Thursday, February 6, 2020


শ্রীশ্রীমন্নিত্যানন্দ
নিত্যাশ্রীরাধিকা নাম আনন্দ রসবিগ্রহ। উভয়োর্মিলন্নাম নিত্যানন্দ বসুন্ধরে ।।
(
ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে ধরণী শেষ সংবাদে নিত্যানন্দ প্রভুর অষ্টোত্তর শতনাম স্তোত্রম্।)

নিত্যা রাধারাণীর নাম, যিনি আনন্দ ঘন রসের মূর্তি।
*
নন্দস্তু আত্মজ উত্পন্নে জাতাহ্লাদ।*
আহ্লাদ বা আনন্দ জাত হল বা জন্ম হল।।রসরাজ কৃষ্ণ বলরাম অভিন্ন তত্ত্ব সেই বলরাম নিত্যানন্দ আনন্দ রস একিভুত হয়ে *নিত্যানন্দ* হয়েছেন।

ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ, সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ
অনাদিরঃ আদি গোবিন্দ, সর্বকারণঃ কারণম্ ।।

অর্থাৎ কৃষ্ণই পরম ঈশ্বর, যাঁর বিগ্রহ সর্বদা আনন্দদায়ক। তিনি সকল অবতারেরও আদি, এবং সকল কারণের  কারণ। তাঁর নিজ বাস গোলক ধাম ।গোলক ধামের তিন টি ভাগ শ্বেতদ্বীপ, গোলক বৃন্দাবন (বিশদ জানতে ব্রহ্মসংহিতা দেখুন )।।
গোলক ধামের নীম্ন ভাগে বৈকুণ্ঠধাম যাঁহার অধিশ্বর নারায়ণ তার চার দিকে অযোধ্যা আদি অনন্ত বৈকুণ্ঠ বিরাজমান কিঞ্চিৎ নীম্নে সদাশিব ধাম নারায়ণেরই অভিন্ন স্বরূপ (প্রমাণ সনাতন গোস্বামী কৃত বৃহৎ ভাগবতামৃত দ্রষ্টব্য)
তন্নীম্নে বিরজা কারণ সাগর, সেখানে শেষ শয্যায় এক মহাপুরুষ শয়ন করে আছেন, তিনি কারণার্নবশায়ী প্রথম পুরুষ যিনি অনন্ত কোটি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কর্তা তার নীচে গর্ভোদক শায়ী বিষ্ণু দ্বিতীয় পুরুষ, ইনি একটি ব্রহ্মাণ্ডের পরিচালক। ইনার নাভিকমল থেকে ব্রহ্মার উৎপত্তি।
তৃতীয় পুরুষ ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু ইনি পরমাত্মা রূপে সকল জীবের হৃদয়ে বিরাজ করেন পালন করেন।
ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে চতুর্দশ ভুবন যথা- ভূ,র্ভুব,স্ব,মহ,জন,তপ,সত্য নীম্নে অতল, বিতল, সুতল, তলাতল, রসাতল, মহাতল,পাতাল (প্রমাণ, রূপ গোস্বামীপাদের লঘুভাগবতামৃত)
শ্রীকৃষ্ণের প্রধান অংশ বলরাম তিনিই অংশে সংকর্ষন শেষজী যিনি সহস্র ফনায় পৃথিবী ধারণ করে আছেন।
সেই দ্বাপর যুগের কৃষ্ণ বলরাম এবার কলিতে নিতাইগৌরাঙ্গ রূপে প্রকট হলেন
চৈতন্য-সিংহের নবদ্বীপে অবতার (গৌরাঙ্গের সন্ন্যাস নাম শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য)
সিংহগ্রীব সিংহবীর্য্য সিংহের হুঙ্কার ।।

