Tuesday, August 11, 2020

 

💐 শ্রীজন্মাষ্টমী 💐

🌻🌺🍁💐🏵💐🍁🌺🌻

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ

সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার অনন্ত কোটি সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবৎ প্রণাম I আজ ২৭শে শ্রাবণ, ১২ই আগষ্ট ইং রোজ - বুধবার পরাৎ পরব্রহ্ম শ্রী শ্রীকৃষ্ণাবির্ভাব (জন্মাষ্টমী) উপবাস। যাঁহারা কৃষ্ণকৃপা কৃষ্ণভক্তি লাভ করতে চান - তাঁহারা অবশ্যই এই ব্রত পালন করিবেন।  

(পারণ - পরদিন পূর্ব্বাহ্ন ০৯। ৩৩ মিঃ মধ্যে পারণ I শ্রীনন্দোৎসব )

"অনুগ্রহায় ভূতানাং মানুষং দেহমাশ্রিতঃ।

ভজতে তাদৃশীঃ ক্রীড়াঃ যাঃ শ্রুত্বা তৎপরো ভবেৎ।।‘’    (ভাগবত - ১০/২৪/২৭ )

অর্থাৎ,- '' ভগবান ভক্ত-অভক্ত নির্বিশেষে সকলকে অনুগ্রহ করবার জন্য গোলকধাম থেকে ভূলোকে এসে লীলা করেন।''

যথা তরোর্মূলনিষেচনেন 
তৃপ্যন্তি তৎস্কন্ধভুজোপশাখাঃ  
প্রাণোপহারাচ্চ যথেন্দ্রিয়াণাং 
তথৈব সর্বার্হণমচ্যুতেজ্যা ।।      (ভাগবত /৩১/১৪
অর্থাৎ,- গাছের মূলে জল সেচন করলে যেমন সেই গাছের কাণ্ড, ডাল, উপশাখা প্রভৃতি সকলেই তৃপ্তিলাভ করে এবং উদরে আহার্যদ্রব্য প্রদানের দ্বারা যেমন ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তি হয়, তেমনই শ্রীকৃষ্ণের পূজা করলে সমস্ত দেবতাদের পূজা হয়ে যায়।

যৎকীর্ত্তনং যৎস্মরণং যদীক্ষণং 
যদ্বন্দনং যচ্ছ্রবনং যদর্হণম্   
লোকস্য সদ্যো বিধুনোতি কল্মষং 
তস্মৈ সুভদ্রশ্রবসে নমো নমঃ ।।      (ভাগবত //১৫
অর্থাৎ,- আমি সেই সর্ব মঙ্গলময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি; যাঁর যশগাথা কীর্ত্তন, স্মরণ, দর্শন, বন্দন, শ্রবণ পূজনের ফলে সমস্ত পাপরাশি অচিরেই ধৌত হয়। 

তস্মাদ্ভারত সর্বাত্মা ভগবানীশ্বরো হরিঃ  
শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ স্মর্তব্যশ্চেচ্ছতাভয়ম্ ।।     (ভাগবত //
অর্থাৎ,- হে ভারত! সমস্ত দুঃখ-দুঃর্দশা থেকে যে মুক্ত হওয়ার বাসনা করে, তাকে অবশ্যই পরমাত্মা, পরম নিয়ন্তা এবং সমস্ত দুঃখ হরণকারী পরমেশ্বর ভগবানের কথা শ্রবণ, কীর্ত্তন স্মরণ করতে হবে।

বৈ পুংসাং পরো ধর্মো যতো ভক্তিরধোক্ষজে
অহৈতুক্যপ্রতিহতা যয়াত্মা সুপ্রসীদতি।।     (ভাগবত //
অর্থাৎ,- সমস্ত মানুষের পরম ধর্ম হচ্ছে সেই ধর্ম যার দ্বারা ইন্দ্রিয়জাত জ্ঞানের অতীত শ্রীকৃষ্ণে অহৈতুকী অপ্রতিহতা ভক্তি লাভ করা যায়। সেই ভক্তি-বলে অনর্থ নিবৃত্তি হয়ে আত্মা যথার্থ প্রসন্নতা লাভ করে।

