💐💞 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা 💞💐

🌹🌻🌺💞💞💐💐💞💞🌺🌻🌹

🌻🌼💐পঞ্চম অধ্যায়ের মাহাত্ম্য💐🌼🌻

বিশেষ পোষ্ট

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

ভগবানবিষ্ণু বললেন হে প্রিয়ে, আমি এখন শ্রীমদ্ভগবদগীতার পঞ্চম অধ্যায়ের অনন্ত মাহাত্ম্যের কথা বর্ণনা করছি। নিষ্ঠা সহকারে শ্রবণ কর।

মদ্রদেশে পুরু কুৎস পুর নামে এক নগর ছিল। সেখানে পিঙ্গল নামে এক ব্রাহ্মণ বাস করত। বাল্যকালে তাকে বিভিন্ন প্রকার ব্রহ্মণ্য-ক্রিয়াকলাপ ও বেদ শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু অধ্যয়নে তার কোন আগ্রহই ছিল না। যৌবনে পদার্পণ করে সে ব্রাহ্মণের বৃত্তি পরিত্যাগ করে বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যগীত শিক্ষা শুরু করে। ধীরে ধীরে এই সকল বিদ্যায় সে এত পারদর্শী হল যে, স্বয়ং রাজা তাঁর প্রাসাদে বাস করার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানালেন। সেখানে বাস করা কালীন ধীরে ধীরে সে পাপময় জীবনে লিপ্ত হইতে থাকল। সে পরদার গমন থেকে শুরু করে সব রকমের পাপ কাজে লিপ্ত ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। রাজার সঙ্গে যতই তার হৃদ্যতা বাড়তে লাগল, ততই সে আরও অহংকারী হয়ে উঠল। সে বিশেষ করে গোপনে রাজার কাছে অন্যের সমালোচনা করে মজা পেত।

পিঙ্গলের স্ত্রী অরুণার এক নিচু পরিবারে জন্ম। সে ছিল খুবই কামুক এবং বহু পুরুষের সঙ্গসুখ উপভোগে আসক্তা। তার স্বামী যখন তার কার্যকলাপ জেনে ফেলে, সে তখন স্বামীকে হত্যা করতে মনস্থ করে। একদিন অধিক রাত্রিতে সে তার স্বামীর মুণ্ড কেটে শরীরটিকে বাগানে পুঁতে ফেলে। মৃত্যুর পর পিঙ্গল গভীর নরকে পতিত হয় এবং অনেক কাল যাতনা ভোগের পর সে শকুন হয়ে জন্মায়। এরপর অরুণা বহু পুরুষের সঙ্গে স্বেচ্ছায় বিহার করে ভগন্দর রোগে আক্রান্ত হয়। অচিরেই তার আপাত সুন্দর দেহটি কুশ্রী কদাকার ও আকর্ষণহীন হয়ে পড়ে। মৃত্যুর পর তার নরকে গতি হয়। সেখানে দীর্ঘকাল নরক যন্ত্রণা ভোগের পর সে একটি স্ত্রী টিয়া পাখির দেহ প্রাপ্ত হয়।

একদিন পাখিটি খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছিল। ইত্যবসরে শকুনটির পূর্ব জন্মে যে পিঙ্গল ছিল, নারী টিয়া পাখিটিকে দেখে গত জন্মের কথা মনে পড়ে গেল, সে বুঝতে পারল যে এই পাখিটি তার স্ত্রী ছিল। সে তার ধারাল ঠোট দিয়ে পাখিটিকে আঘাত করল এবং পাখিটি শ্মশানে একটা মানুষের মাথার খুলিতে জমে থাকা জলের মধ্যে পড়ে মরে গেল। তখনই একজন শিকারী এসে শকুনটিকেও শরবিদ্ধ করল। শকুনটি পড়ে গেল, তার মুণ্ডটিও ওই খুলির জলে পড়ল। শকুনটিও মরে গেল। অতঃপর যমদূতেরা এসে তাদের যমপুরীতে নিয়ে গেল। তাদের অতীতের পাপময় জীবনের কথা স্মরণ করে তারা খুবই ভীত হল।

