💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐

💞🌷🦚শরণাগতি🦚🌷💞

💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’গুরু - বৈষ্ণব  - ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় সর্ববিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ  I I’’

 

‘’বন্দে নন্দ ব্রজস্ত্রীণাং পাদরেণুমভীক্ষশঃ।

যাসাং হরিকথোদগীতং পুনাতি ভুবনত্রয়ম।।‘’

ত্রিজগৎ পবিত্র করে যাঁহাদের কণ্ঠোদ্গীর্ণ হরিকথাগীতি, আমার মাথার ভূষণ করি তাঁহাদের পাদরেণু। শিরে তুলিয়া এদের পদধূলি সার্থক করি আমি আমার জ্ঞানশুষ্ক এই জীবন।

হরে কৃষ্ণ, আজ বিশেষ শুভদা তিথি শ্রী হরিবাসর তিথি।

‘’মাধব-তিথি ভক্তি জননী

যতনে পালন করি ।

কৃষ্ণবসতি,   বসতি বলি'

পরম আদরে বরি ।।‘’

মাধব-তিথি পবিত্র দিবস যা হরির সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কিত, মাধব তিথি যেমন: একাদশী, জন্মাষ্টমী, বামনদ্বাদশী ইত্যাদি, ভক্তি জননী অর্থাৎ ভক্তি মাতা; যতনে অর্থাৎ যত্ন সহকারে; পালন; করি – আমি করি;  কৃষ্ণবসতি, বসতি বলি' অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের নিশ্চিত উপস্থিতির দিন হিসাবে গ্রহণ করা; পরম – দুর্দান্ত; আদরে বরি অর্থাৎ সঙ্গে উপাসনা করি - আমি চয়ন করি, গ্রহণ করি।

অর্থাৎ,- আমি মাধব সম্পর্কিত পবিত্র দিনগুলি যত্ন সহকারে পালন করি; মাধব তিথিগুলি ভক্তি মা। দুর্দান্ত শ্রদ্ধার সাথে, আমি কৃষ্ণের বাসস্থান এই মাধব তিথিগুলি আমার নিজের হিসাবে গ্রহণ করি।

🏵️শ্রীমন্মহাপ্রভুর উপদেশাবলী🏵️

এক দিন মাতার পদে করিয়া প্রণাম ।

প্রভু কহে,- মাতা, মোরে দেহ’ এক দান ।।

মাতা বলে,- তাই দিব, যা তুমি মাগিবে ।

প্রভু কহে,- একাদশীতে অন্ন না খাইবে ।।

শচী কহে,- না খাইব, ভালই কহিলা ।

সেই হৈতে একাদশী করিতে লাগিলা ।।   (চৈঃ চঃ - আদিলীলা, ১৫।৮–১০)

 

প্রভু বৈষ্ণবগণকে বলেন,-

শ্রীহরিবাসর-দিনে, কৃষ্ণনামরসপানে,

তৃপ্ত হয় বৈষ্ণব সুজন ।

অন্য রস নাহি লয়,  অন্য কথা নাহি কয়,

সর্ব্বভোগ করয়ে বর্জ্জন ।।

শ্রীনামভজন আর একাদশী ব্রত ।

এক-তত্ত্ব নিত্য জানি’ হও তাহে রত ।।   (শ্রীপ্রেমবিবর্ত্ত: ১৮।১০,২১)

প্রভু শ্রীসনাতন গোস্বামী প্রভুকে বলেন,-

একাদশী, জন্মাষ্টমী, বামনদ্বাদশী ।

শ্রীরামনবমী, আর নৃসিংহচতুর্দ্দশী ।।

এই সবে বিদ্ধা-ত্যাগ, অবিদ্ধা-করণ ।

অকরণে দোষ, কৈলে ভক্তির লভন ।।

শরণাগতির ষষ্ঠ অঙ্গ - কাৰ্পণ্য বা দৈন্য । “আমি চিন্ময় জীব নিজ কৰ্ম্ম-দোষে সংসারে নানা ক্লেশ ভোগ করছি ; আমি দণ্ডের উপযুক্ত পাত্ৰ, কৃপাময় কৃষ্ণের নিত্যদাস হয়ে তাঁর চরণে আশ্রয়ের বিস্মৃতি - বশতঃই আমার কৰ্ম্মচক্ৰে প্ৰবেশ ও এত ক্লেশ ; আমার মত হতভাগ্য আর কে আছে ? আমি সবার থেকে হীন, দীন ও অকিঞ্চন ।'' এইভাবে ষড়ঙ্গ শরণাগতির দ্বারা যাঁর চিত্ত নিৰ্ম্মল ও চরিত্র পবিত্র হয়, তিনি শুদ্ধভক্তির একমাত্র অধিকারী ! ঠাকুর ভক্তিবিনোদ তাঁর শরণাগতি’ গীতিতে শ্ৰীরূপসনাতনের কাছে শরণাগতির প্রার্থনা করে শরণাগতির অধিকারীর কিরকম দৈন্য ও নিৰ্বেদ উপস্থিত হবে, তা “সংসারে আসিয়া” প্রভৃতি গীতিতে কীৰ্ত্তন করেছেন। শরণাগতির পঞ্চম গীতিতে অননুকরণীয় ভাষায় সাংসারিক জীবের অবস্থা বর্ণনা করেছেন,-

