🦚💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🦚

🌷🌻বিজয়া একাদশী🌻🌷

🦚💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🦚

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’গুরু - বৈষ্ণব ভগবান তিনিহেঁ স্মরণ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

হরে কৃষ্ণ, আজ ০৯/০৩/২০২১ ইং রোজ - মঙ্গলবার বিজয়া একাদশী I

(পারণ - পরদিন পূর্ব্বাহ্ন ০৯।৫০ মিঃ মধ্যে একাদশীর পারণ)

আপনি নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন ও অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন।

হরিবাসর তিথি কি ? কেন পালন করা উচিত ?

ভক্তি হচ্ছে ভগবানকে জানার ও ভগবৎ প্রীতি সাধনের একমাত্র সহজ উপায়। শাস্ত্রে যে চৌষট্টি প্রকার ভক্ত্যাঙ্গের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে একাদশী ব্রত সর্বত্তোম। শ্রবণ, কীর্ত্তন, স্মরণ আদি নবধা ভক্তির পরই দশম ভক্ত্যাঙ্গরূপে একাদশীর স্থান। এই তিথিকে হরিবাসর বলা হয়। তাই ভক্তি লাভেচ্ছু সকলেরই একাদশী ব্রত পালনের পরম উপযোগিতার কথা বিভিন্ন পুরাণে বর্ণিত হয়েছে। একাদশী তিথি সকলের অভীষ্ট প্রদানকারী। এই ব্রত পালনে সমস্ত প্রকার পাপ বিনষ্ট, সর্বসৌভাগ্য ও শ্রীকৃষ্ণের প্রীতি বিধান হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আট থেকে আশি বছর বয়স পর্যন্ত যে কোন ব্যক্তিরই ভক্তিসহকারে পবিত্র একাদশী ব্রত পালন করা কর্তব্য।

সঙ্কটজনক অবস্থা বা জন্মমৃত্যুর অশৌচে কখনও একাদশী ব্রত পরিত্যাগ করতে নেই। একাদশীতে শ্রাদ্ধ উপস্থিত হলে সেইদিন না করে দ্বাদশীতে শ্রাদ্ধ করা উচিত। শুধু বৈষ্ণবেরাই নয়, শিবের উপাসক, সূর্য-চন্দ্র-ইন্দ্রাদি যেকোন দেবোপাসক, সকলেরই কর্তব্য একাদশী ব্রত পালন করা। দুর্লভ মানবজীবন লাভ করেও এই ব্রত অনুষ্ঠান না করলে বহু দুঃখে - কষ্টে চুরাশি লক্ষ যোনি ভ্রমণ করতে হয়। অহংকার বশত একাদশী ব্রত ত্যাগ করলে অশেষ যমযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। যে ব্যাক্তি এই ব্রতকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, জীবিত হয়েও সে মৃতের সমান।

শ্রীমন্মহাপ্রভুর উপদেশাবলী

এক দিন মাতার পদে করিয়া প্রণাম।

প্রভু কহে, মাতা, মোরে দেহ এক দান॥

মাতা বলে, তাই দিব, যা তুমি মাগিবে।

প্রভু কহে, একাদশীতে অন্ন না খাইবে॥

শচী কহে, না খাইব, ভালই কহিলা।

সেই হৈতে একাদশী করিতে লাগিলা॥

প্রভু বৈষ্ণবগণকে বললেন…

শ্রীহরিবাসর দিনে কৃষ্ণনাম রসপানে

তৃপ্ত হয় বৈষ্ণব সুজন।

অন্য রস নাহি লয় অন্য কথা নাহি কয়

সর্ব্বভোগ করয়ে বর্জ্জন॥

শ্রীনামভজন আর একাদশী ব্রত ।

একতত্ত্ব নিত্য জানি হও তাহে রত ॥  (শ্রীশ্রীপ্রেমবিবর্ত্ত: ১৮।১০,২১)

প্রভু শ্রীসনাতন গোস্বামী প্রভুকে বললেন…

একাদশী, জন্মাষ্টমী, বামনদ্বাদশী ।

শ্রীরামনবমী, আর নৃসিংহচতুর্দ্দশী॥

এই সবে বিদ্ধা-ত্যাগ, অবিদ্ধা-করণ।

অকরণে দোষ, কৈলে ভক্তির লভন॥

তত্ত্বতঃ ভাবে একাদশীতে কিছুই খাওয়া যায়না। একাদশী মানে একাদশ ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রিত করা, তাই একাদশী তিথিতে যদি সারাদিন এটা-ওটা খেয়েই চললাম তাহলেতা একাদশী হল কিকরে?এই বুঝি ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ?

