥
প্রভুর কুন্দলে জগা কেঁদে কেঁদে বলে। 
নাম ভজ নাম গাও ভকত সকলে॥

 

🏵️শ্রীকৃষ্ণনামাষ্টকম্🏵️

🦚💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🦚

শ্রীকৃষ্ণনাম্নে নমঃ

নিখিল-শ্রুতি-মৌলিরত্নমালা-

দ্যুতি-নীরাজিত-পাদপঙ্কজান্ত।

অয়ি! মুক্তকুলৈরুপাস্যমানং

পরিতস্ত্বাং হরিনাম সংশয়ামি।।১।।

 

শ্রীকৃষ্ণনামকে আমি প্রণাম করি।

অর্থাৎ,- হে হরিনাম! বেদের শিরোভাগস্বরূপ উপনিষদ্‌গণ রূপ রত্নমালার কান্তিদ্বারা তোমার শ্রীপাদপদ্মের নখরাজি (যেহেতু তুমি বাচ্যস্বরূপ হইতে অভিন্ন) নীরাজিত হয় ও তুমি মুক্তগণকর্তৃক সর্বদা উপাসিত হইয়া থাক। অতএব আমি তোমাকে সর্বতোভাবে আশ্রয় করিতেছি। (নীরাজিত—যেমন দীপমালার আলোক-প্রবাহ দ্বারা শ্রীভগবৎপাদপদ্ম নীরাজিত হয় অর্থাৎ তাঁহার আরাত্রিক হয়, তদ্রূপ উপনিষরূপ রত্নমালার দ্যুতিপ্রবাহ দ্বারা নামী শ্রীকৃষ্ণাভিন্ন নাম স্বরূপের শ্রীপাদপদ্মের নখরাজি নীরাজিত হইয়া থাকে, অর্থাৎ সমস্ত বেদ শ্রীনাম-স্বরূপের আরাধনা করেন।)।।১।।

 

জয় নামধেয়! মুনিবৃন্দগেয়!

জন-রঞ্জনায় পরমাক্ষরাকৃতে।

ত্বমনাদরাদপি মনাগুদীরিতং

নিখিলোগ্রতাপ-পটলীং বিপুম্পসি।।২।।

অর্থাৎ,- হে শ্রীনাম! মুনিগণ সর্বদা তোমার কীর্ত্তন করেন। তুমি জনগণের অনুরাগ উৎপাদনের জন্য (দয়ালুত্বনিবন্ধন দয়া করিয়া) চিন্ময় অক্ষররূপে বিরাজিত এবং কেহ যদি তোমাকে অবহেলাপূর্বকও একবার উচ্চারণ করে, তবে তুমি তাহার অতিশয় পীড়াদায়ক সমস্ত তাপরাশি বিলুপ্ত কর। অতএব তুমি জয়যুক্ত হও (অর্থাৎ পাপরাশি দহনরূপ স্বীয় উৎকর্ষ প্রদর্শন কর)।।২।।

 

যদাভাসোঽপ্যুদ্যন্ কবলিত-ভবধ্বান্ত-বিভবো

দৃশং তত্ত্বান্ধানামপি দিশতি ভক্তিপ্রণয়িনীম্।

জনস্তস্যোদাত্তং জগতি ভগবন্নাম-তরণে!

কৃতী তে নির্বক্ত্রং ক ইহ মহিমানং প্রভবতি।।৩।।

অর্থাৎ,- হে ভগবন্নাম-সূর্য! তোমার উদয়কালীন আভাসও ভবের অন্ধকাররূপ সম্পদ গ্রাস করে (অর্থাৎ সংসারে অনবরত জন্ম মৃত্যুরূপ সংসৃতি নাশ করে) এবং তত্ত্বজ্ঞানহীন জনগণকেও কৃষ্ণভক্তিবিষয়িণী দৃষ্টি অর্থাৎ প্রজ্ঞা দান করে। সুতরাং এই জগতের কোন পণ্ডিত ব্যক্তি সেই তোমার উচ্চ মহিমা বিশেষরূপে কীর্ত্তন করিতে সমর্থ হন? (সঙ্কেত পরিহাস স্তোভ-হেলায় উচ্চারিত ভগবন্নামকেই নামাভাস বলে। সূর্যোদয়ের পূর্বে যেমন তাহার আভাসদ্বারা অন্ধকারের নাশ হয়, তদ্রূপ নামাভাসেও অন্ধকাররূপ সংস্কৃতির নাশ হয়। সূর্যের আভাস যেমন অন্ধকারে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকেও দৃষ্টি দান করে, সেইরূপ নামাভাস কৃষ্ণতত্ত্বজ্ঞানহীন জনকে তদ্ভক্তিবিষয়ক জ্ঞান-দান করেন)।।৩।।

 

