Friday, June 19, 2020


বলয়গ্রাস সূর্য্যগ্রহণ
হরে কৃষ্ণ, আগামী ২১/০৬/২০২০ ইং রোজ - রবিবার বলয়গ্রাস  সূর্য্যগ্রহণ... 🌅

যৎকীর্ত্তনং যৎস্মরণং যদীক্ষণং
যদ্বন্দনং যচ্ছ্রবনং যদর্হণম্  
লোকস্য সদ্যো বিধুনোতি কল্মষং
তস্মৈ সুভদ্রশ্রবসে নমো নমঃ ।।  (ভাগবত //১৫)
অর্থাৎ,- আমি সেই সর্ব মঙ্গলময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি; যাঁর যশগাথা কীর্ত্তন, স্মরণ, দর্শন, বন্দন, শ্রবণ পূজনের ফলে সমস্ত পাপরাশি অচিরেই ধৌত হয়।

২১ জুন সূর্যগ্রহণের সাক্ষী থাকতে তৈরি হয়ে যান তবে পূর্ণ নয়, একে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা, যা ভারতের আকাশেও দেখা যাবে রবিবার৷ এদিন সূর্যকে ঢেকে দেবে চাঁদ এবং বার্ষিক এই গ্রহণে পুরো অন্ধকার হয়ে যাবে না তবে তৈরি হবে আগুনের আংটি! ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেখা যাবে এই গ্রহণ

এই গ্রহণের প্রভাব প্রতিকারঃ
জ্যোতিষ শাস্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে জানা যায় জুনের ৩য় এবং ৪র্থ সপ্তাহটি সমস্ত রাশির উপর বিশেষ প্রভাব ফেলবে। ১৫ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত টি গ্রহের পথ পরিবর্তন হবে, যা সমস্ত রাশিচক্রের উপর প্রভাব ফেলবে। জ্যোতিষ শাস্ত্রের মতে, এই ১০ দিনের মধ্যে গ্রহদের গতিবিধিতে পরিবর্তনের ফলে রাশির জন্য অত্যন্ত শুভ সময় শুরু হতে পারে। এগুলি ছাড়াও টি রাশি অসুবিধা বাড়তে পারে। ২০ শে জুন ভারতীয় সময় রাত্রি ১০.২০বা বাংলাদেশ সময় ১০.৫০ মিনিট হইতে শুরু হবে বিভিন্ন রাশির উপর এই গ্রহণের প্রভাব। যেহেতু এই গ্রহণ ভারত বর্ষে দৃশ্যমান হবে তাই সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করা নিত্যান্ত আবশ্যক বটে। 

জ্যোতিষশাস্ত্র মতে ১৫ জুন, সূর্য মিথুন রাশিতে প্রবেশ করবে। এর পরে, দিন পরে অর্থাৎ ১৮ তারিখ মঙ্গল গ্রহের রাশিচক্র পরিবর্তন হবে এবং এই দিন, বুধও মিথুন রাশিতে ফিরে যাবে। তারপরে ২০ জুন, বুধও স্থির হবে। শুক্র জুনের শেষ সপ্তাহে নিজস্ব রাশিতে থাকবে। ২২ জুন মঙ্গলবার, শুক্র বৃষ রাশিতে প্রবেশ করবে। এমন পরিস্থিতিতে এই গ্রহের অশুভ ফল কমে যায়।

গ্রহগুলির প্রভাব
মেষ, বৃষ, মিথুন, সিংহ, কন্যা, তুলা, মকর এবং কুম্ভ রাশির জন্য এটি ভাল সময়। জুনে টি গ্রহের চলাচলের রাশির পরিবর্তনের কারণে এই রাশির অর্থ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায় সুবিধা পেতে পারেন। এগুলি ছাড়াও কর্কট, বৃশ্চিক, ধনু এবং মীন এই চার রাশির লোকদের চাকরী ব্যবসায় সতর্ক থাকতে হবে। কঠোর পরিশ্রম হবে এবং কোনও সুবিধাও পাবেন না। মানসিক চাপ, ক্ষতি এবং বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

