Friday, February 28, 2020


শ্রীশ্রী সারস্বত গৌড়ীয় আসন মিশনের প্রতিষ্ঠাতা নিত্যলীলা প্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রী শ্রীমদ ভক্তিবিবেক ভারতীগোস্বামী মহারাজ
(আবির্ভাব)
বাংলাদেশের যশোহর জেলার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে শ্রীল মহারাজ আবির্ভূত হন।অল্প বয়সে তিনি পিতৃহারা হইয়াছিলেন।জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বিধবা মাতৃদেবীর সহিত কিছুকাল বসবাস পূর্ব্বক স্কুলের পাঠ্য বিষয় অধ্যয়ন করিয়া তাহাতে পারদর্শিতা লাভ করেন।সেই সময় ব্রহ্ম মাধবগৌড়ীয়সম্প্রদায়ের আচার্য্যচূড়ামণি শ্রী শ্রীমদ ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর প্রভুপাদের  বিশ্বপ্রেমিক শ্রীশ্রীকৃষ্ণচৈতন্যমহাপ্রভুর নির্ম্মল প্রেমভক্তি ধর্মের প্রচার বার্ত্তা শ্রবণে তাঁহার শ্রীচরণে আকৃষ্ট হইয়া সংসারের সকল প্রকার বন্ধন ভোগ বাসনা মলবৎ পরিত্যাগ পূর্ব্বক (২৬) বৎসর বয়সে তিনি শ্রীল প্রভুপাদের শ্রীচরণে চিরআশ্রয় গ্রহণ করতঃ শ্রীহরিনাম   বৈষ্ণবী দীক্ষা গ্রহণ করেন। তাঁর দীক্ষা নাম 'শ্রীপাদ নয়নাভিরাম দাসাধিকারী'

শ্রীল গুরুপাদপদ্ম প্রভুপাদের শ্রীচরণে থাকাকালীন একদিন প্রবল ঝড়বৃষ্টির মধ্যেও মঠের শ্রীবিগ্রহগণের নৈবেদ্য প্রস্তুত কারক পাকপাত্র মার্জ্জন ধৌত করিয়া দেওয়ায় যথাক্রমে পাক কার্য্য সুসম্পন্ন  হইয়াছিল।এইরূপ প্রীতি অনুরাগের সহিত সেবার আদর্শ দর্শন করিয়া শ্রীল প্রভুপাদ অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়া ২৯শে কার্ত্তিক (১৩২৮) ১৫ই নভেম্বর (১৯২১) ৩০ দামোদর (৪৩৫ গৌরাব্দ) মঙ্গলবার শ্রীরাসপূর্ণিমা উর্জ্জাব্রত সমাপ্তির দিন শ্রীপাদ নয়নাভিরাম ভক্তিশাস্ত্রী প্রভুকে যথা বিহিত বৈদিক পাঞ্চরাত্রিক বিধানানুসারে দিব্য ত্রিদণ্ড সন্ন্যাস প্রদান করেন।তাঁহার সন্ন্যাস নাম ''শ্রীমদ ভক্তিবিবেক ভারতীগোস্বামী মহারাজনামে বৈষ্ণবজগতে খ্যাত হইলেন।