নবদ্বীপধামে মহাপ্রভুর জন্ম হয়
কাটোয়া তাহার ধাম জানিহ নিশ্চয়।।
*একচক্রা জন্মভূমি, খড়দহে বাস *
*
নিত্যানন্দের দুই ধাম, জানিবে নির্যাস।।*
অদ্বৈত প্রভুর ধাম, শান্তিপুরে হয়
গৌড়ীয়-পঞ্চধাম, জানহ নিশ্চয়।।(পাট পর্যটন)
*রাঢ়দেশে একচক্রা নামে আছে গ্রাম *
*
যঁহি অবতীর্ণ নিত্যানন্দ বলরাম।।*

সাধারণ সমাজে এখনও অনেক খানি অজ্ঞাত বললেই চলে একচক্রা ধামকে স্থান টি বীরভূমের সাঁইথিয়া আর রামপুরহাটের প্রায় মাঝামাঝি।একচক্রা-গর্ভবাস নামেই আখ্যাত রামপুর হাট আর সাঁইথিয়ার মাঝে যে বাস গুলি যোগাযোগ রক্ষা করে, সেই বাসে উঠে বীরচন্দ্রপুর নামক স্থানে নামলেই, একচক্রা ধামের শ্রী শ্রীনিত্যানন্দ-জন্মস্থান (নিতাই বাড়ি) রত্নগর্ভ একচক্রাধামের পূণ্যভূমিতেই শ্রীমন্নিত্যানন্দপ্রভুর অলোক অবতরণ। ১৪৭৩ খৃস্টাব্দে ১২ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ।মাঘমাস শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে জন্ম।
**রাঢ়দেশে একচক্রা নামে গ্রাম ধন্য।*
*
যঁহি নিত্যানন্দরাম হৈলা অবতীর্ণ ।।**
সর্ব অবতারী কৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান
তাঁহার দ্বিতীয় দেহ শ্রীবলরাম ।।
একই স্বরূপ দোহে ভিন্ন মাত্র কায়
আদ্য কায়ব্যুহ কৃষ্ণ লীলার সহায়।।
সেই কৃষ্ণ নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য চন্দ্র।
সেই বলরাম সঙ্গে শ্রীনিত্যানন্দ ।। শ্রীবলরাম গোসাঞি মূল সংকর্ষন
পঞ্চরূপ ধরি করে কৃষ্ণের সেবন ।।
আপনে করেন কৃষ্ণ-লীলার সহায়।
সৃষ্টি লীলা কার্য করে ধরি চারি কায় ।।
সৃষ্ট্যাদিক সেবা তাঁর আজ্ঞার পালন
শেষ রূপে করে কৃষ্ণের বিবিধ সেবন ।।
সর্ব রূপে আস্বাদয়ে কৃষ্ণ সেবানন্দ
সেই রাম চৈতন্যের সঙ্গে নিত্যানন্দ ।।
প্রকৃতির পার পরব্যোম নামে ধাম
কৃষ্ণ বিগ্রহ যৈছে বিভুত্বাদি গুনবান্।।
সর্বোপরি শ্রীগোকুল ব্রজলোকধাম
শ্রীগোলক শ্বেতদ্বীপ বৃন্দাবন নাম ।।
সর্বগ অনন্ত বিভু কৃষ্ণ তনু সম
উপর্য্যধো ব্যাপি আছে নাহিক নিয়ম II
ব্রহ্মাণ্ডে প্রকাশ তাঁর কৃষ্ণের ইচ্ছায়
একই স্বরূপ তার নাহি দুই কায়

ব্রহ্মাণ্ডের অন্তে প্রকৃতি তত্ত্ব তাঁর পরে পরব্যোম তাঁর উপরে বৈকুণ্ঠধাম I তাঁর উপরে গোলক ধাম এর তিনটি ভাগ শ্বেতদ্বীপ, গোলক বৃন্দাবন।বৃন্দাবনের আবার তিনটি ভাগ মথুরা দ্বারকা গোকুল সমস্ত দিব্য ধাম সর্বগ্র মানে সব জায়গায় গমন করতে পারে অনন্ত বিভু ভগবানের মতই ।কৃষ্ণের যখন ইচ্ছা হবে লীলা করবার তখন ধাম প্রকট হবে আবার তাঁর ইচ্ছা হলে এই ধাম সেই ধামে গিয়ে মিশে যাবে (ব্রহ্মসংহিতা)