খারাপ প্রভাব এড়াতে কী করবেন ???
জ্যোতিষ শাস্ত্রের মতে, যে গ্রহের অশুভ প্রভাব এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে উপবাস, অনুদান, শ্রীহরিনাম জাপ, কীর্ত্তন  এবং গ্রহ সম্পর্কিত জিনিসগুলির উপাসনা।

গ্রহ দোষের প্রতিকারঃ
🔶 গঙ্গার জলে দুধ মিশিয়ে শিবলিঙ্গে অর্পণ করলে প্রতিটি গ্রহের অশুভ প্রভাব কমে যায়।

🔶 ব্রহ্মমুহুর্ত্তে ঘুম থেকে উঠে সূর্যমন্ত্র জপ করে সূর্যদেবকে জল অর্পণ করলে অশুভ প্রভাব কমে যায়।

🔶 গঙ্গার জলে দুধ মিশিয়ে বট বা অশ্বত্থ গাছে দিতে পারেন।

🔶 চাকরি, ব্যবসা, স্বাস্থ্য দাম্পত্য জীবনের সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রটি উচ্চারণ করতে পারেন।

এই সময় কি কি বিষয় সতর্ক থাকতে হয় ???
যে কোন গ্রহণই মানব জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। সে চন্দ্রগ্রহণ হোক বা সূর্যগ্রহণ।।তবে সূর্যগ্রহণ সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলে মানব জীবনে। কারন সমস্ত শক্তির উৎস হল সূর্য আর যখন সূর্যগ্রহণ লাগে তখন তার প্রভাব প্রত্যেকটি রাশির উপর পড়বে। আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে সূর্য্যগ্রহণের সময় কিছু কাজ আছে যদি তা করা হয় তাহলে তার ফল আগামী সময়ে ভোগ করতে হতে পারে এবং বিপদ বাড়বে ছাড়া কুমবে না।

২১ শে জুন সূর্যগ্রহণ অর্থাৎ আষাঢ় মাসে কৃষ্ণপক্ষের আমাবস্যা তিথিতে রবিবারে এই সূর্য গ্রহণ শুরু হওয়ার সময়-২১ জুন সকাল ৯.১২ মিনিটে ৷ প্রথম পূর্ণ গ্রহণ যখন থেকে শুরু হবে- ১০.১৭ মিনিট৷ পুরোপুরি সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে- দুপুর ১২.১০ মিনিট৷ যতক্ষণ দেখা যাবে সূর্যগ্রহণ- দুপুর ২.০২ মিনিট ৷ গ্রহণ কেটে যাবে- দুপুর ৩.০৪ মিনিট...।

অর্থাৎ প্রায় ঘন্টা ধরে এই সূর্য গ্রহণ চলবে। এই সূর্য্যগ্রহণের যে আগের ১২ ঘন্টা সময়,এবং সূর্যগ্রহণের পরে ১২ ঘন্টা সময়,এই সময় কালকে বলা সুতক সময়। শাস্ত্রে এই সময়কে অশুভ মনে করা হয়। এই সময় শুভ কাজ যেমন বিবাহ, উপনয়ন, গৃহ প্রবেশ, বাহন কেনা, নতুন কিছু কেনা, এই সমস্ত কিছুর ক্ষেত্রে কিন্তু নিষেধ করা করা আছে।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রহণ চাক্ষুস করা গেলেও রাজস্থান, হরিয়ানা এবং উত্তরাখণ্ডে তা খুব স্পষ্ট দেখা যাবে। কলকাতা থেকেও সূর্যগ্রহণের দেখা মিলবে, তবে খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখতে বারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারত ছাড়াও এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে আফ্রিকা মহাদেশে৷ যেমন মধ্য আফ্রিকা রিপাবলিক, কঙ্গো, ইথোপিয়া৷ এছাড়াও পাকিস্তান চিন থেকেও গ্রহণ দেখা যাবে।  মহাজাগতিক এই সব বিষয়গুলির সঙ্গে নানা ধরনের কুসংস্থার যুক্ত থাকে যেমন গ্রহণের সময় রান্না না করা বা না খাওয়া।

