Monday, August 10, 2020

 💐💞 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা 💞💐

🌹🌻🌺💞💞💐💐💞💞🌺🌻🌹
🌼💐পঞ্চদশ অধ্যায়ের মাহাত্ম্য💐🌼
🍇বিশেষ পোষ্ট🍇
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I
''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।
তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।
অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’
আজানুলম্বিত - ভুজৌ কনকাবদাতৌ,
সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।
বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,
বন্দে জগৎপ্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।
পঞ্চদশ-অধ্যায়-পুরুষোত্তম-যোগ
ভগবান শিব বললেন,- হে প্রিয়ে পার্বতি! শ্রীমদ্ভগবদগীতার পঞ্চদশ অধ্যায়ের অসীম মাহাত্ম্য শ্রবণ কর। এই মাহাত্ম্য শ্রবণে তুমি অভূতপূর্ব আনন্দ লাভ করবে।
গৌড়দেশে নরসিংহ নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি এত শক্তিশালী ছিলেন যে, দেবতাদেরও তিনি যুদ্ধে পরাভূত করতে পারতেন। তার সেনাপতি সরভমেরুণ্ড ছিল খুব লোভী ও দুষ্ট প্রকৃতির। তাই সে রাজপুত্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করল কিভাবে রাজাকে হত্যা করে গৌড়ের সিংহাসন দখল করা যায়। কিন্তু তার চক্রান্ত কার্যকরী করার পূর্বেই কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে অচিরেই মৃত্যু মুখে পতিত হয়। পরজন্মে সিন্ধুদেশে সে ঘোড়া হয়ে জন্মায়। ঘোড়াটি ছিল সুন্দর ও দ্রুতগামী। প্রতিযোগিতায় পুরস্কার প্রাপ্তির সকল গুণাবলীই ঘোড়াটির ছিল। একদিন গৌড়দেশের এক ধনী ব্যক্তির ছেলে ঘোড়াটিকে দেখে সেটা কিনতে মনস্থ করল। সেটিকে কিনে গৌড় দেশের রাজার কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রী করে দেওয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য। তাই সে ঘোড়াটি কিনে গৌড়দেশের রাজধানীর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।
নগরে পৌঁছে সোজা সে রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করে প্রহরীদের অনুরোধ করল যাতে সে অবিলম্বে রাজার সঙ্গে দেখা করতে পারে। যখন সে রাজার সম্মুখে উপস্থিত হল, রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিজন্য তুমি এখানে এসেছ? ব্যবসায়ী লোকটি উত্তরে বলল, ‘’হেরাজা!সিন্ধুদেশে গিয়ে আমি খুবই উচ্চগুণমান বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী ঘোড়া ক্রয় করে এনেছি। সারাবিশ্বে এর সমকক্ষ ঘোড়া দেখা যায় না।‘’ রাজা আদেশ করলেন,- ‘’এক্ষুণি ঘোড়াটিকে নিয়ে এসো।‘’ ঘোড়াটিকে রাজার কাছে আনা হলে গঠন, বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী দেখে তিনি খুবই খুশি হলেন।