শ্রবণং কীর্ত্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্   
অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদনম্ ।। 
ইতি পুংসার্পিতা বিষ্ণৌ ভক্তিশ্চেন্নবলক্ষণা  
ক্রিয়েত ভগবত্যদ্ধা তন্মন্যেহধীতমুত্তমম্ ।।     (ভাগবত //২৩-২৪
অর্থাৎ,- শ্রীকৃষ্ণের শ্রবণ, কীর্ত্তন, স্মরণ, পাদসেবন, অর্চন, বন্দন, দাস্য, সখ্য, আত্মনিবেদন- এই নব লক্ষণ-সম্পন্ন ভক্তি শ্রীকৃষ্ণে অর্পিত হয়ে সাধিত হলে সর্বসিদ্ধি লাভ হয়। এটিই শাস্ত্রের নির্দেশ। 

দেবর্ষিভূতাপ্তনৃণাং পিতৃণাং 
কিঙ্করো নায়মৃণী রাজন্  
সর্বাত্মনা যঃ শরণং শরণ্যং 
গতো মুকুন্দং পরিহৃত্য কর্তম্ ।।     (ভাগবত ১১//৪১
অর্থাৎ,- যিনি সমস্ত জাগতিক কর্তব্য পরিত্যাগ করে, সকলের আশ্রয় পরমেশ্বর ভগবানের শরণাগত হন, তখন আর তিনি দেবতাদের কাছে এবং পিতৃপুরুষদের কাছে ঋণী থাকেন না।

এবং প্রসন্নমনসো ভগবদ্ভক্তিযোগতঃ  
ভগবত্তত্ত্ববিজ্ঞানং মুক্তসঙ্গস্য জায়তে ।।     (ভাগবত //২০
অর্থাৎ,- এভাবেই শুদ্ধ সত্ত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে ভক্তিযোগে যুক্ত হওয়ার ফলে যাঁর চিত্ত প্রসন্ন হয়েছে, তিনি সব রকম জড় বন্ধন মুক্ত হয়ে ভগবৎ-তত্ত্ব বিজ্ঞান উপলব্ধি করেন। 

বাসুদেবে ভগবতি ভক্তিযোগঃ প্রয়োজিতঃ
জনয়ত্যাশু বৈরাগ্যং জ্ঞানং যদহৈতুকম্ ।।      (ভাগবত //
অর্থাৎ,- ভক্তি সহকারে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা হলে অচিরেই শুদ্ধ জ্ঞানের উদয় হয় এবং জড়-জাগতিক বিষয়ের প্রতি অনাসক্তি আসে

সতাং প্রসঙ্গান্মম বীর্যসংবিদো 
ভবন্তি হৃৎকর্ণরসায়নাঃ কথাঃ। 
তজ্জোষণাদাশ্বপবর্গবর্ত্মনি 
শ্রদ্ধা রতির্ভক্তিরনুক্রমিষ্যতি।।     (ভাগবত /২৫/২৫
অর্থাৎ,- পারমার্থিক মহিমামণ্ডিত ভগবানের কথা ভক্তসঙ্গেই কেবল যথাযথভাবে আলোচনা করা যায় এবং সেই কথা শ্রবণে হৃদয় শ্রবণেন্দ্রিয় তৃপ্ত হয়। ভক্তসঙ্গে সেই বাণী প্রীতিপূর্বক শ্রবণ করতে করতে শীঘ্র মুক্তির বর্ত্মস্বরূপ আমার প্রতি প্রথমে শ্রদ্ধা, পরে রতি এবং অবশেষে প্রেমভক্তি ক্রমে ক্রমে উদিত হয়। 