যমরাজের সামনে উপস্থিত হওয়ার পর যমরাজ বললেন, ‘’এখন তোমরা  সর্বপাপমুক্ত হয়েছ। তাই তোমরা এখন বৈকুণ্ঠে যেতে পার।‘’  পিঙ্গল এবং অরুণা যমরাজকে জিজ্ঞাসা করল যে, তাদের মতো এমন পাপী কি করে বৈকুণ্ঠে যাবার অধিকার পেল। যমরাজ উত্তরে বললেন, ‘’গঙ্গার তীরে বট নামে এক মহান ভক্ত বাস করতেন। তিনি কাম ও লোভ থেকে সম্পূর্ণ রূপে মুক্ত ছিলেন। তিনি প্রতিদিন ভগবদগীতার পঞ্চম অধ্যায়  নিষ্ঠা সহকারে পাঠ করতেন। তাই মৃত্যুর পর তিনি সরাসরি বৈকুণ্ঠে গমন করেন। প্রতিদিন ভগবদগীতার পঞ্চম অধ্যায় পাঠ করার ফলে তার দেহ সম্পূর্ণ শুদ্ধ হয়। ঘটনাক্রমে তোমরা  তার মাথার খুলির সংস্পর্শে আসার ফলে সম্পূর্ণরূপে পাপমুক্ত হয়ে বৈকুণ্ঠে যাবার যোগ্যতা  অর্জন করেছ।‘’ এটাই হল ভগবদ্গীতার পঞ্চম অধ্যায়ের মাহাত্ম্য।

ভগবান বিষ্ণু বললেন প্রিয়ে লক্ষ্মি ! যমরাজের কাছ থেকে ভগবদগীতার মাহাত্ম্য শ্রবণ করার পর তারা খুবই আনন্দের সঙ্গে পুষ্পক বিমানে আরোহণ করে বৈকুণ্ঠে গমন করল। ভগবদগীতার পঞ্চম অধ্যায় যে পাঠ করবে অথবা যে শ্রবণ করবে, যত পাপীই হোক  তার বৈকুণ্ঠ প্রাপ্তি হবে।

ভাই রে! অপরূপ নিত্যানন্দ ধাম।

নিত্য শ্রীরাধিকা নাম,               আনন্দরস অনুপম,

মিলনেতে নিত্যানন্দ নাম।।

নামেই আনন্দময়,                   পশুপাখি জীবচয়,

দরশনে দিব্য ভাবোদয়।

ষড়ঋতু নিষেবিত,                    পত্রপুস্পে সুশোভিত,

নিত্যানন্দ ধাম প্রেমময়।।

দিনেশ, গনেশ, শেষ,                ত্রিদিবেশ শ্রীমহেশ,

ব্রহ্মা সোম, যম, হুতাশন।

সুরনর মুনিগণ,                        যতনে করয়ে ধ্যান,

নিত্যানন্দ ধাম সুমোহন।।

রামেশ্বর রেণুকায়,                    জগন্নাথ যমুনায়,

প্রতি বৃক্ষে অযোধ্যা নিবাসী।

বদ্রী কেদারনাথ,                       প্রয়াগ পুষ্কররাজ,

দ্বারে হরিদ্বার বারনাসী।।

যত বৃক্ষ লতা তরু,                   সব হয় কল্পতরু,

জল হয় অমৃত সমান।

চিন্তামনি রত্নচয়,                     তা সনে তুলনা নয়,

এক একটি রজকণাধন।।

হেন নিত্য প্রেমধাম,                হৃদে জাগে অবিরাম,

গুরুপদে সদা নিবেদয়।

গোপীশরণদাসে ভনে,             সেবা যোগ্য দেহদানে,

আশা পূর্ণ কর দয়াময়।।

💞জয় ভক্তবৎসল শ্রীভগবানের জয়💐💐জয় সকল ভক্তবৃন্দের জয়💞