🦚💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🦚

🌷শ্রীশ্রীগৌর লীলামৃত🌷

🦚💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🦚

শ্রীশ্রীগুরুগৌরাঙ্গজয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌরভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্তকোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’হরি - গুরু – বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ।।‘’

 

আজানুলম্বিত – ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎ প্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

প্রতিবছর গৌড়ের ভক্তগণ রথযাত্রা উপলক্ষে প্রভুর দর্শন লালসায় নীলাচলে এসে উপস্থিত হন। চাতুর্ম্মাস্যের চারমাস তাঁরা প্রভুর কাছে নীলাচলে অতিবাহিত করার পর গৌড়ে ফিরে যান। আবার রথযাত্ৰা এল। প্ৰভু যদিও নিত্যানন্দ প্রভুকে গৌড়েই থাকতে আদেশ করেছিলেন, তবুও তিনি সেই আদেশ না মেনে প্রভুর চরণদর্শন অভিলাষে প্ৰতিবছরই রথযাত্রার সময় এসে থাকেন। তিনি এই বছরও অদ্বৈতাচাৰ্য্যের সঙ্গে যাত্ৰা করলেন।

প্রভুর ভক্তগণ প্রভুর জন্য তাঁর প্রিয় খাদ্যদ্রব্য গুলি প্ৰস্তুত করে সঙ্গে নিয়ে আসেন । তাঁরা পুরীতে এসে সেই সমস্ত দ্রব্য প্রভুর ভৃত্য গোবিন্দের হাতে সমৰ্পণ করলেন। গোবিন্দ সেগুলি প্রভুর ভোজনের সময় দেবেন বলে ভোজনগৃহের এক কোণে রেখে দিলেন। ঐ দিন জগন্নাথদেব নরেন্দ্ৰ সরোবরে নৌকারোহণে জলবিহার করলেন। প্ৰভু ভক্তদেরকে নিয়ে জগন্নাথের জলবিহার দর্শনের পর কিছুক্ষণ নাচ ও কীৰ্ত্তন করলেন। পরে নিজেরাও জলক্রীড়া করে বাসায় এসে মহাপ্ৰসাদ ভোজন করলেন।

পরদিন প্ৰভাতে উঠে ভক্তদেরকে নিয়ে জগন্নাথের শয্যা- উত্থান দর্শন করে কীর্ত্তন আরম্ভ করলেন । ক্ষেত্রবাসীগণ মহাপ্রভুর সেই কীৰ্ত্তন দর্শন করার জন্য ভীড় করলেন। রাজপরিবারের লোকেরা অট্টালিকার ছাদের উপরে আরোহণ করে প্ৰভুর কীৰ্ত্তন দেখতে লাগলেন। স্বরূপগোসাঁই প্রভুর আদেশে “জগমোহন পরিমুণ্ডা যাঙ” — হে জগন্মোহন, তোমার নিৰ্ম্মঞ্ছন যাই — -এই উড়িয়া পদটি গাইতে লাগলেন। লোকেরা চারিদিক থেকে মুহুর্মুহু হরিধ্বনি করতে লাগলেন। কীৰ্ত্তনের কোলাহলে ত্ৰিভুবন কাঁপতে লাগল। প্ৰভু বেলা তৃতীয় প্রহর পর্যন্ত এইভাবে কীৰ্ত্তন করলেন। নিতানন্দ প্ৰভু কীৰ্ত্তনীয়াদের শ্ৰান্ত দেখে প্রভুকে জানিয়ে কীৰ্ত্তন বন্ধ করলেন।

এরপর প্ৰভু ভক্তদের সঙ্গে সমুদ্রে স্নান করে প্ৰসাদ গ্রহণ করে গম্ভীরার দ্বারে শয়ন করলেন। গোবিন্দ প্ৰভুর পাদ সম্ভাষণ করতে এসে প্ৰভুকে দ্বার জুড়ে শুয়ে থাকতে দেখলেন। তিনি প্রতিদিন ভোজনের পর মহাপ্ৰভু শয়ন করলে কিছুক্ষণ তাঁহার পাদ - সম্ভাষণ করার পরে নিজে গিয়ে আহার করেন ।

