🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚

🌳🪴পুরুষ সুক্ত🪴🌳

🦚💐🏵️🌷🏵️💐🦚

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I 

‘’গুরু - বৈষ্ণব  - ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে হয় বিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ  I I’’

 

আজানুলম্বিত – ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎ প্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

 

সহস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ।

স ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বা অত্যতিষ্ঠ দশাঙ্গুলম্ ।।১।।

অর্থাৎ,- সেই সর্ব ব্যাপক পরমেশ্বরের সহস্র শির, সহস্র নেত্র, সহস্র পা। তিনি জগৎকে সর্ব দিক হতে ব্যপ্ত করিয়া পাঁচ স্থুল ভূত ও পাঁচ সুক্ষভুত জগতকে অতিক্রম করিয়া অবস্থান করিতেছে।।১।।

 

পুরুষ এবেদং সর্ব্বং যদ ভূতং যচ্চ ভাব্যম ।

উতামৃত্ত্বস্যেশানো যদন্নেনাতিরোহতি ।।২।।

অর্থাৎ,- যাহা উৎপন্ন হয়েছে যাহা উৎপন্ন হবে এই সবকিছুই পুরুষই [পুরুষাধিষ্ঠিত]। এবং অমৃতস্বরূপ মোক্ষের স্বামী যাহা অন্ন দ্বারা বৃদ্ধি পায় [তাহারও স্বামী]।।২।।

 

এতাবানস্য মহিমাতো জ্যায়াংশ্চ পুরুষঃ ।

পাদোস্য বিশ্বা ভূতানি ত্রিপাদস্যামৃতং দিবি ।।৩।।

অর্থাৎ,- এই জগতের মহান সামর্থ এতই যে, এবং এই পরমেশ্বর তাহা থেকেও অধিক বড় সমস্ত উৎপন্ন পদার্থ ইহার এক পাদ [একাংশে স্থিত] ইহার তিন পাদ জ্ঞান প্রকাশস্বরূপ অবিনাশী।। ৩।।

 

ত্রিপাদূর্ধ্বং উদৈৎ পুরুষঃ পাদোস্যেহাভবৎ পুনঃ ।

ততো বিষ্বঙ্ ব্যক্রামৎ সাশনানশনে অভি ।।৪।।

অর্থাৎ,- তিন পাদ বিশিষ্ট অবিনাশী এই পুরুষ সবার উপরে বিরাজমান ইহার এক পাদরূপ জগত পুনরায় এখানে প্রকট হয়েছে এই প্রভূ সর্বত্র ব্যাপক তিনি ভোজনশীল ও ভোজনরহিত অর্থাৎ চেতন ও অচেতন কে অভিব্যপ্ত করে।

 

ততো বিরাডজায়ত বিরাজো অধি পূরুষঃ ।

স জাতো অত্যরিচ্যত পশ্চাদ্ ভুমিমথো পুরঃ ।। ৫।।

অর্থাৎ,- সেই পরমেশ্বর হতে প্রকাশময় সমষ্টিরূপ ব্রহ্মান্ড উৎপন্ন হয় বিরাটের উপর অধ্যক্ষরূপে পুরুষই এই পুরুষ উৎপন্ন হয়ে অতিরিক্ত [পৃথক] হয়ে বিরাটের পশ্চাত ভূমি ইহার অনন্তর অনেক শরীর উৎপন্ন করে।

 

যৎ পুরুষেণ হবিষা দেবা যজ্ঞমতন্বত ।

বসন্তোস্যাসীদাজ্যং গ্রীষ্মইধ্বমঃ শরদ্ধবিঃ ।।৬।।

অর্থাৎ,- যখন বিদ্বান লোক পরমেশ্বর দ্বারা প্রদত্ত জগৎরচনারূপ সামগ্রী দ্বারা সৃষ্টি রচনারূপ যজ্ঞকে বিস্তারিত করে তখন ইহার বসন্ত ঋতু ঘৃত হয় গ্রীষ্ম ঋতু সমিধা এবং শরৎ ঋতু হবি হয়।

 

তং যজ্ঞং বর্হিষি প্রৌক্ষন পুরুষং জাতমগ্রতঃ ।

তেন দেবা অযজন্ত সাধ্যা ঋষয়শ্চ যে ।।৭।।

অর্থাৎ,- সেই যজ্ঞরূপ পূজনীয় প্রকাশিত পূর্ণ পরমেশ্বরকে সবার পূর্বে হৃদয়ন্তরিক্ষের মধ্যে অভিষিক্ত করে। সেই পুরুষ দ্বারা [প্রেরিত] বিদ্বান লোক সাধনকারী এবং যে ঋষিগন তাহারা সেই পরমেশ্বরকে উপাসনা করে।

 

তস্মাদ্যযজ্ঞাৎ সর্বহুতঃ সংভৃতং পৃষদাজ্যম ।

পশুঁস্তাঁশ্চক্রে বায়ব্যানারণ্যা গ্রামশ্চ যে ।।৮।।

অর্থাৎ,- সেই সর্বপূজ্য পরমেশ্বর হতে দধি, ঘৃত আদি ভোগ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়েছে বায়ু দ্বারা জীবিত পশু এবং যে জঙ্গলের সিংহ আদি এবং গ্রামের গো, অশ্ব আদি উৎপন্ন হয়েছে।

 

তস্মাদ্যজ্ঞাৎ সর্বহুতঃ ঋচ সামানি জজ্ঞিরে ।

ছন্দাংসি জজ্ঞিরে তস্মাদ্যজুস্তস্মাদজায়থ ।।৯।।

অর্থাৎ,- সেই পূজনীয় পরমেশ্বর হতে সর্ব পূজিত ঋগবেদ সামবেদ উৎপন্ন হয়েছে। অথর্ববেদ উৎপন্ন হয়েছে তাহা হইতে যজুর্বেদ উৎপন্ন হয়েছে।

