🍁ললিতা সপ্তমী🍁
🦚💐🏵️💞🏵️💐🦚
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I আজ ললিতা সপ্তমী। সকল ভক্তগণকে জানাই কৃষ্ণপ্রীতি শুভেচ্ছা।
"অষ্টসখীর মধ্যে শ্রীললিতা সকলের শ্রেষ্ঠা। অঙ্গকান্তি গোরোচনার ন্যায়, ময়ূর পুচ্ছের ন্যয় বসন। ইনি নিখিল সখীগণের অধ্যক্ষা। মাতার নাম শারদী, পিতার নাম বিশোক, পতি ভৈরব নামের গোপ। যুগলের প্রেমকলহ ও সন্ধিকার্যে সুনিপুণা।কুসুমালঙ্কার, ছত্র, শয্যা, কুঞ্জ ভবনাদি নির্মাণে সুদক্ষা। কর্পূর তাম্বুল সেবা।ললিতানন্দ নামক কুঞ্জ।"
রাগের ভজন পথ, কহি এবে অভিমত,
লোক বেদ সার এই বাণী।
সখীর অনুগা হইয়া, ব্রজে সিদ্ধ দেহ পাইয়া,
এই ভাবে জুড়াবে পরাণি ।। ১।।
রাধিকার সখী যত, তাহা বা কহিব কত,
মুখ্য সখী করিব গণন।
ললিতা বিশাখা তথা, চিত্রা চম্পকলতা,
রঙ্গদেবী সুদেবী কথন ।। ২।।
তুঙ্গবিদ্যা, ইন্দুরেখা, এই অষ্ট সখী লেখা,
এবে কহি নর্ম সখীগণ।
রাধিকার সহচরী, প্রিয় প্রেষ্ঠ নাম ধরি,
প্রেম সেবা করে অনুক্ষণ ।। ৩।।
সম স্নেহা বিষম স্নেহা, না করিহ দুই লেহা,
কহি মাত্র অধিক স্নেহা-গণ।
নিরন্তর থাকে সঙ্গে, কৃষ্ণ কথা লীলা রঙ্গে,
নর্ম সখী এই সব জন ।। ৪।।
শ্রী রূপ মঞ্জরী সার, শ্রী রতি মঞ্জরী আর,
লবঙ্গ মঞ্জরী, মঞ্জুলালী।
শ্রী রস মঞ্জরী সঙ্গে, কস্তুরিকা আদি রঙ্গে,
প্রেম সেবা করে কুতূহলে ।। ৫।।
এ সভার অনুগা হইয়া, প্রেম সেবা নিব চাইয়া,
ইঙ্গিতে বুঝিব সব কাজ।
রূপে গুণে ডগমগি, সদা হব অনুরাগী,
বসতি করিব সখীর মাঝ ।। ৬।।
বৃন্দাবনে দুই জন, চতুর-দিকে সখীগণ,
সময় বুঝিব রস সুখে।
সখীর ইঙ্গিতে হবে, চামর ঢুলাব কবে,
তাম্বূল যোগাব চান্দমুখে ।। ৭।।
যুগল চরণ সেবি, নিরন্তর এই ভাবি,
অনুরাগী থাকিব সদায়।
সাধন ভাবিব যাহা, সিদ্ধ-দেহে পাব তাহা,
রাগ পথের এই সে উপায় ।। ৮।।
সাধনে যে ধন চাই, সিদ্ধ দেহে তাহা পাই,
পক্কাপক্ক মাত্র সে বিচার।
অপক্কে সাধন রীতি, পাকিলে সে প্রেম-ভক্তি,
ভকতি লক্ষণ তত্ত্ব সার ।। ৯।।
নরোত্তম দাসে কয়, এই যেন মোর হয়,
ব্রজপুরে অনুরাগে বাস।
সখীগণ গণনাতে, আমারে লিখিবে তাতে,
তব হি পূরব অভিলাষ ।। ১০।।
সখীনাং সঙ্গিনী রূপাম আত্মানাং বাসনাময়ীম।
আজ্ঞা সেবাপরাং তত তদ রূপালঙ্কার ভূষিতাম ।। ১১।।
কৃষ্ণং স্মরন জনং চাস্য প্রেষ্ঠং নিজ সমীহিতম।
তত তত কথা রতশ চাসৌ কুর্যাদ বাসং ব্রজে সদা ।। ১২।।
💐শ্ৰীকৃষ্ণের বিরহ - বিলাপ💐
🍁🦚💐🏵️🌺🌹🌺🏵️💐🦚🍁
কহ কহ ওরে পক্ষী ব্রজের বারতা।
কেমনে আছেন মোর যশোমতী মাতা।।
কেমনে আছেন মোর পিতা নন্দঘোষ।
বিবরিয়া কহ পক্ষী চিত্তের সন্তোষ।।
ধবলী শ্যামলী মোর আর যে পিউলী।
কেমনে আছেন মোর রাধা চন্দ্রাবলী।।
