🌷শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু🌷

🍁💞🌺🌸🌻🌸🌺💞🍁

বিশেষ পোষ্ট

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

‘’হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

নমস্ত্রিকাল - সত্যায় জগন্নাথ সুতায় চ।

স - ভৃত্যায়   স -পুত্রায়   স - কলত্রায় তে নমঃ।।

শ্রীল নরহরি চক্রবর্তী ঠাকুরের শ্রী শ্রী ভক্তিরত্নাকর থেকে জানা যায় যে নিত্যানন্দ প্রভু সালিগ্রাম নিবাসী পণ্ডিত শ্রী সূর্যদাসের দুই কন্যা বসুধা ও জাহ্নাবাকে বিবাহ করেন(বর্তমান কালনা) I নিত্যানন্দ প্রভুর তিরোধান সন্বন্ধে বৃন্দাবন দাস বা কৃষ্ণ দাস কবিরাজ কিছুই লেখেন নি। ভক্তি রত্নাকর জানিয়েছেন শ্রীনিবাস শ্রীনরহরি ঠাকুরের অনুমতি নিয়ে নীলাচলে যাত্রা করেন,পথি মধ্যে শ্রীমম্মহাপ্রভুর প্রকট লীলা-সঙ্গোপন সংবাদ পান এবং মূর্চ্ছিত হন। স্বপ্নে মহাপ্রভু তাঁকে সান্ত্বনা দিলে তিনি নীলাচলে সেখানে কিছুদিন মহাপ্রভুর লীলা কাহিনী এবং শ্রীল গদাধর পণ্ডিতের ভাগবত ব্যাখ্যা শ্রবণ করেন। প্রত্যাবর্ত্তনের পথে তিনি গৌড় থেকে আগত ভক্তদের মুখে শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু ও শ্রীঅদ্বৈত প্রভুর অপ্রকট হওয়ার সংবাদ পান।

নিত্যানন্দ প্রভুর বারো জন অনুরক্ত শিষ্য ছিলেন-
১)অভিরাম (খানাকুল, কৃষ্ণনগর, হুগলী)
২)সুন্দরানন্দ ঠাকুর (মহেশপুর)
৩)কমলাকর পিপলাই (মাহেশ)
৪)ধনঞ্জয় পণ্ডিত (শীতল গ্রাম)
৫)মহেশ পণ্ডিত (চাকদহ,কাঁঠালপুরী,নদীয়া)
৬)কানু ঠাকুর (বোদখানা)
৭)পুরুষোত্তম ঠাকুর (শুকসাগর)
৮)পরমেশ্বর ঠাকুর (বিষখালাগ্রাম,আটপুর)
৯)শ্রীধর (নবদ্বীপ)
১০)উদ্ধারণ দত্ত (উদ্ধারণপুর বর্ধমান)
১১)গৌরীদাস পণ্ডিত (অম্মিকা কালনা)
১২)নাগর পুরুষোত্তম (নাগরদেশ)

এঁরা বৈষ্ণব সমাজে দ্বাদশ গোপাল বলে পরিচিত।
শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর বিশেষ কতগুলি বৈশিষ্ট ছিল । তাঁর লোচন ছিল ঘূর্ণিত। লক্ষ্মণ ও বলরাম এর ঘূর্ণিত লোচন ছিল। তিনি পাগড়ি পরতেন,পাগড়ি মধ্যে পাথরের অনন্তদেবর মূর্তি থাকতো। তাঁর ঝোলায় পাথরের ত্রিপুরেশ্বরী দুর্গা ও সদাশিব শিবলিঙ্গ থাকতো। তাঁর এক কর্ণে কুণ্ডল ছিল। অজ্ঞানতা হেতু নিত্যানন্দ সম্পর্কে কারো কারো মনে ভ্রান্ত ধারনা থাকতে পারে। মহাপ্রভু তাঁকে নীলাচলে বার বার আসতে নিষেদ করেছিলেন। এতে কেউ কেউ মনে করেছেন নিত্যানন্দ বুঝি ধর্মভ্রষ্ট হয়েছিলেন এবং এ কারনে তাঁর প্রতি মহাপ্রভু বিমুখ হয়েছেন। এ ধারনা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।  