‘’সবারে বিদায় দিল করিতে শয়ন।

গম্ভীরার দ্বারে কৈল আপনি শয়ন।।

গোবিন্দ আইল করিতে পাদসম্বাহন।

সৰ্ব্বকাল আছে এই দৃঢ় নিয়ম।।

প্রভু যদি প্রসাদ পাঞা করেন শয়ন ।

গোবিন্দ আসিয়া করে পাদসম্বাহন।।

তবে যাই প্রভুর শেষ করেন ভোজন।

সব দ্বার যুড়ি প্রভু করিয়াছেন শয়ন’’।

 

আজ প্রভুকে দরজা জুড়ে শুয়ে থাকতে দেখে চিন্তা করতে লাগলেন, কিভাবে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে প্রভুর পদসেবা করবেন । পরে তিনি প্রভুকে পথ ছেড়ে দিতে বললেন। প্ৰভু উত্তর করলেন,- ‘’আমার অত্যন্ত পরিশ্ৰম বোধ হচ্ছে, নড়তে পারছি না।‘’ ভিতরে যাইতে নারে, গোবিন্দ করে নিবেদন ।।

এক পাশ হও' মোরে দেহ ভিতরে যাইতে ।

প্রভু কহে , - শক্তি নাহি অঙ্গ চালাইতে।।

বার বার গোবিন্দ কহে এক দিক হৈতে ।

প্রভু কহে ‘‘অঙ্গ আমি নারি চালাইতে''।।

গোবিন্দ কহে, ''করিতে চাহি পদ সম্বাহন ৷

প্রভু কহে, কর বা না কর যেই তোমার মন’’।।

তবে গোবিন্দ তার বহিৰ্ব্বাস উপরে দিয়া ।

ভিতর ঘরে গেল মহাপ্রভুকে লঙ্ঘিয়া ।।

 

অগত্যা গােবিন্দ প্রভুর পদসেবায় বাধা হয় দেখে প্রভুর একখানা বহির্বাস নিয়ে প্রভুর চরণের উপর আচ্ছাদন দিয়ে ঐ চরণ ডিঙ্গিয়ে ঘরের মধ্যে প্ৰবেশ করলেন এবং প্রভুর পদসেবা করতে লাগলেন । প্রভু নিদ্রা গেলেন । দুইদণ্ড কাল এইভাবেই কেটে গেল।

 

পাদ সম্বাহন কৈল কটি পৃষ্ঠ চাপিল ।

মধুর মর্দনে প্রভুর পরিশ্রম গেল ।।

সুখে নিদ্রা হৈল প্রভুর গোবিন্দ চাপে অঙ্গ ।

দণ্ড দুই বই প্রভুর হৈল নিদ্রা ভঙ্গ ।।

এরপর প্রভুর নিদ্রাভঙ্গ হল । প্রভু দেখলেন গোবিন্দ তখনও তাঁর পাদসম্বাহন করছেন, ভোজন করতে যাননি । এই দেখে কৃত্রিম রাগ প্রকাশ করে প্রভু বললেন,- ''একি গোবিন্দ ! তুমি এখনো প্রসাদ নিতে যাওনি যে!’’

 

গোবিন্দ উত্তর করলেন,- ''প্রভু দ্বার জুড়ে শুয়ে আছেন, যাবার পথ পাইনি।'' প্রভু ঈষৎ হেসে জিজ্ঞাসা করলেন,- প্ৰথমে ভিতরে আসতে পথ পেয়েছিলে ত?

গোবিন্দে দেখিয়া প্ৰভু বলে ক্রুদ্ধ হঞা ।

আজি কেন এতক্ষণ আছিস বসিয়া?

নিদ্ৰা হৈলে কেন নাহি গেলা প্রসাদ খাইতে’?

