💐💞 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা 💞💐

🌹🌻🌺💞💞💐💐💞💞🌺🌻🌹

🌻🌼💐চতুর্দশ  অধ্যায়ের মাহাত্ম্য💐🌼🌻

🍇বিশেষ পোষ্ট🍇

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব ও গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I

''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।

তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।

অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

আজানুলম্বিত - ভুজৌ কনকাবদাতৌ,

সংকীর্ত্তনৈকপিতরৌ কমলায়তাক্ষৌ।

বিশ্বম্ভরৌ দ্বিজবরৌ যুগধর্ম্মপালৌ,

বন্দে জগৎপ্রিয়করৌ করুণাবতারৌ।

চতুর্দশ-অধ্যায়-গুণত্রয়-বিভাগ-যোগ

ভগবান শিব বললেন,- হে প্রিয়ে পার্বতি! শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ  অধ্যায়ের অসীম মাহাত্ম্য শ্রবণ কর। এই মাহাত্ম্য শ্রবণে তুমি অভূতপূর্ব আনন্দ লাভ করবে।

সিংহলদ্বীপে বিক্রম বেতাল নামে এক রাজা ছিলেন। একদিন তিনি তার ছেলে ও দুটি শিকারী কুকুর নিয়ে বনে মৃগয়া করতে গিয়েছিলেন, সেখানে পৌঁছেই তিনি একটি শিকারী কুকুরকে ছেড়ে দেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটি একটি খরগোশের পিছনে ধাওয়া করে। কুকুরের তাড়া খেয়ে মনে হল খরগোশটা যেন উড়ে চলেছে। দৌড়তে দৌড়তে  খরগোশটি এসে এক সুন্দর অতিশান্ত আশ্রমে পৌঁছাল। সেখানে হরিণেরা বৃক্ষ-ছায়ায় আরামে বসে আছে। বানরেরা আনন্দে গাছের ফল খাচ্ছে। ব্যাঘ্র শিশুরা হস্তিশাবকদের সঙ্গে খেলা করছে, আর সাপেরা ময়ূরের গায়ের ওপর দিয়ে চলাফেরা করছে।

এই বনে মহামুনি বস বাস করতেন। তিনি শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ অধ্যায় পাঠ করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতেন। মহারাজ বৎসের আশ্রমের নিকটে তার এক শিষ্য পদধৌত করার সময় শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ অধ্যায় পাঠ করছিলেন। সেই স্থানের মাটি ভিজে গিয়েছিল। ঠিক তখনই খরগোশটি দৌড়াতে দৌড়াতে এসে পা পিছলে সেখানে পড়ে মরে গেল, আর সঙ্গে সঙ্গে খরগোশটি এক দিব্য দেহ লাভ করল। তখন এক দিব্য বিমান এসে তাকে স্বর্গলোকে নিয়ে গেল। মুহূর্তকাল পরে খরগোশের খোঁজে কুকুরটি দৌড়াতে দৌড়াতে সেখানে পৌঁছাল। সেও ওই কাদার মধ্যে পিছলে পড়ল। কুকুরের দেহ ত্যাগ করে সে দিব্য দেহ লাভ করল এবং তাকেও উচ্চতর গ্রহলোকে নিয়ে যাওয়া হল।

"এটা দেখে বৎস মহারাজের শিষ্য হাঁসতে শুরু করলেন। রাজা বিক্রম বেতাল এইসব আশ্চর্যজনক ঘটনা দেখে আশ্রমে গেলেন এবং ব্রাহ্মণ শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাদের চোখের সামনে খরগোশ ও কুকুরের স্বর্গ-প্রাপ্তি কিভাবে সম্ভব হল?” ব্রাহ্মণ বললেন,- “এই বনে বাসকারী সম্পূর্ণ জিতেন্দ্রিয় মহামুনি বৎস সর্বদা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার চতুর্দশ অধ্যায় পাঠে নিমগ্ন ছিলেন। আমি তার শিষ্য এবং আমিও তার কৃপায় শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ অধ্যায় পাঠে সর্বদা মগ্ন। আমার গুরুদেবের পাদোদকে মাটি ভিজে কাদার সৃষ্টি হয়েছিল। সেখানে খরগোশ ও কুকুর পিছলে পড়ে মৃত্যুবরণ করার পর উচ্চ গ্রহলোক প্রাপ্ত হয়েছে।

আমি কেন হেঁসেছিলাম, এবার সেটাই আপনাকে বলছি,- মহারাষ্ট্রে প্রত্যুদক নামে এক নগর আছে যেখানে কেশব নামে এক ব্রাহ্মণ বাস করত। সে ছিল সব থেকে নিষ্ঠুর। তার স্ত্রীর নাম ছিল বিলোভনা। অতি চরিত্রহীনা এই নারী সর্বদা পরপুরুষের সঙ্গ উপভোগ করত। সেই কারণে তার স্বামী রেগে গিয়ে একদিন তাকে হত্যা করে। পরজন্মে সে কুকুর হয় এবং ব্রাহ্মণ কেশব তার পাপকর্মের ফল স্বরূপ খরগোশ হয়ে জন্মায়। এখন তারা উদ্ধার লাভ করল।

ভগবান্ শিব বললেন – প্রতিদিন শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ অধ্যায়ের মাহাত্ম্য শ্রবণ করে রাজা বিক্রম বেতালও নিয়মিতভাবে শ্রীমদ্ভগবদগীতার চতুর্দশ অধ্যায় পাঠ করতে শুরু করেন। দেহ ত্যাগের পর তিনি বৈকুণ্ঠে চলে যান। সেখানে তিনি ভগবান বিষ্ণুর শ্রীপাদপদ্মের নিত্য সেবায় যুক্ত হন। 

‘’কলের্দোষনিধেরাজন্ অস্তি হ্যেকো মহানগুণঃ I

কীর্ত্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তসঙ্গঃ পরং ব্রজেৎ I I‘’   (শ্রীমদ্ভাগবত)

কলি সমস্ত দোষের বটে, তথাপি হে রাজন ! কলির একটি মহানগুণ এই যে, কৃষ্ণকীর্ত্তনে জীব মায়াবদ্ধ হইতে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণরূপ পরতত্ত্ব লাভ করেন।

‘’নাম - সংকীর্ত্তন যস্য সর্বপাপ প্রণাশনম্।

প্রণামো দুঃখশমনস্তং নমামি শ্রীহরিং পরম্।।‘’

যে হরিনাম সংকীর্ত্তন করিলে ইহকাল ও পরকালের পাপরাশি নিঃশেষে দগ্ধ হয়,আমি সেই নামরূপী পরমাত্মা স্বরূপ শ্রীহরিকে প্রণাম করি। পরমকরুণাময় গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী এবং সকল বৈষ্ণব ভক্ত - পার্ষদদের শ্রীচরণকমলে নিরন্তর প্রার্থনা করি, সকলের জীবন যেনো রাধা-কৃষ্ণময়তায় পূর্ণ হয়ে, মঙ্গলময়, কল্যাণময়, ভক্তিময়, সুন্দরময় আর আনন্দময় হয়ে উঠুক।

"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!"

!! জয় শ্রীরাধাকৃষ্ণের জয় !! !! জয় সকল ভক্তবৃন্দের জয় !!