ঘোড়াটিকে পরীক্ষা করার পর ব্যবসায়ীর প্রার্থিত মূল্যের দ্বিগুণ মুদ্রা দিয়ে রাজা সেটিকে কিনলেন। কিছুদিন পর রাজা শিকারে যেতে মনস্থ করলেন। সেই ঘোড়ায় চড়ে বনে গেলেন এবং সেখানে কিছুটা দুরেই একটি হরিণ দেখতে পেলেন। সঙ্গে সঙ্গে সেটার পশ্চাদ্ধাবন করলেন। যেদিকেই হরিণটি যায় সেদিকেই তিনি ঘোড়া নিয়ে দ্রুত যেতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল রাজার লোকজনেরা বহুপিছনে পড়ে গেছে। অনেকক্ষণ হরিণের পিছনে ছুটে ক্লান্ত ও তৃষ্ণার্ত হয়ে রাজা বিশ্রামের জন্য ঘোড়াটিকে একটা গাছের ডালে বেঁধে একটা বড় পাথরের ওপর বসলেন। কিছুক্ষণ পর রাজা দেখলেন কিছু লেখা এক টুকরো বিশেষ ধরনের পাতা হাওয়ায় উড়ে এসে তার পাশেই পাথরের ওপর পড়ল। সেই পাতায় শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার পঞ্চদশ অধ্যায়ের একটি শ্লোকের অর্ধাংশ লেখা ছিল।
রাজা সেটা জোরে জোরে পড়তে আরম্ভ করলেন। তার মুখ থেকে প্রথম শব্দটি নির্গত হওয়ামাত্রই ঘোড়াটি মাটিতে পড়ে গিয়ে দেহ ত্যাগ করল। দিব্য চতুর্ভুজ মূর্তি লাভ করে পুষ্পক বিমানে চড়ে বৈকুণ্ঠ ধামে চলে গেল। নিকটেই রাজা ফুলগাছ ও বৃক্ষে ঘেরা এক সুন্দর আশ্রম দেখতে পেলেন। আরও দেখলেন এক সুদর্শন ব্রাহ্মণকে যিনি নিজের ইন্দ্রিয়কে পূর্ণরূপে জয় করেছেন এবং তিনি সেই আশ্রমে বসে আছেন। সেখানে গিয়ে রাজা সেই ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন। করজোড়ে রাজা জিজ্ঞাসা করলেন,- ‘’আমার ঘোড়াটির বৈকুণ্ঠ প্রাপ্তি কি করে সম্ভব হল?’’ বিষ্ণুশর্মা নামে সেই ব্রাহ্মণটি বললেন,- হে রাজা! এই ঘোড়াটি পূর্বে আপনার সৈন্য দলের সেনাপতি ছিল। তার নাম ছিল সরভমেরুণ্ড।
আপনাকে সিংহাসনচ্যুত করতে রাজপুত্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু তার আগেই সে কলেরায় মারা যায়। এরপরই সে এই ঘোড়া হয়ে জন্মায়। দৈবক্রমে, সে শ্রীমদ্ভগবদগীতার পঞ্চদশ অধ্যায়ের শ্লোক থেকে কয়েকটি শব্দ শুনতে পায় এবং তার বৈকুণ্ঠ প্রাপ্তি হয়। ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাজা তার রাজধানীতে ফিরে গেলেন। সেই পাতার ফলকে লেখা অংশটি তিনি বার বার পাঠ করতে থাকলেন। অল্পকাল পরে তাঁর পুত্রকে গৌড়দেশের সিংহাসনে বসিয়ে তিনি বনে গমন করেন। সেখানে নিয়মিত ভাবে তিনি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার পঞ্চদশ অধ্যায় পাঠ করেন এবং শীঘ্রই ভগবান বিষ্ণুর শ্রীপাদপদ্ম লাভ করেন।
‘’কলের্দোষনিধেরাজন্ অস্তি হ্যেকো মহানগুণঃ I
কীর্ত্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তসঙ্গঃ পরং ব্রজেৎ I I‘’ (শ্রীমদ্ভাগবত)
কলি সমস্ত দোষের বটে, তথাপি হে রাজন ! কলির একটি মহানগুণ এই যে, কৃষ্ণকীর্ত্তনে জীব মায়াবদ্ধ হইতে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণরূপ পরতত্ত্ব লাভ করেন।
‘’নাম - সংকীর্ত্তন যস্য সর্বপাপ প্রণাশনম্।
প্রণামো দুঃখশমনস্তং নমামি শ্রীহরিং পরম্।।‘’
যে হরিনাম সংকীর্ত্তন করিলে ইহকাল ও পরকালের পাপরাশি নিঃশেষে দগ্ধ হয়,আমি সেই নামরূপী পরমাত্মা স্বরূপ শ্রীহরিকে প্রণাম করি। পরমকরুণাময় গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী এবং সকল বৈষ্ণব ভক্ত - পার্ষদদের শ্রীচরণকমলে নিরন্তর প্রার্থনা করি, সকলের জীবন যেনো রাধা-কৃষ্ণময়তায় পূর্ণ হয়ে, মঙ্গলময়, কল্যাণময়, ভক্তিময়, সুন্দরময় আর আনন্দময় হয়ে উঠুক।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!"
!! জয় শ্রীরাধাকৃষ্ণের জয় !! !! জয় সকল ভক্তবৃন্দের জয় !!

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...