॥ গর্ভস্তুতী ॥

শ্রী গণেশায় নমঃ ।

দেবা ঊচুঃ ।

জগদ্যোনিরয়োনিস্ত্বমনন্তোঽব্যয় এব চ ।

জ্যোতিঃস্বরূপো হ্যনিশঃ সগুণো নির্গুণো মহান্ ॥ ১॥

ভক্তানুরোধাত্সাকারো নিরাকারো নিরঙ্কুশঃ ।

নির্ব্যূহো নিখিলাধারো নিঃশঙ্কো নিরুপদ্রবঃ ॥ ২॥

নিরুপাধিশ্চ নির্লিপ্তো নিরীহো নিধনান্তকঃ ।

স্বাত্মারামঃ পূর্ণকামোঽনিমিষো নিত্য এব চ ॥ ৩॥

স্বেচ্ছাময়ঃ সর্বহেতুঃ সর্বঃ সর্বগুণাশ্রয়ঃ ।

সর্বদো দুঃখদো দুর্গো দুর্জনান্তক এব চ ॥ ৪॥

সুভগো দুর্ভগো বাগ্মী দুরারাধ্যো দুরত্যয়ঃ ।

বেদহেতুশ্চ বেদশ্চ বেদাঙ্গো বেদবিদ্বিভুঃ ॥ ৫॥

ইত্যেবমুক্ত্বা দেবাশ্চ প্রণেমুশ্চ মুহুর্মুহুঃ ।

হর্ষাশ্রুলোচনাঃ সর্বে ববৃষুঃ কুসুমানি চ ॥ ৬॥

দ্বিচত্বারিংশন্নামানি প্রাতরুত্থায় য়ঃ পঠেত্ ।

দৃঢাং ভক্তিং হরের্দাস্যং লভতে বাঞ্ছিতং ফলম্ ॥ ৭॥

ইত্যেবং স্তবনং কৃত্বা দেবাস্তে স্বালয়ং য়য়ুঃ ।

বভূব জলবৃষ্টিশ্চ নিশ্চেষ্টা মথুরাপুরী ॥ ৮॥

॥ ইতি শ্রীব্রহ্মবৈবর্তে দেবকৃতা গর্ভস্তুতিঃ সম্পূর্ণা ॥


ব্রজ রমণীগণ তেজল লাজ

ধাওল নন্দমহল গৃহমাঝ ।।

বিগলিত কুন্তল অঞ্চল বাস

চকিত বিলোকন গদ গদ ভাষ ।।

হেরই নন্দতনয়- মুখচান্দ

দীঠি পাওল পুনি চিরদিন অন্ধ ।।

আদরে সাধি রমণী কর পাতি

যদুমণি মাগি ধরত নিজ ছাতি ।।

চুম্বনে অধরসুধা করু পান

কর গহি দেই আলিঙ্গন দান ।।

⚜♻⚜

কোথা গেল নন্দ ঘোষ ,হের দেখ আসি

তব গৃহে উদয় হইয়াছে কত শশী ।।

এতেক দিবসে জন্ম হইল সফল

মনের আনন্দে দেখ বদন কমল ।।

যশোদার পুত্র হইল পড়ি গেল সাড়া

মহানন্দে ধাইয়া আইল যত গোয়াল পাড়া ।।

নন্দের মন্দিরে রে গোয়াল আইল ধাইয়া

হাতে লড়ি কান্ধে ভার নাচে তাথৈ থৈয়া ।।

সবে বলে নন্দ ঘোষ বড় ভাগ্য তোর

তোমার ঘরে নাহি আজি আনন্দের ওর ।।

নাচেরে হরিষে নন্দ পুত্র - মুখ চাইয়া

চৌদিকে গোয়ালা নাচে করতালি দিয়া ।।

স্বর্গে নাচে দেবগণ পাতালে নাচে ফণি

অন্তঃপুরে রাণী নাচে পাইয়া নীলমণি ।।

শিব নাচে ব্রহ্মা নাচে আর নাচে ইন্দ্র

গোকুলের গোয়ালা নাচে পাইয়া গোবিন্দ ।।

দধি হরিদ্রা আনে আর গোরোচনা

দুবাহু পসারি আসে আহিরী অঙ্গনা ।।

যদুনাথ দাসে বলে শুন নন্দরাণী

কত পুণ্যফলে তুমি পাইলা নীলমণি ।।

⚜♻⚜

 আশীর্বাদ কর সবে হইয়া সদয় ,

কল্যাণ কুশলে রহু আমার তনয়

তোমা সবাকার পদ ভরসার বলে ,

নীলমণি পাইয়াছি অনেক পুন্যফলে

সাত নাহি পাঁচ নাহি এই ধন সারা

পরাণ পুতলি দুটি নয়নের তারা

চিরজীবী হইয়া গোকুলে করু বাস ,

বড় হইলে হবে তোমা সবাকার দাস

যশোদা মায়ের কথা শুনিয়া শুনিয়া

দীনবন্ধু দাস হাসে উলসিত হইয়া ।।


No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...