💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

🦚শ্রীরাধা স্তোত্রম্🦚

💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

শ্রীশ্রীগুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌরভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্তকোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন ।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

 

আজানুলম্বিত – ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎ প্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

 

গৃহে  রাধা বনে রাধা, রাধা পৃষ্ঠে পুরঃস্থিতা ।

যত্র যত্র স্থিতা রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

জিহ্বা রাধা শ্রুতৌ রাধা, রাধা নেত্রে হৃদিস্থিতা।

সর্বাঙ্গ-ব্যাপিনী রাধা, রাধাইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

পূজা রাধা জপো রাধা, রাধিকা চ অভিবন্দনে।

স্মৃতৌ রাধা শিরো রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

গানে রাধা গুণে রাধা, রাধিকা ভোজনে গতৌ।

রাত্রৌ রাধা দিবা রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

মাধুর্য্যে মধুরা রাধা, মহত্ত্বে রাধিকা গুরুঃ ।

সৌন্দর্য্যে সুন্দরী রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

রাধা রস-সুধা-সিন্ধু, রাধা সৌভাগ্য-মঞ্জরী।

রাধা ব্রজাঙ্গনা-মুখ্যা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

রাধা পদ্মাননা, পদ্মা পদ্মোদ্ভবা- সুপূজিতা ‌।

পদ্মে বিবেচিতা রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

রাধা কৃষ্ণাত্মিকা, নিত্যম কৃষ্ণো রাধাত্মকো ধ্রুবম।

বৃন্দাবনেশ্বরী রাধা, রাধা ইব আরাধ্যতে ময়া ।।

🌷

জিহ্বাগ্রে রাধিকা-নাম, নেত্রাগ্রে রাধিকা তনুঃ।

কর্ণে চ রাধিকা-কীর্তির, মানসে রাধিকা সদা।।

🌷

কৃষ্ণেন পঠিতম স্তোত্রম, রাধিকা-প্রীতয়ে পরম।

যঃ পঠেৎ প্রয়তো নিত্যম, রাধা-কৃষ্ণান্তিগো ভবেৎ ।।

🌷

আরাধিতা- মনঃ কৃষ্ণো, রাধা-আরাধিতা মানসঃ।

কৃষ্ণাকৃষ্ট-মনা রাধা, রাধা-কৃষ্ণেতি যঃ পঠেৎ ।।

 

।। রাধা স্তোত্রম্ ।।

মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস রচিত "রাধা স্তোত্রম্" গীতটি "ব্রহ্মাণ্ড পুরাণের" অন্তর্গত। এই সুন্দর স্তোত্রটিতে শ্রীমতী রাধারাণীকে গৌরবমণ্ডিত করা হয়েছে। এই প্রার্থনাটি পাঠ করার মাধ্যমে শ্রীরাধাকৃষ্ণের চরণারবিন্দে প্রেমানুরাগ জন্মে ।

🌷

কি গৃহে, কি অরণ্যে, অগ্রে অথবা পশ্চাতে — সর্ব্বত্রই শ্রীরাধা বিরাজমানা। সমস্ত স্থানেই তিনি প্রকাশিতা , সেই সর্ব্বব্যাপিনী রাধারাণীকে আমি বন্দনা করি।

🌷

আমার জিহ্বায়, কর্ণে, চক্ষু বা হৃদয়ের অন্তঃস্থলে তাঁর অধিষ্ঠান। সকলের মধ্যেই অধিষ্ঠিতা সেই রাধারাণীকে আমি পূজা করি।

🌷

শ্রীরাধা আমার পুজায়, শ্রীরাধা আমার মন্ত্র-জপে, আমার প্রার্থনায় এবং আমার স্মৃতিতে। আমার মাথার মণি সেই রাধা আমার আরাধ্যা দেবী ।

🌷

যখনই গান গাই, আমি শ্রীরাধার গুণাবলী কীর্ত্তন করি, রাধারাণীর প্রসাদ আমি সেবা করি, আমি যখন যেখানেই যাই, রাধার কথাই স্মরণ করি, দিবারাত্র আমি তাঁরই ধ্যান করি।

🌷

শ্রীরাধা সমস্ত মাধুর্য্যের মধ্যে মধুরতমা, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে অগ্রগণ্যা এবং রাধাই হলেন সর্ব্বশ্রেষ্ঠা সৌন্দর্য — আমি সেই শ্রীরাধার উপাসনা করি।

