💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

🌷নাম সংকীর্ত্তন🌷

💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐

বিশেষপোষ্ট

শ্রীশ্রীগুরুগৌরাঙ্গজয়তঃ

সকলসাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌরভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

নমস্ত্রিকাল – সত্যায় জগন্নাথ সুতায় চ ।

স – ভৃত্যায় স –পুত্রায় স – কলত্রায় তেনমঃ ।।

 

"কোটি জন্ম করে যদি নাম সংকীর্ত্তন ।

তথাপি না পায় ব্রজে ব্রজেন্দ্রনন্দন ।।"

তা হলে প্রত্যেক দিন ১৬ মালা জপ করে কি লাভ হবে?

উত্তরঃ- অপরাধশূন্য হয়ে নামকীর্ত্তন করতে শাস্ত্রে নির্দেশ করা হয়েছে । নামপরাধযুক্ত ব্যক্তির শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্মে মতি হয় না । যদিও তারা কৃষ্ণনাম করে, অপরাধ থেকে সতর্ক হইতে হবে।

নামকীর্ত্তনকারীর উদ্দেশ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নির্দেশ দিয়েছেন,-

তৃণাদপি সুনিচেন তরোরপি সহিষ্ণুনা ।

অমানীনা মানদেন কীর্ত্তনীয়ঃ সদা হরিঃ।।

অর্থাৎ,- "তৃণ-লতার অপেক্ষাও নিজেকে তুচ্ছ মনে করে, তরুর চেয়েও সহিষ্ণু হয়ে, স্বয়ং অমানী হয়ে অপরকে মান দিয়ে সর্বক্ষণ হরিনাম কীর্ত্তন করা উচিত। তা হলে তিনি কৃষ্ণপ্রেম লাভ করার যোগ্য হবেন।"

শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামী উল্লেখ করেছেন,

অতঃ শ্রীকৃষ্ণনামাদি ন ভবেদ্গ্রাহ্যমিন্দ্রিয়ৈঃ।

সেবোন্মুখে হি জিহ্বাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ।।   ( ভক্তিরসামৃতসিন্ধু )

অর্থাৎ,- "শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত নাম কখনও প্রাকৃত ইন্দ্রিয় দ্বারা গ্রাহ্য নয়; জীব যখন কৃষ্ণসেবার প্রতি উন্মুখ হয়, তখনই অপ্রাকৃত জিহ্বাদি ইন্দ্রিয়ে কৃষ্ণনাম স্বয়ং স্ফূর্তি লাভ করে।"

কৃষ্ণনাম যদিও আমাদের মতো অভাগা জীবের অপরাধ বিচার করেন তবুও অত্যন্ত কৃপাময় মহাবদান্য অবতার শ্রীগৌরহরি এবং শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর পাদপদ্মের শরণ নিয়ে কৃষ্ণনাম কীর্ত্তন করলে অপরাধ মার্জিত হয় এবং নাম প্রবর্তক মহাপ্রভুর অশেষ কৃপা লাভ হয় । আমাদের মতো বদ্ধ ও চঞ্চল জীব দশ মিনিটও সুস্থির চিত্তে শ্রীকৃষ্ণের দিব্য নাম জপ করতে পারে না । তাই অতীব কৃপাপূর্বক মহাপ্রভুর প্রিয়জন, যাঁরা আমাদের গুরুরূপে সারা জগতে কৃষ্ণ নাম বিতরণ করছেন; তাঁরা ন্যূনতম পক্ষে ১৬ মালা সংখ্যায় জপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন । অতএব সন্দেহের কোনও কারণ নেই । শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গের আনুগত্যে চললে ভয়ের কোনও কারণ নেই ।

 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু আমাদের কাছে কি আশা করেন ?            

পরমকরুনাময় কলিযুগপাবনাবতারী শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু নির্দেশ দিয়েছেন-

যদি আমা প্রতি স্নেহ থাকে সবাকার ।

তবে কৃষ্ণ ব্যতিরিক্ত না গাইবে আর ।।

কি  শয়নে কি ভোজনে কিবা জাগরণে ।

অহর্নিশ        চিন্ত  কৃষ্ণ বলহ বদনে ।।

অর্থাৎ,- ''তোমরা যদি আমাকে ভালবাসো, তবে তোমরা সর্বদা কৃষ্ণনাম কর । শয়নকালে, ভোজনকালে, জাগ্রত অবস্থায় দিবারাত্র তোমরা কৃষ্ণ কথা চিন্তা কর আর কৃষ্ণকথা বল ।''

শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু ভক্তরূপে ভগবান । তিনি সর্বদা একাকী কৃষ্ণনাম জপ করতেন । লোকদের সঙ্গে কৃষ্ণনাম সংকীর্ত্তন করতেন । অন্তরঙ্গ ভক্তদের সঙ্গে কৃষ্ণকথা আলোচনা করতেন । সর্বদা কৃষ্ণ চিন্তায় মগ্ন থাকতেন । নীলাচল পুরীধামে মহাপ্রভু দর্শনে যে সমস্ত গৃহস্থ ভক্ত সমবেত হয়েছিল, তাঁরা মহাপ্রভুকে ছেড়ে গৃহে ফিরতেও ইচ্ছা করছিলেন না । মহাপ্রভু তাঁদের আর্শীবাদ করে বলেছিলেন,-

সবে   গৃহে   যাহ  গিয়া লহ কৃষ্ণনাম ।

সবার     হউক    কৃষ্ণ  চন্দ্র  ধনপ্রাণ ।।

ব্রহ্মা-শিব-শুকাদি যে রস বাঞ্চা করে ।

হেন  রস হউক তোমা সবার শরীরে ।।

ব্রহ্মা, শিব, শুকদেব গোস্বামী প্রমুখ মহান মহান দেবতা ঋষিগণ ও যে কৃষ্ণপ্রেমরস লাভের জন্য আকুল আগ্রহ করে থাকেন, সেই গোলোকের প্রেমরত্ন ছড়াতে মহাপ্রভু ধন্য কলিযুগে অবতীর্ণ হয়েছেন । কৃষ্ণনাম করতে করতে সেই প্রেমামৃত লাভ হয় ।

 

জয় জয় জগন্নাথ শচীর নন্দন ।

ত্রিভুবন করে যাঁ'র চরণ বন্দন ।।

নীলাচলে শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধর ।

নদীয়া নগরে দণ্ড-কমণ্ডলু কর ।।

কেহ বলে,- 'পুরবেতে রাবণ বধিলা' ।

গোলোকের বৈভব লীলা প্রকাশ করিলা ।।

শ্রীরাধার ভাবে এবে গোরা অবতার ।

'হরে কৃষ্ণ'- নাম গৌর করিলা প্রচার ।।

বাসুদেব ঘোষ বলে করি' জোড় হাত ।

যেই গৌর, সেই কৃষ্ণ, সেই জগন্নাথ ।।

শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র নামটিতে অসাধারণ আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে কারণ শ্রীকৃষ্ণের নাম স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের থেকে আলাদা নয় ঐকান্তিক ভালবাসা এবং নিষ্ঠার সাথে এই নামগুলি জপ করুন তবেই আপনি চিণ্ময় আনন্দ অনুভব করবেন।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে I

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে I I

হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন এবং সুখী হন I

🌷জয় শচীনন্দন শ্রীগৌরহরির জয়🌷🌷জয় শ্রীরাধাগোবিন্দের জয়🌷