 

আমার জীবন, সদা পাপে রত,

নাহিক পুণ্যের লেশ ।

পরেরে উদ্বেগ, দিয়াছি যে কত,

দিয়াছি জীবেরে ক্লেশ ।।

 

নিজ সুখ লাগি', পাপে নাহি ডরি,

দয়াহীন স্বার্থপর ।

পর - সুখে দুঃখী, সদা মিথ্যাভাষী,

পরদুঃখ সুখকর ।।

 

অশেষ কামনা, হৃদি মাঝে মোর,

ক্ৰোধী দম্ভপরায়ণ ।

মদমত্ত সদা, বিষয়ে মোহিত,

হিংসা - গৰ্ব্ব - বিভূষণ ।।

 

নিদ্রালস্য - হত, সুকাৰ্য্যে বিরত,

অকাৰ্য্যে উদ্যোগী আমি।

প্ৰতিষ্ঠা লাগিয়া, শাঠ্য আচরণ,

লোভহত সদা কামী ।।

শরণাগতির প্রথম লক্ষণ-আত্মগ্লানি বা কার্পণ্য। আত্মগ্লানি উপস্থিত হলে শ্রবণগুরু ও দীক্ষাগুরুর অনুসন্ধান হয়। এই জগতে পতিত অথচ নির্বেদগ্ৰস্ত জীবের জন্য কৃষ্ণ নিত্যশ্রবণগুরু ও মহান্তগুরু প্রেরণ করে থাকেন। কিরূপ চিত্তবৃত্তিতে গুরুপাদপদ্মের সন্ধান হয়, তা ঠাকুর ভক্তিবিনোদ শরণাগতির একটি গীতিতে কীর্ত্তন করেছেন,-

(প্রভু হে!)

এমন দুর্মতি, সংসার ভিতরে, পড়িয়া আছিনু আমি ।

তব নিজ-জন, কোন মহাজনে, পাঠাইয়া দিলে তুমি ।।

দয়া করি’ মোরে, পতিত দেখিয়া, কহিল আমারে গিয়া ।

ওহে দীনজন, শুন ভাল কথা, উল্লসিত হ’বে হিয়া ।।

তোমারে তারিতে, শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, নবদ্বীপে অবতার ।

তোমা' হেন কত, দীন হীন জনে, করিলেন ভবপার ।।

বেদের প্রতিজ্ঞা, রাখিবার তরে, রুক্মবর্ণ বিপ্রসুত ।

মহাপ্রভু নামে, নদীয়া মাতায়, সঙ্গে ভাই অবধূত ।।

নন্দসুত যিনি, চৈতন্য - গোসাই, নিজ-নাম করি’ দান ।

তারিল জগত্‍, তুমিও যাইয়া, লহ নিজ পরিত্রাণ ।।

সে - কথা শুনিয়া, আসিয়াছি, নাথ! তোমার চরণতলে ।

ভকতিবিনোদ, কাঁদিয়া কাঁদিয়া, আপন-কাহিনী বলে ।।

💐শ্রীহরি বাসরে হরি কীর্ত্তন 💐

শ্রীহরি - বাসরে হরি - কীর্ত্তন বিধান I

নৃত্য আরম্ভিলা প্রভু জগতের প্রাণ I I

পুন্যবন্ত শ্রীবাস - অঙ্গনে শুভারম্ভ I

উঠিল কীর্ত্তন ধ্বনি গোপাল গোবিন্দ I I

মৃদঙ্গ মন্দিরা বাজে শঙ্খ করতাল I

সংকীর্ত্তন সঙ্গে সব হইল মিশাল I I

ব্রহ্মাণ্ড ভেদিল ধ্বনি পুরিয়া আকাশ I

চৌদিকের অমঙ্গল যায় সব নাশ I I

চতুর্দ্দিগে শ্রীহরি - মঙ্গল - সংকীর্ত্তন I

মাঝে নাচে জগন্নাথ মিশ্রের নন্দন I I

সবার অঙ্গেতে শোভে শ্রীচন্দন মালা I

আনন্দে গায়েন কৃষ্ণরসে হই' ভোলা I I

নিজানন্দে নাচে মহাপ্রভু বিশ্বম্বর I

চরণের তাল শুনি অতি মনোহর I I

ভাব - ভরে মালা নাহি রহয়ে গলায় I

ছিন্ডিয়া পড়য়ে গিয়া ভক্তের গায় I I

যাঁর নামানন্দে শিব, বসন না জানে I

যাঁর যশে নাচে শিব, সে নাচে আপনে I I

যাঁর নামে বাল্মীকি হইলা তপোধন I

যাঁর নামে অজামিল পাইল মোচন I I

যাঁর নাম শ্রবনে সংসার - বন্ধ ঘুচে I

হেন প্রভু অবতরি’  কলিযুগে নাচে I I

যাঁর নাম গাই শুক - নারদ বেড়ায় I

সহস্র - বদন - প্রভু যা’র গুন গায় I I

সর্ব - মহা - প্রায়শ্চিত যে প্রভুর নাম I

সে প্রভু নাচয়ে, দেখে যত ভাগ্যবান I I

শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য - নিত্যানন্দচাঁদ জান I

বৃন্দাবন দাস প্রভু পদযুগে গান I I