গোবিন্দ কহে, ''দ্বারে শুইলা, যাইতে নাহি পথে’’।।

প্রভু কহে, ''ভিতরে তবে আইলে কেমনে ?

তৈছে কেন প্রসাদ লৈতে না কৈলে গমনে’’?

 

গোবিন্দ শুনে নিরুত্তর রইলেন, মনে মনে বললেন,- ‘’আসবার সময় প্রভুর সেবায় বাধা পড়ে বলে প্রভুকে ডিঙ্গিয়ে ঘরে ঢুকেছিলাম । কিন্তু নিজে ভোজন করতে যাবো বলে প্ৰভুকে লঙ্ঘন করে তো আর অপরাধী হতে পারি না’’।

গোবিন্দ কহে ‘’মনে -আমার সেবা সে নিয়ম।

অপরাধ হউক, কিবা নরকে গমন।।

সেবা লাগি কোটি অপরাধ নাহি গণি।

স্ব নিমিত্ত অপরাধ আভাসে ভয় মানি।।‘’

এত সব মনে করি গোবিন্দ রহিল ।

প্ৰভু যে পুছিলা তার উত্তর না দিল ।।

প্রত্যহ প্রভু নিদ্রা গেলে যায় প্রসাদ লইতে ।

সে দিবসের শ্রম জানি লাগিল চাপিতে ।।

যাইতেও পথ নাহি যাইবে কেমনে ।

মহা অপরাধ হয় প্রভুর লঙ্ঘনে ।।

 

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পার্ষদ গোবিন্দ নিজের মনে বললেন,- ''সেবা করা আমার কর্ত্তব্য, তার ফলে আমার অপরাধ হোক বা নরকেই গমন হোক। ভগবানের সেবা করতে গিয়ে যদি আমার কোটি অপরাধও হয়, তার আমি কোন গুরুত্ব দিই না। কিন্তু নিজের সুখের জন্য অপরাধের আভাসকেও আমি ভয় করি।'' শুদ্ধ ভক্তের অনুভূতি এমনই হওয়া কর্ত্তব্য।

এই সব হয় ভক্তিশাস্ত্রের সূক্ষ্মধৰ্ম্ম ।

চৈতন্যের কৃপায় জানে সেই ধৰ্ম্মমৰ্ম্ম ।।

ভক্তগুণ প্রকাশিতে প্রভু বড় রঙ্গী ।

এই সব প্রকাশিতে কৈল এত ভঙ্গী ।।   (চৈঃ চঃ অন্ত্যলীলা)

 

ভক্তের এও এক অপূৰ্ব লীলা,- প্রভুর সেবার জন্য অপরাধ ভাবেন না, নিজের কাৰ্যের জন্য অপরাধের ভয় করে থাকেন । প্ৰভু গােবিন্দের মনের ভাব বুঝে পথ ছেড়ে দিলেন। গোবিন্দ তখন প্ৰসাদ গ্রহণ করতে গেলেন । অনন্তর প্রভু পূৰ্ব্ব পূর্ব্ব বছরের ন্যায় ভক্তদেরকে নিয়ে গুণ্ডিচা মন্দির মার্জন, বনভোজন, রথের সম্মুখে নৃত্য, হেরাপঞ্চমী ও জন্মাষ্টমী প্রভৃতির যাত্রা দর্শন করলেন।

 