শ্রীল মহারাজ  বহু ভাগ্যবান ব্যক্তিকে শ্রী শ্রীমন্মহাপ্রভুর প্রচারিত শুদ্ধভক্তি ধর্মে আকৃষ্ট করিয়াছিলেন। বহু স্থানে নির্ভয়ে প্রচার করায় তদীয় পরমারাধ্যতম শ্রীল গুরুপাদপদ্মে বিশ্বব্যাপী শ্রীগৌড়ীয়মঠ সমূহের আচার্য্যভাস্কর শ্রীমদ ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামীঠাকুর অত্যন্ত আনন্দলাভ করিয়াছিলেন। শ্রীল প্রভুপাদের অপ্রকট পরে নির্ভীক প্রচার বিষয়ে গুরুভ্রাতাদের সহিত মতের অমিল হওয়ায় সর্ব্বত্যাগী বিরক্ত সন্ন্যাসী শ্রীল মহারাজ একাকী হরিভজন করিবার অভিলাষে তাঁহার শ্রীগুরুদেবের আবির্ভাব স্থান শ্রীমন্মহাপ্রভুর লীলাভূমিতে শ্রীপুরুষোত্তমধামে শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবকে আশ্রয় করিয়া নামাচার্য্য শ্রীল হরিদাসঠাকুরের সমাধির নিকটে বাণীভবনে অবস্থান পূর্ব্বক শ্রীমন্দিরের নীলচক্র দর্শন করিয়া নিষ্ঠার সহিত একলক্ষ হরিনাম গ্রহণ করিতেন এবং শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্রকে আশ্রয় করিয়া সেই সুনীল মেঘবরণ শ্যামসুন্দর শ্রীকৃষ্ণমূর্তিকে ধ্যান করিতে করিতে অকিঞ্চন ভাবে দিন যাপন করিতেন।

এইরূপ ৯বৎসর অতীত হইবার পরে শ্রীসারস্বতগৌড়ীয়আসন মিশনের আচার্য্যদেব - সভাপতি ত্রিদণ্ডিস্বামী শ্রীমদ ভক্তিশ্রীরূপ সিদ্ধান্তী গোস্বামীমহারাজ তাঁহার শ্রীগুরুদেবের প্রেরণা ক্রমে আবার শ্রীল মহারাজকে তাঁহার সঙ্গ প্রদানের জন্য একান্ত ভাবে পত্র দ্বারা প্রার্থনা জানান যে তাঁহার দিব্য সঙ্গ না পাইলে তিনি প্রাণত্যাগ করিবেন।পত্রখানি পাঠ করিয়া অশ্রুপূর্ণ নয়নে শ্রীল ভক্তিবৈভব নারায়ণমহারাজকে বলিতে লাগিলেন ''সিদ্ধান্তিমহারাজ লিখেছেন,-তাঁকে আমার সঙ্গ না দিলে তিনি প্রাণত্যাগ করিবেন।'' তারপর সেই মুহুর্ত্ত্যেই একাকী হরিভজনের অভিলাষ পরিত্যাগ করিয়া তাঁহার সহিত মিলিত হইবার প্রতিশ্রুতি দিয়া পত্র প্রেরণ করিলেন। অনন্তর তাঁহারা উভয়ে মিলিয়া শ্রীগুরুদেবের সংকল্পিত অবশিষ্ট অভীষ্ট পূরণের জন্য বদ্ধ পরিকর হইয়া ২৪ পরগণার বাসুদেব পুরে একটি অস্থায়ী  আসন মঠ স্থাপন করেন।কালক্রমে তাহা অবশ্য ছাড়িয়া দিয়া তাঁহারা শ্রীগুরুদেব শ্রীল প্রভুপাদের অভিষ্ঠানুসারে শুদ্ধভক্তি প্রচারার্থে কলিকাতা মহানগরীতে ভবানীপুরে ''শ্রীসারস্বত গৌড়ীয়আসন ও মিশন'' স্থাপন করিয়া শ্রীবিগ্রহ সেবা প্রকট করেন।ইহার অব্যবহিত পরে পুরীধামে শ্রীসারস্বতগৌড়ীয়আসন ও মিশনের একটি শাখা স্থাপন করেন।

১৩৩৫ বঙ্গাব্দে,(৫২) বৎসর বয়সে শ্রীল মহারাজ মাঘীশুক্লা শ্রীপঞ্চমী তিথিতে শ্রীজাহ্নবীদেবীর তট প্রদেশে কলিকাতা মহানগরীস্থিত শ্রীআসনে অরুণোদয় কালে শ্রীহরিনাম জাপ করিতে করিতে নিত্য লীলায় প্রবেশ করেন।

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...