প্রকৃতপক্ষে মহাপ্রভু সমগ্র ভারতবর্ষে প্রেমময় নামধর্ম প্রচারের জন্য যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে নিত্যানন্দ প্রভুকে গৌড়ের দায়িত্ব অর্পন করা হয়। তিনি গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম ও দর্শনকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। মহাপ্রভু নিত্যানন্দের সংগঠন শক্তিতে আস্থাশীল ছিলেন। তিনি তাঁকে বলেছিলেন 'নয়নে হেরিবে যারে নাম প্রেম দিও তারে।'  মহাপ্রভু নিতাইকে বলেছিলেন,- 'তুমি ও আমি উভয়‌ই যদি মুনিধর্ম গ্রহণ করে গৃহত্যাগ করি তাহলে গৌড়ীয়দের রক্ষা করবে কে?' এ জন্যই নিত্যানন্দ গৃহি হয়েছিলেন। মহাপ্রভু সব ছল-চাতুরীর ঊর্ধ্বে যদি। নিত্যানন্দকে তাঁর অপছন্দ হতো,তাহলে তিনি সরাসরিই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতেন। মহাপ্রভু নির্মমভাবে আদর্শভ্রষ্ট তাঁর দাক্ষিণাত্য ভ্রমন-সঙ্গী কৃষ্ণদাস ও ছোট হরিদাসকে পরিত্যাগ করেছিলেন।

অন্তরে নিতাই, বাহিরে নিতাই,  নিতাই জগৎময়।
নাগর নিতাই, নাগরী নিতাই, নিতাই কথা সে কয়।।
সাধন নিতাই, ভজন নিতাই, নিতাই নয়ন তারা।
দশমিক ময় নিতাই সুন্দর,    নিতাই ভুবন ভরা।।
রাধার মাধুরী অনঙ্গমঞ্জরী,    নিতাই নিতু সে সেবে।
কোটি শশধর বদন সুন্দর,    সখা সখী বলদেবে।।
রাধার ভগিনী, শ্যাম সোহাগিনী,    সব সখীগন প্রাণ।
যাঁহার লাবনি মণ্ডপ সাজানি,     শ্রীমণিমন্দিরনাম।।
নিতাই সুন্দরে যোগপীঠে ধরে,    রত্ন সিংহাসন সে যে।
বসন নিতাই, ভূষণ নিতাই,    বিলসে সখীর মাঝে।।
কি করবো আর নিতাই সবার,    আঁখি মুখ সর্ব্ব অঙ্গ।
নিতাই নিতাই, নিতাই নিতাই,     নিতাই নূতন রঙ্গ।।

নিতাই নিতাই, নিতাই নিতাই,    প্রাণ ভরে বলনা
বলতে বলতে ঐ নামে,    যাবে সকল ভাবনা।।
এমন দয়াল গুণের ঠাকুর,    কোথাও তো আর পাবেনা।
পাপ তাপ লয়ে প্রেম দিয়ে,    পূরায় সকল বাসনা।।
নিতাই গৌর বলে দেখ প্রাণ,    তোমার মাতে কি না!
নামের গুণে স্বরূপ-স্মৃতী,    দেখ প্রাণে জাগে কি না!
দুঃখ গিয়ে সুখ এসে প্রাণ,    পূর্ণ করে কি না!
জানবে তখন প্রাণে প্রাণে,    নিতাই গৌর চাও কি না!
নিতাই বলিয়া দুবাহু তুলিয়া,    চলিব বরজপুরে।
দাস বৃন্দাবন করে নিবেদন,    নিতাই না ছেড়ো মোরে।।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে 
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

🏵️💐জয় নিতাই জয় গৌর🏵️💐জয় নিতাই জয় গৌর💐🏵️