ভক্তগণ মধ্যে মধ্যে উত্তম উত্তম মিষ্টান্ন প্ৰসাদ এনে প্রভুর জন্য গােবিন্দের হাতে প্রদান করেন ; গোবিন্দও প্রভুর ভোজনের সময় ''অমুক ভক্ত অমুক খাদ্যদ্রব্য দিয়েছেন'' বলে প্রভুকে নিবেদন করেন । প্রভু কেবল বলেন, “রেখে দাও।” এইভাবে মিষ্টান্ন রাখতে রাখতে ঘর ভরে গেল। একদিন প্রভুর ভোজনের সময় গোবিন্দ বললেন,- ''প্রভু ! ভক্তরা আপনার জন্য যে যা এনে দেন ,আপনাকে নিবেদন করি । আপনি গ্ৰহণ করেন না, রেখে দিতেই বলেন; রাখতে রাখতে ঘর ভরে গেল। ভক্তেরা মধ্যে মধ্যে আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘প্রভুকে অমুক জিনিসটা দিয়েছিলে ?’ আমি তখন তাঁকে কি উত্তর দেব ঠিক পাইনা । মাঝে মাঝে তাঁদের মিথ্যা কথাও বলতে হয় । প্রভু যদি কিছু কিছু গ্রহণ করেন, তবে আর আমাকে মিথ্যা কথা বলতে হয় না।''

 

''অমুক এই দিয়াছে’’ , গোবিন্দ করে নিবেদন ।

'ধরি রাখ' – বলি প্রভু না করে ভক্ষণ ।।

ধরিতে ধরিতে ঘরের ভরিল এক কোণ ।

শত জনের ভক্ষ্য যত হৈল সঞ্চয়ন ।।

গোবিন্দেরে সবে পুছে করিয়া যতন ।

''আমা দত্ত প্রসাদ প্ৰভু কি করিলেন ভক্ষণ'' ?

কাহা কিছু কহি গোবিন্দ করেন বঞ্চন ।

আর দিনে প্রভুকে কহেন নিৰ্ব্বেদ বচন।।

আচার্য্যাদি মহাশয় করিয়া যতনে ।।

তোমাকে খাওয়াইতে ব্যস্ত, দেন মোর স্থানে ।

তুমি সে না খাও তারা পুছেন বার বার ।

কত বঞ্চনা করিব, আমার কেমনে নিস্তার ?”

 

প্রভু ঈষৎ বিরক্তি সহকারে বললেন,- ''আনো, কে কি দিয়েছে আনো'' । গোবিন্দ একে একে যতদূর মনে হয়, নাম করে করে প্রভুকে এনে দিতে লাগলেন ‌।

প্রভু কহে ''আদিবস্যা ! দুঃখ কাহে মনে ?

কেবা কি দিয়াছে তাহা আনহ এখানে'' ।।

এত বলি মহাপ্রভু বসিল ভোজনে ।

নাম ধরি ধরি গোবিন্দ করে নিবেদনে ।।

"আচার্য্যের এই পেড়া নানা রসপুপী ।

এই অমৃত মণ্ড, এই কর্পূর কুপী ।।

শ্ৰীবাস পণ্ডিতের এই অনেক প্রকার ।

পীঠাপানা অমৃত মণ্ড পদ্ম চিনি আর ।।

আচার্য্য রাজের এই সব উপহার ।

আচার্য্য নিধির এই অনেক প্রকার ।।

বাসুদেব দত্তের, মুরারি গুপ্তের আর ।

বুদ্ধিমন্ত খানের এই বিবিধ প্রকার ।।

শ্রীমান সেন, শ্রীমান পণ্ডিত, আচাৰ্য্য নন্দন ।

তা সবার দত্ত এই করহ ভোজন ।।

কুলীন গ্রামীর এই আগে দেখ যত ।

খণ্ডবাসী লোকের এই দেখ তত'' ।।

ঐছে সবার নাম লয়ে প্রভুর আগে ধরে,

সন্তুষ্ট হইয়া প্রভু সব ভোজন করে ।।

যদ্যপি মাসেকের বাসি মুকুরা নারিকেল ।

অমৃত গুটিকা আদি পানাদি সকল ।।

তথাপি নূতন প্রায় সব দ্রব্যের স্বাদ ।

বাসি বিস্বাদ নহে, প্রভুর প্রসাদ ।।

শত জনের ভক্ষ্য প্রভু দণ্ডেকে খাইল ।

''আর কিছু আছে ?'' বলি গোবিন্দে পুছিল ।।

গোবিন্দ বলে ''রাঘবের ঝালি'' মাত্র আছে' ।

প্রভু কহে ''আজি রহুক তাহা দেখিব পাছে'' ।।

 