যদ ব্রহ্ম-সাক্ষাৎকৃতি-নিষ্ঠয়াপি

বিনাশমায়াতি বিনা ন ভোগৈঃ।

অপৈতি নাম! স্ফুরণেন তত্তে

প্রারব্ধ-কর্মেতি বিরৌতি বেদঃ।।৪।।

অর্থাৎ,- যে ব্রহ্মনিষ্ঠাদ্বারা (তৈলধারাবৎ অবিচ্ছিন ব্রহ্মচিন্তার দ্বারা) ব্রহ্ম-সাক্ষাৎকার লাভ হয়, সেইরূপ নিষ্ঠাদ্বারাও কর্মভোগ ব্যতীত যে প্রারব্ধ কর্মের বিনাশ হয় না, তাহাও হে শ্রীনাম! জিহ্বাতে তোমার স্ফুর্তি হইবামাত্র বিনষ্ট হয়, বেদ ইহা উচ্চৈঃস্বরে কীর্ত্তন করিতেছেন। (প্রারব্ধ কর্ম-যে কর্মের ফলভোগ আরম্ভ হইয়াছে)।।৪।।

 

অঘদমন-যশোদানন্দনৌ নন্দসূনো

কমলনয়ন-গোপীচন্দ্ৰ-বৃন্দাবনেন্দ্ৰাঃ।

প্রণতকরুণ-কৃষ্ণবিত্যনেক-স্বরূপে

ত্বয়ি মম রতিরুচ্চৈবৰ্দ্ধিতাং নামধেয়।।৫।।

অর্থাৎ,- হে অঘদমন! হে যশোদা-নন্দন! হে নন্দনন্দন! হে কমলনয়ন! হে গোপীচন্দ্ৰ! হে বৃন্দাবনেন্দ্র! হে প্রণতকরুণ! হে কৃষ্ণ! ইত্যাদি হে নামধেয়! তোমার অনেক স্বরূপ আছে, সেই সকল স্বরূপে আমার রতি অতিশয়িতরূপে বর্ধিত হউক।।৫৷৷

 

বাচ্যং বাচকমিত্যুদেতি ভবতো নাম স্বরূপ-দ্বয়ং

পূর্বস্মাৎ পরমেব হন্ত করুণং তত্রাপি জানীমহে।

যস্তস্মিন্ বিহিতাপরাধনিবহঃ প্রাণী সমন্তাদ্ভবে

দাস্যেনেদমুপাস্য সোঽপি হি সদানন্দাম্বুধৌ মজ্জতি।।৬।।

অর্থাৎ,- হে শ্রীনাম! তোমার বাচ্য ও বাচক—এই দুইটি স্বরূপ (জগতে) শোভা পাইতেছে। তন্মধ্যে আমরা বাচ্য অপেক্ষা বাচককে অধিক করুণাময় বিবেচনা করি। কারণ যে জীব তোমার বাচ্যস্বরূপের প্রতি সর্বপ্রকারে অপরাধ করিয়া থাকে, সেও নামোচ্চারণরূপ বাচকের উপাসনাদ্বারা, নিরপরাধ হইয়া সর্বদা আনন্দ-সমুদ্রে মগ্ন থাকে। (বাচ্য-বিভুচৈতন্যাত্মক বিগ্রহ পরমেশ্বর। বাচক-কৃষ্ণ-গোবিন্দাদি বর্ণসমষ্টি)।।৬।।

 

 

সূদিতাশ্রিতজনার্তিরাশয়ে

রম্যচিদ্‌ঘন-সুখস্বরূপিণে।

নাম গোকুলমহোৎসবায় তে

কৃষ্ণ পূর্ণ বপুষে নমো নমঃ।।৭।।

অর্থাৎ,- হে শ্রীনাম! হে কৃষ্ণ! তুমি আশ্রিত জনগণের (নামাপরাধ পর্যন্ত পীড়াসমূহ নাশ কর, তুমি ভক্তগণের নিকটে রমণীয় চিদ্ঘনসুখস্বরূপ, তুমি গোকুলবাসীদিগকে মহানন্দ দান কর এবং তুমি ব্যাপক, অতএব তোমাকে পুনঃ পুনঃ প্ৰণাম করি।।৭।।

 

নারদ-বীণোজ্জীবন-সুধোম্মিনির্যাসমাধুরীপুর।

ত্বং কৃষ্ণনাম কামং স্ফুর মে রসনে রসেন সদা।।৮।।

অর্থাৎ,- হে কৃষ্ণনাম! তুমি শ্রীনারদ ঋষির বীণায় চেতনার সঞ্চার কর এবং তোমার মাধুর্য-প্রবাহ অমৃত তরঙ্গের সারাংশ স্বরূপ। অতএব, আমার প্রার্থনা, তুমি সর্বদা আমার জিহ্বায় আনন্দময়রূপে যথেষ্ট নৃত্য করিতে থাক (কারণ নামগ্রহণে আমার নিজের সামর্থ্য নাই)।।৮।।