Sunday, August 16, 2020

 💐💞 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা 💞💐

🌹🌻🌺💞💞💐💐💞💞🌺🌻🌹
🌼💐 ষোড়শ অধ্যায়ের মাহাত্ম্য💐🌼
🍇বিশেষ পোষ্ট🍇
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I
''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।
তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।
অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’
আজানুলম্বিত - ভুজৌ কনকাবদাতৌ,
সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।
বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,
বন্দে জগৎপ্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।
ষোড়শ-অধ্যায়-দৈবাসুর-সম্পদ-বিভাগযোগ
ভগবান শিব বললেন,- হে প্রিয়ে পার্বতি! শ্রীমদ্ভগবদগীতার ষোড়শ অধ্যায়ের অসীম মাহাত্ম্য শ্রবণ কর। গুজরাটের সৌরাষ্ট্র নগরে (সুরাট) খড়গবাহুনামে একরাজা রাজত্ব করতেন। স্বর্গের রাজা ইন্দ্রের ন্যায় তার ঐশ্বর্য ও পরাক্রম ছিল। তাঁর হাতিশালায় অসি নামে এক উন্মত্ত পুরুষ হাতী ছিল। মদগর্বী হাতিটির ললাটের উভয় পার্শ্ব থেকে কামরস নির্গত হত। একদিন হাতিটি ক্রোধান্বিত হয়ে শিকল ছিড়ে হাতিশালা ভাঙতে শুরু করে দিল। এরপর এদিক-সেদিক দৌড়ে উন্মত্তভাবে নগরবাসীদের তাড়া করল। প্রত্যেকেই পড়িমরি করে দ্রুত পালাতে লাগল। সঙ্গে সঙ্গে মাহুত রাজাকে বিষয়টি জানাল। রাজা রাজপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে হাতিটিকে দেখতে গেলেন। রাজা খড়গবাহু পাগলা হাতিকে বশ করার কৌশল জানতেন। রাজা পৌঁছে দেখলেন যে হাতিটি উন্মত্তের ন্যায় ছুটছে।
অনেক লোক পদপিষ্ট হয়েছে এবং অনেকে হাতির হাত থেকে বাঁচার জন্যে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। এই বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রাজা দেখলেন একজন ব্রাহ্মণ সরোবর থেকে স্নান করে শান্ত ভাবে রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছেন। অনুচ্চকণ্ঠে তিনি গীতার ষোড়শ অধ্যায়ের প্রথম তিনটি শ্লোক আবৃত্তি করছিলেন, আর শ্লোকের প্রথম শব্দটি ছিল ‘অভয়ং’।
অভয়ং সত্ত্বসংশুদ্ধির্জ্ঞানযোগব্যবস্থিতিঃ।
দানং দমশ্চ যজ্ঞশ্চ স্বাধ্যায়স্তপ আর্জবম্ ।।১।।
অহিংসা সত্যমক্রোধস্ত্যাগঃ শান্তিরপৈশুনম্।
দয়া ভূতেষ্বলোলুপ্ত্বং মার্দবং হ্রীরচাপলম্ ।।২।।
তেজঃ ক্ষমা ধৃতিঃ শৈৗচমদ্রোহো নাতিমানিতা।
ভবন্তি সম্পদং দৈবীমভিজাতস্য ভারত ।।৩।।
লোকেরা ব্রাহ্মণকে বার বার নিষেধ করতে লাগল হাতির কাছে যেতে। কিন্তু ব্রাহ্মণের তাদের কথায় কোন ধ্যান নেই। তিনি সোজা পাগলা হাতির কাছে গিয়ে তার গায়ে ধীরে ধীরে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। ব্রাহ্মণকে তার দিকে আসতে দেখেই হাতিটির সমস্ত ক্রোধ জল হয়ে গেল এবং সে শান্তভাবে শুয়ে পড়ল।
কিছুক্ষণ হাতিটিকে আদর করার পর ব্রাহ্মণ ধীরে ধীরে সেখান থেকে চলে গেলেন। রাজা ও নগরবাসী সকলেই এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলেন। রাজা সোজা গিয়ে ব্রাহ্মণের পায়ে পড়ে বললেন,- ‘’এই সৌম্যভাব ও বিস্ময়কর শক্তি অর্জনের জন্য আপনি কিরূপ তপস্যা ও পূজার্চনা করেছেন?” উত্তরে ব্রাহ্মণ বললেন,- ‘’আমি প্রতিদিন শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ষোড়শ অধ্যায় থেকে কয়েকটি শ্লোক আবৃত্তিকরি।‘’ ভগবান্ শিব বললেন, রাজা সেই ব্রাহ্মণকে তাঁর প্রাসাদে আসতে অনুরোধ করলেন। তিনি তাকে একশত স্বর্ণমুদ্রা দান করলেন এবং শ্রীমদ্ভগবদগীতার ষোড়শ অধ্যায়ের শ্লোক শিক্ষা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন।
রাজা খড়গবাহু কিছুকাল নিয়মিতভাবে সেই শ্লোকগুলি পাঠ করলেন। একদিন রক্ষীদের নিয়ে তিনি হাতিশালায় গিয়ে হাতিটিকে মুক্তি দিতে মাহুতকে আদেশ দিলেন। নগরবাসীরা রাজার এই কাজে বেশ হতাশ হল। তারা মনে করল হাতিটি আবার ক্ষিপ্তভাবে ছোটাছুটি করবে। কিন্তু রাজা তার গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করতে থাকলেন। এরপর রাজা প্রাসাদে ফিরে এসে তার পুত্রকে সিংহাসনে বসিয়ে বনে গমন করলেন। সেখানে তিনি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ষোড়শ অধ্যায়ের শ্লোকাবলী কীর্ত্তন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করতে লাগলেন এবং অচিরেই তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্ম লাভ করলেন। কোন ব্যক্তি সে যত পাপীই হোক, শ্রীমদ্ভগবদগীতার ষোড়শ অধ্যায় পাঠ করলে অতি সত্বর রাজা খডগবাহুর মতো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্ম লাভ করবেন।
‘’কলের্দোষনিধেরাজন্ অস্তি হ্যেকো মহানগুণঃ I
কীর্ত্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তসঙ্গঃ পরং ব্রজেৎ I I‘’ (শ্রীমদ্ভাগবত)
কলি সমস্ত দোষের বটে, তথাপি হে রাজন ! কলির একটি মহানগুণ এই যে, কৃষ্ণকীর্ত্তনে জীব মায়াবদ্ধ হইতে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণরূপ পরতত্ত্ব লাভ করেন।
‘’নাম - সংকীর্ত্তন যস্য সর্বপাপ প্রণাশনম্।
প্রণামো দুঃখশমনস্তং নমামি শ্রীহরিং পরম্।।‘’
যে হরিনাম সংকীর্ত্তন করিলে ইহকাল ও পরকালের পাপরাশি নিঃশেষে দগ্ধ হয়,আমি সেই নামরূপী পরমাত্মা স্বরূপ শ্রীহরিকে প্রণাম করি। পরমকরুণাময় গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী এবং সকল বৈষ্ণব ভক্ত - পার্ষদদের শ্রীচরণকমলে নিরন্তর প্রার্থনা করি, সকলের জীবন যেনো রাধা-কৃষ্ণময়তায় পূর্ণ হয়ে, মঙ্গলময়, কল্যাণময়, ভক্তিময়, সুন্দরময় আর আনন্দময় হয়ে উঠুক।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!"
!! জয় শ্রীরাধাকৃষ্ণের জয় !! !! জয় সকল ভক্তবৃন্দের জয় !!

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...