প্রভু দণ্ডের মধ্যে শতজনের ভক্ষ্যদ্রব্য খেয়ে ফেললেন। নিজের ভোজন শেষ হলে, প্ৰভু গোবিন্দকে জিজ্ঞাসা করলেন, ''আর কিছু আছে ?'' গোবিন্দ বললেন,- ''রাঘব পণ্ডিত গৌরদেশ থেকে ঝালি পূর্ণ করে যা এনেছিলেন, সেগুলিই আছে। প্ৰভু শুনে হেসে বললেন,- সেগুলি আজ থাক, পরে দেখা যাবে।'' অপর একদিন প্ৰভু ভোজনে বসলেন, স্বরূপ গোসাঁই ঐ রাঘব পণ্ডিতের ঝালি থেকে কিছু কিছু নিয়ে প্রভুকে পরিবেশন করলেন । প্ৰভু খেয়ে সেই সব দ্রব্যের অনেক প্রশংসা করতে লাগলেন। স্বরূপগোসাঁই কোন কোন দিন রাত্রিকালেও রাঘবের ঝালি থেকে কোন কোন দ্রব্য এনে প্রভুকে খাওয়ালেন।

 

চাতুৰ্ম্মাস্যের চারমাস গৌড়ের ভক্তগণ প্ৰভুকে নিজের নিজের বাসায় নিমন্ত্ৰণ করে ইচ্ছামত ভোজন করাতে লাগলেন। একদিন শিবানন্দ সেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র চৈতন্যদাস প্ৰভুকে নিমন্ত্ৰণ করে দই ও অন্ন ভোজন করালেন । ভোজনের শেষে বাসায় ফিরে যাবার সময় প্রভু শিবানন্দকে বললেন,- ''তোমার এই দ্বিতীয় পুত্রটির নাম কি ?'' শিবানন্দ বললেন, ‘রামদাস’ প্ৰভু আবার বললেন,- এবার তোমার যে পুত্ৰ জন্মাবে, তার নাম হবে ‘পুরীদাস’। শিবানন্দের পত্নী গর্ভবতী ছিলেন। প্ৰভু এই কথা বলে চলে গেলেন। চাতুৰ্ম্মাস্য অতীত হলে, গৌড়ের ভক্তগণ গৌড়ে’ প্ৰত্যাগমন করলেন। প্ৰভু উড়িষ্যার ভক্তগণের সঙ্গে যথেচ্ছ বিহার করতে লাগলেন ।

 (১)

গৌরাঙ্গের দু'টি পদ, জা'র ধন সম্পদ,

সে জানে ভকতি - রসসার ।

গৌরাঙ্গের মধুর লীলা, জা'র কর্ণ্ণে প্রবেশিলা,

হৃদয় নির্মল ভেল তা'র । I 

(২)

যে গৌরাঙ্গের নাম লয়, তা'র হয় প্রেমোদয়,

তা'রে মুঞি জাই বলিহারি ।

গৌরাঙ্গ-গুণেতে ঝুরে, নিত্যলীলা তা'রে স্ফুরে,

সে - জন ভকতি - অধিকারী ।।

(৩)

গৌরাঙ্গের সঙ্গিগণে, নিত্যসিদ্ধ করি’ মানে,

সে জায় ব্রজেন্দ্রসুত - পাশ ।

শ্রীগৌড়মণ্ডল-ভূমি, জেবা জানে চিন্তামণি,

তা'র হয় ব্রজভূমে বাস ।।

(৪)

গৌরপ্রেম - রসার্ণ্ণবে, সে তরঙ্গে জেবা ডুবে,

সে রাধামাধব - অন্তরঙ্গ ।

গৃহে বা বনেতে থাকে, 'হা গৌরাঙ্গ' বলে ডাকে,

নরোত্তম মাগে তা'র সঙ্গ ।।