যে বিষয় গুলি সম্পর্কে সর্তক থাকবেন
- সকলের মনের বাসনা থাকে সূর্যগ্রহণ দেখার। তবে খালী চোখে সূর্যগ্রহণ দেখতে যাবেন না।তবে বাড়ির গর্ববতী মহিলা এবং ছোট বাচ্চাদের কিন্তু গ্রহণ দেখতে দেবেন না। আর সূর্যগ্রহণ দেখতে কালো চশমা বা বড় পাত্রে জল দিয়ে জলের প্রতিবিম্ব সাহায্য দেখতে পারেন।
- সূর্যগ্রহণের সময় কখনও কোন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করবেন না যেমনঃছুরি, কাচি, ব্লেড, বটি, দা ইত্যাদি। এই ধরণের কোন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করবেন না।
- সূর্যগ্রহণের সময় আগুনের ব্যবহার করবেন না। সূর্যগ্রহণ চলাকালীন সময় আগুনের ব্যবহারে বিপদ ডেকে আনে তাই গ্রহণের পূর্বে রান্নার কাজ সম্পন্ন করবেন।
- সূর্যগ্রহণের সময় কোন অবস্থায় খাবার খাবেন না। গ্রহণের পূর্বে খেতে পারেন। তবে ছোট বাচ্চা,গর্ববতী মহিলা, অসুস্থ রোগীদের জন্য গ্রহণ লাগার পূর্বে খাবার পানীয় জলে তুলসী পাতা দিয়ে রাখবেন। সম্ভব হলে এই সময় আহার করবেন না।
- গ্রহণ চলাকালীন সময় কোন প্রকার বৃক্ষ স্পর্শ করবেন না। তুলসী পাতা গ্রহণ লাগার আগে তুলে রাখুন।
- গ্রহণকে অশুভ বিবেচনা করা হয়েছে। এই সময় কু- চিন্তা, কু- কথা, খারাপ আচারণ, ঝগড়াঝাটি, ঝামেলা প্রভৃতি সময় এড়িয়ে চলবেন। এই সময় দান,ধ্যান,তপ,যজ্ঞ প্রদান করুন।
- গ্রহণ চলাকালীন সময় দেবতার মূর্তি বা বিগ্রহে স্পর্শ করবেন না।
- গ্রহণ চলাকালিনী সময় স্নান করবেন না। গ্রহণের পরে, পরা কাপড় সহিত স্নান করে নেবেন।
সূর্যগ্রহণ দৃশ্য, তাই সাবধানে এবং নিয়মগুলো মেনে চলবেন।।

তস্মাদ্ভারত সর্বাত্মা ভগবানীশ্বরো হরিঃ
শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ স্মর্তব্যশ্চেচ্ছতাভয়ম্ ।। (ভাগবত //)
অর্থাৎ,- হে ভারত! সমস্ত দুঃখ-দুঃর্দশা থেকে যে মুক্ত হওয়ার বাসনা করে, তাকে অবশ্যই পরমাত্মা, পরম নিয়ন্তা এবং সমস্ত দুঃখ হরণকারী পরমেশ্বর ভগবানের কথা শ্রবণ, কীর্ত্তন স্মরণ করতে হবে।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ       কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম       রাম রাম হরে হরে।।

🌕🌖🌔🌓🌗🌘.

No comments:

Post a Comment

💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐 🌷বৈষ্ণবের ব্যাস পূজা🌷 💐🏵️💞🌺🌷🌺💞🏵️💐 শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ সকল সাধু, গুরু, বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দ...