কেমনে আছেন মোর সুবল আদি সখা।
কেমনে আছেন মোর ললিতা বিশাখা।।
পক্ষী বলে শুন প্রভু মোর নিবেদন।
বিবরিয়া কি কহিব ব্রজের কথন।।
তুমি ব্রজের জীবন ব্রজেন্দ্র নন্দন।
জীবন ছাড়িলে তনু কোন প্রয়োজন।।
মৃত তনু পড়া আছে যত গোপীগণ।
তব মাতা পিতা আছয়ে অন্ধ-সম।।
শ্যামলী ধবলী গাই বহু ক্ষীরবতী।
তোমার বিহনে দুগ্ধ না দেয় এক রতি।।
রাধিকার বার্তা জিজ্ঞাসিলে ঘন কালা।
সতত তোমার নাম তাহার জপমালা।।
রাধিকার কিবা দোষ হইলা দেব হরি।
কি লাগিয়া তাহারে আইলা পরিহরি।।
ভবানন্দ সেন বলে প্রভূ - পদতলে।
বৃন্দাবন ছাড়ি কেনে মথুরায় রহিলে ৷।
এত যদি জান হরি, ছাড় কেন কিশোরী,
কিবা দোষ হইল রাধার।
শুন ওহে ঘনশ্যাম, সদা জপে অবিশ্রাম,
তব নামে অস্থিচৰ্ম্ম - সার।।
জল বিনে যেন মীন, সদা হয় অতি ক্ষীণ,
শেষ বিনে যেমন সংসার।
কাম বিনে যেন রতি, সদা কান্দে দিবা রাতি,
তোমা বিনে রাধার কে আর।।
সীতার শোকে রঘুনাথ, বানর লইয়া সাথ,
পাঠাইলা বীর হনুমানে।
যাইয়া পবন-সুত, রণ কৈল অদ্ভুত,
মারিল বহুত চরগণে।।
কনক-লঙ্কা ছারখার , রাক্ষস করে হাহাকার,
কান্দে রাজা শিব শিব স্মরি।
সেই মত গোপ-নারী, কান্দিয়া আকুল হরি,
ছারখার হইল ব্রজ-পুরী।।
দৈত্যকুলে বলি রাজা, তোমায় করিল পূজা,
তারে দিলে পাতাল - ভুবন।
তোমার শরণ লয়, তার দশা এই হয়,
কি করিব ব্রজ-নারীগণ।।
নল পুণ্য-শ্লোক রাজা, ত্ৰিভূবনে মহা-তেজা,
তারে তুমি কৈলে বনচারী।
যে জন শরণ লয়, তার দশা এই হয়,
কান্দাইলে যত গোপনারী।।
সমুদ্র-মথন-কালে, দেব দৈত্যে সুধা তুলে,
বিভাগ চাহিলা দৈত্যগণ।
হইয়া তুমি মোহিনী, সবার হরিলা প্রাণী,
মধ্যস্থ করিল আচরণ।।
দেবতা সহায় হরি, দৈত্যগণে পরিহরি,
দেবে সুধা দিলে শ্ৰীনিবাস।
বিশ্বাসঘাতকী করি, দেবেতে অমর করি,
দৈত্যগণে করিলে নৈরাশ।।
সুধা দিয়া সভা তুণ্ডে, রাহু- দৈত্যের কাট মুণ্ডে,
তুমি কর ব্যাধের আচার।
ষষ্ঠ দিবস কালে, পুতনা বধিলে হেলে,
নারী-বধের কি ভয় তোমার।।
শঙ্খাসুরের নারী, পতিব্ৰতা সুন্দরী ,
তাহারে হরিলে ছল করি।
মারিয়া তাহার পতি, মস্তকে রাখিলে সতী,
সকল পার আপনি শ্রীহরি।।
তোমায় চিনে রাহু শনি, পৰ্ব্বত কাট গুণমণি,
সেই বটে তোমার সাধন।
যুক্তি করে যত নারী, যদি না আইসে হরি,
শনির করিব আরাধন।।
তাহারে বশ করি, দুঃখ দিবেক হরি,
তবে পূরে মনের বাসনা।
যে যার শরণ লয়, তাহারে এমন হয়,
অবিরত কান্দে ব্রজঙ্গনা।।
সদা কোন ব্ৰজনারী, যমুনায় পড়ে বারি,
সবে ক্ষীণ প্রবল যমুনা।
তোমারে জানাইছি দৃঢ়, কাল-বরণ খল বড়,
কত কব তব গুণকথা ।।
ভবানন্দ সেনে কয়, বলিতে উচিত হয়,
কহিবারে মনে পাই ব্যথা।।
No comments:
Post a Comment