🌷

অমৃত-রস-সিন্ধু রাধা হলেন সমস্ত সৌভাগ্যের কুসুম- কলি, তিনিই সর্ব্বশ্রেষ্ঠা ব্রজাঙ্গনা — আমি সেই রাধারাণীকে আরাধনা করি।

🌷

শ্রীরাধার মুখ নিষ্কলঙ্ক পদ্ম ফুলের মতো হওয়ায় তিনি পদ্মা নামে পরিচিত। বিষ্ণুর নাভিপদ্ম থেকে উদ্ভূত ব্রহ্মার দ্বারা তিনি পূজিতা হন এবং পদ্মের উপরেই তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল । তাঁর পিতা যখন তাঁকে প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন, তখন তিনি পদ্মের উপরেই শায়িতা ছিলেন - আমি সেই রাধারাণীকে উপাসনা করি।

🌷

শ্রীরাধা অনন্তকাল শ্রীকৃষ্ণে নিমগ্না , শ্রীকৃষ্ণ অবশ্যই সর্বদা শ্রীরাধায় নিমগ্ন । বৃন্দাবনেশ্বরী সেই রাধারাণীকে আমি বন্দনা করি।

🌷

আমার জিহ্বাগ্রে রাধার নাম, আমার নেত্রাগ্রে প্রকাশিত শ্রীরাধার সুন্দর রূপ, সর্বদা রাধার গুণগান আমার কর্ণে ধ্বনিত হয় এবং শ্রীরাধা সর্বদা আমার মনে অবস্থান করেন।

🌷

যে ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা রচিত এই প্রার্থনা নিয়মিত তাৎপর্য সহকারে পাঠ করেন, তিনি শ্রী রাধা-কৃষ্ণের চরণে প্রেমময় সেবার যোগ্যতা লাভ করবেন।

🌷

শ্রীমতী রাধা তাঁর হৃদয় ও মনে শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করেন এবং কৃষ্ণ তাঁর হৃদয় ও মনে শ্রীমতি রাধিকার উপাসনা করেন; শ্রীকৃষ্ণ রাধিকার হৃদয় ও মনকে আকর্ষণ করেন এবং রাধিকা কৃষ্ণের হৃদয় ও মনকে আকর্ষণ করেন । যিনি এই প্রার্থনাটি পাঠ করেন, তিনি শ্রীরাধাকৃষ্ণ - যুগলের চরণারবিন্দে অনুরক্ত হন। 

 

শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু বললেন,-

"এক কৃষ্ণনামে যত পাপ হরে,

পাপীর সাধ্য নাই তত পাপ করে।"

 

আবার বললেন,-

''কোটিজন্ম করে যদি নাম সংকীর্ত্তন ।

তথাপি নাহি পায় সে ব্রজেন্দ্রনন্দন ।।''

 

দুইরকম কথা কেন?

উত্তরে বলাহচ্ছেঃ,- পাপাচার ও অপরাধযুক্ত নাম কোটি জন্মধরে করলেও শুদ্ধ হওয়া যায় না" বা শুদ্ধভক্তি আসেনা" আবার অপরাধশূন্য হয়ে শুদ্ধহৃদয়ে একবার কৃষ্ণনামেই পূর্ববর্তী সমস্ত পাপ কলুষথেকে উদ্ধার পাওয়া যায় এবং তার ফলে আমরা শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম, লাভকরতে সক্ষম হই।

 

‘’কলের্দোষনিধেরাজন্ অস্তি হ্যেকো মহানগুণঃ I

কীর্ত্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তসঙ্গঃ পরং ব্রজেৎ I I‘’   (শ্রীমদ্ভাগবত)

কলি সমস্ত দোষের বটে, তথাপি হে রাজন ! কলির একটি মহানগুণ এই যে, কৃষ্ণকীর্ত্তনে জীব মায়াবদ্ধ হইতে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণরূপ পরতত্ত্ব লাভ করেন।

‘’নাম - সংকীর্ত্তন যস্য সর্বপাপ প্রণাশনম্।

প্রণামো দুঃখশমনস্তং নমামি শ্রীহরিং পরম্।।‘’

যে হরিনাম সংকীর্ত্তন করিলে ইহকাল ও পরকালের পাপরাশি নিঃশেষে দগ্ধ হয়,আমি সেই নামরূপী পরমাত্মা স্বরূপ শ্রীহরিকে প্রণাম করি।

 

‘’হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে !

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে !!’’

💐💐জয় শ্রীরাধাকৃষ্ণের জয়💐💐জয় সকল ভক্তবৃন্দের জয়💐💐