 

তস্মাদশ্বা অজায়ন্ত যে কে চোভয়াদতঃ।

গাবো হ জজ্ঞিরে তস্মাৎ তস্মাজ্জাতা অজাবয়ঃ।।১০।।

অর্থাৎ,-সেই পরমেশ্বর হতে ঘোড়া এবং যে কোন গাধা আদি দুই চোয়ালে দন্ত বিশিষ্ট জীব উৎপন্ন হয়েছে গাভী তাহা হইতেই উৎপন্ন হয়েছে সেই পুরুষ হতে ছাগল ভেড়া আদি উৎপন্ন হয়েছে।

 

যৎ পুরুষং ব্যদধুঃ কতিধা ব্যকল্পয়ন্ ।

মুখং কিমস্য কৌ বাহু কা উরু পাদা উচ্যেতে ।।১১।।

অর্থাৎ,- যখন সেই পুরুষকে [ঋষিগন] বিশেষরূপে বর্ণনা করেন তখন কি প্রকারে বিশেষরূপে কল্পনা করেন? এই পুরুষের মুখ কোন টি? বাহু কোনটি? উরু কোনটি? এবং পা কোনটি বলিয়া উক্ত হয়?।। ১১।।

 

ব্রাহ্মণোস্য মুখমাসীদ্ বাহূ রাজন্যঃ কৃতঃ ।

ঊরু তদস্য যদ্বৈশ্যঃ পদ্ভাংশূদ্রো অজায়ত ।।১২।।

অর্থাৎ,- ব্রাহ্মণ [জ্ঞানী পুরুষ] এই পুরুষের মুখ হয়, ক্ষত্রিয় [পরাক্রমীব্যক্তি] এই পুরুষের বাহু। যাহা এই পুরুষের উরু তাহা বৈশ্য [পোষনশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তি] এবং পা শূদ্ররূপে [সেবাধর্মী ব্যক্তিরূপে] প্রকট হয়।।১২।।

 

চন্দ্রমা মনসো জাতশ্চক্ষোঃ সূর্য্যো অজায়ত ।

মুখাদিন্দ্রশ্চাগ্নিশ্চ প্রাণাদ্বায়ুরজায়ত ।। ১৩।।

অর্থাৎ,- চন্দ্র মন থেকে [মননকারী সামর্থ দ্বারা] উৎপন্ন হয়েছে, নেত্র থেকে [রূপ দর্শনকারী সামর্থ দ্বারা] সূর্য উৎপন্ন হয়েছে। মুখ থেকে [মুখ্য স্বরূপ সামর্থ দ্বারা] ইন্দ্র ও অগ্নি ও প্রাণ থেকে [বায়ুরূপ সামর্থ দ্বারা] বায়ু উৎপন্ন হয়েছে।

 

নাভ্যা আসীদন্তরিক্ষংশীর্ষ্ণো দৌঃ সমবর্ত্তত ।

পদ্ভাং ভূমির্দিশঃ শোত্রাৎ তথা লোকাঁঅকল্পয়ন ।।১৪।।

অর্থাৎ,- নাভি থেকে [সুক্ষ সামর্থ দ্বারা] অন্তরিক্ষ হয়, শির থেকে [সর্বোত্তম সামর্থ দ্বারা] দুল্যোক (সমবর্ত্তত) হয়। পা থেকে [পরমানু কারনরূপ সামর্থ দ্বারা] পৃথিবী, শোত্র থেকে [অবকাশরূপ সামর্থ দ্বারা] দিশা এবং এই প্রকার অন্য লোক কল্পিত হয়।

সপ্তাস্যান্ পরিধিয়স্ত্রিঃ সপ্ত সমিধঃ কৃতাঃ ।

দেবা যদ্যজ্ঞং তন্বানাঅবধ্নন পুরুষং পশুম্ ।।১৫।।

অর্থাৎ,- বিদ্বান জন যেই যজ্ঞকে বিস্তারিত করে পূর্ণ পরমেশ্বরকে সর্বদ্রষ্টারূপে ধ্যান সূত্র দ্বারা বাধে। এই যজ্ঞের সাত পরিধি [সমুদ্র, ত্রসরেণু, মেঘমন্ডল,বৃষ্টিজল, বায়ু, ধনন্জয় এবং সুত্রাত্মা] এবং একুশ সমিধা হয় [ মন সহিত একাদশ ইন্দ্রিয়, পঞ্চ তন্মাত্রা এবং পঞ্চভূত]

যজ্ঞেন যজ্ঞমযজন্ত দেবাস্তানি ধর্ম্মাণি প্রথমান্যাসন্ ।

তে হ নাকং মহিমানঃ সচন্ত যত্র পূর্বে সাধ্যাঃ সন্তি দেবাঃ ।।১৬।।

অর্থাৎ,- যজ্ঞ দ্বারা বিদ্বান জন সেই পুরুষ কে উপাসনা করে ঐ সব ধর্মের সামর্থ প্রথমেই বিদ্যমান থাকে। ঐ মহান সামর্থবান সেই আনন্দময় পরমেশ্বরকে প্রাপ্ত হয় যাহার মধ্যে পূর্বে,জ্ঞান দ্বারা পূর্ণ সাধনাশীল বিদ্বান জন নিত্য বিরাজ করে।

 

।। ইতি ১০ মন্ডলে ৯০ সুক্ত।।