হ্যাঁ একাদশীতে অনুকল্প প্রসাদনে য়ার একটি বিধান আছে, কিন্তু এটি কার জন্যে?

অনুকল্প প্রসাদ কেবল তিনিই নিতে পারেন যিনি রোগাগ্রস্থ, অথবা অবোধশিশু, বা যিনি বৃদ্ধ হয়ে পরেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমি কি এতোই বৃদ্ধ হয়েগেছি যে আমাকে তিনবেলা কিছুনা কিছু খেতেই হবে? না-কি আমি ৮/৯বৎসরেরবাচ্চা? নাকি ব্লাডপ্রেশারের রোগী?

যাইহোক কেউ যদি পুরপুরি একাদশী ব্রতের ফল পেতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই নির্জলা একাদশী করতে হবে আর যারা অনুকল্প প্রসাদ নিচ্ছেন, তাদের জানা উচিত যে, "অনু" শব্দেরঅর্থ, অল্প, ক্ষুদ্র, বাসীমিত, তাই আমাদের খেয়াল রাখা উচিত, অনুকল্প যেন বৃহৎ কল্পে পরিনত না হয়। সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসুন সবাই নিষ্ঠা সহকারে একাদশী ব্রত পালন করি।

শ্রীহরি বাসরে হরি কীর্ত্তন

শ্রীহরি - বাসরে হরি - কীর্ত্তন বিধান I

নৃত্য আরম্ভিলা প্রভু জগতের প্রাণ I I

পুন্যবন্ত শ্রীবাস - অঙ্গনে শুভারম্ভ I

উঠিল কীর্ত্তন ধ্বনি গোপাল গোবিন্দ I I

মৃদঙ্গ মন্দিরা বাজে শঙ্খ করতাল I

সংকীর্ত্তন সঙ্গে সব হইল মিশাল I I

ব্রহ্মাণ্ড ভেদিল ধ্বনি পুরিয়া আকাশ I

চৌদিকের অমঙ্গল যায় সব নাশ I I

চতুর্দ্দিগে শ্রীহরি - মঙ্গল - সংকীর্ত্তন I

মাঝে নাচে জগন্নাথ মিশ্রের নন্দন I I

সবার অঙ্গেতে শোভে শ্রীচন্দন মালা I

আনন্দে গায়েন কৃষ্ণরসে হই' ভোলা I I

নিজানন্দে নাচে মহাপ্রভু বিশ্বম্বর I

চরণের তাল শুনি অতি মনোহর I I

ভাব - ভরে মালা নাহি রহয়ে গলায় I

ছিন্ডিয়া পড়য়ে গিয়া ভক্তের গায় I I

যাঁর নামানন্দে শিব, বসন না জানে I

যাঁর যশে নাচে শিব, সে নাচে আপনে I I

যাঁর নামে বাল্মীকি হইলা তপোধন I

যাঁর নামে অজামিল পাইল মোচন I I

যাঁর নাম শ্রবনে সংসার - বন্ধ ঘুচে I

হেন প্রভু অবতরি’ কলিযুগে নাচে I I

যাঁর নাম গাই শুক - নারদ বেড়ায় I

সহস্র - বদন - প্রভু যা’র গুন গায় I I

সর্ব - মহা - প্রায়শ্চিত যে প্রভুর নাম I

সে প্রভু নাচয়ে, দেখে যত ভাগ্যবান I I

শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য - নিত্যানন্দচাঁদ জান I

বৃন্দাবন দাস প্রভু পদযুগে গান I I