ধামের সকল বৃক্ষ কল্পবৃক্ষ ভূমি চিন্তা মণিময় ।জল অমৃত তুল্য
চিন্তামনি ভূমি কল্পবৃক্ষ ময় বন চর্মচক্ষে দেখে তারে প্রপঞ্চের সম ।।
প্রেম নেত্রে দেখে তার স্বরূপ প্রকাশ
গোপ গোপী সঙ্গে যাহা কৃষ্ণের বিলাস ।।
*সর্বাশ্রয় সর্ব্বাদ্ভুত ঐশ্বর্য অপার *
*
অনন্ত কহিতে নারে মহিমা যাহার ।।*
*
তুরীয় বিশুদ্ধ সত্ত্ব সংকর্ষণ নাম *
*
তেঁহ যার অঙ্গ সেই নিত্যানন্দ রাম ।।*
সেই নিত্যানন্দ প্রভুর জন্মস্থান একটি অনবদ্য অনুপম স্থান মা জাহ্নবা ঠাকুরাণী একচক্রায় এলে স্বপ্নে যোগপীঠ দর্শন করেন, ভক্তিরত্নাকরে পাওয়া যায়।
স্বপ্নচ্ছলে দেখে একচক্রার বসতি।
দিতে নাই উপমা সর্বাংশে শোভা অতি ।।
তালবৃন্ত, চামর, চন্দন চুয়া আর
সুবাসিত বারি পাত্রে , নানা পুস্পহার।।
তাম্বুল সম্পূট আদি লইয়া সর্ব জনে
দেখে নিত্যানন্দ শোভা , রত্নসিংহাসনে ।।
শ্রীনিত্যানন্দের বাম দক্ষিণ দিকেতে
বসুধা জাহ্নবা শোভা উপমা কি দিতে ।।
দেখি প্রেম রীত দাসী তাম্বুল লইয়া
বসুধা জাহ্নবা করে দেন হৃষ্ট হইয়া।।
নিত্যানন্দ মুখে দোঁহে তাম্বুল যোগায়।
প্রসাদী তাম্বুল, প্রভূ দোঁহারে ভুঞ্জায় II
আপনা গলার মালা দুহু গলে দিয়া।
রহে সুভঙ্গিতে অঙ্গে অঙ্গ মিশাইয়া ।।
দেখিতেই পরম অদ্ভুত এনা রঙ্গ।
শ্রীজাহ্নবা -ঈশ্বরীর হৈল নিদ্রা ভঙ্গ।।

শ্রীধাম একচক্রা স্বকীয় বৈশিষ্টে বিদ্যমান।
()
দয়াল নিতাই চৈতন্যবলেনাচ রে আমার মন।
নাচ রে আমার মন, নাচ রে আমার মন ।।
()
(এমন, দয়াল তো নাই হে, মার খেয়ে প্রেম দেয়)
(ওরে) অপরাধ দূরে যাবে, পাবে প্রেম-ধন।।
( নামে অপরাধ-বিচার তো নাই হে)

(তখন) কৃষ্ণ-নামে রুচি বে, ঘুচিবে বন্ধন।।
()
(কৃষ্ণ-নামে অনুরাগ তো বে হে)
(তখন) অনায়াসে সফল বে জীবের জীবন।।
(কৃষ্ণরতি - বিনা জীবন তো মিছে হে)
(শেষে) বৃন্দাবনে রাধা-শ্যামের পাবে দরশন।।

(গৌর-কৃপা লে হে।।

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...