মনুষ্য জন্মের মুল উদ্দেশ্য ???
⚜●●●●●●●●●●●●⚜●⚜●●●●●●●●●●⚜
শ্রীমদ্ভাগবতে মানব জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে…
"আপন্ন সংসৃতিং ঘোরাং যন্নাম বিবশো গৃহণ্।
ততঃ সদ্যো বিমুচ্যেত যদ্বিভেতি স্বয়ং ভয়ম্॥"
অর্থাৎ"জন্ম মৃত্যুর ভয়ংকর আবর্তে আবদ্ধ মানুষ বিবশ হয়েও পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য নাম উচ্চারণ করতে করতেই অচিরেই সংসার চক্র থেকে মুক্ত হয়ে যাবে I সেই কৃষ্ণনামে স্বয়ং মহাকালও ভীত হন।"(শ্রীমদ্ভাগবত১/১১৪)
"লব্ধা সুদুর্লভমিদং বহু সম্ভবান্তে
মানুষ্যমর্থদমনিত্যমনীহ ধীরঃ।
তূর্ণং যতেত ন পতেদনুমৃত্যু যাবন্
নিঃশ্রেয়সায় বিষয়ঃ খলু সর্বতঃ স্যাৎ॥‘’
(শ্রীমদ্ভাগবত ১১/৯/২৯)
অর্থাৎ,একটি জীব মনুষ্য-দেহ লাভ করে বহু জন্ম-মৃত্যুর পর।
যদিও এই মনুষ্যজীবনও অনিত্য,তবুও এই জীবন জীবকে পূর্ণসিদ্ধি লাভের সুযোগ প্রদান করে।পূর্ণ সিদ্ধি হল…যা পেলে আর কোনও পাওয়ার বাকি থাকে না,তা হল "কৃষ্ণপ্রেম"।অতএব ধীর ব্যক্তির কর্তব্য হচ্ছে অবিলম্বে এই পূর্ণসিদ্ধি লাভের জন্য প্রযত্ন করা। মুর্খ মানুষ সর্বদা এই দুঃখময় জগৎ
এ
ইন্দ্রিয় সুখ ভোগের জন্য কতকিছুই চেষ্টা ও ভাবনা করে থাকে। সমস্ত মানবেতর(নিম্নযোনি) জীবের উদ্দেশ্য হচ্ছে জন্ম-মৃত্যুর মধ্যে থেকে আহার-নিদ্রা-দেহরক্ষা-মৈথুন সুখ লাভের জন্য চেষ্টা চালানো।
কিন্তু মানব জীবনের যথার্থ উদ্দেশ্য হচ্ছে জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আর পতিত না হয়ে নিজের বাস্তবিক স্বরূপ ও সম্বন্ধ
নিরূপণ করে নিত্যানন্দময় শ্রীভগবানের শ্রীচরণ কমলে নিজকে আত্মসমর্পণ করে জন্ম জন্মান্তরের চক্র থেকে মুক্ত হওয়া ।
অতএব কৃষ্ণভজন করাই মানব জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।
⚜
শ্রীমদ্ভাগবতে কুন্তিদেবীর উক্তি…
"শৃণ্বন্তি গায়ন্তি গৃণন্ত্যভীক্ষ্ণশঃ
স্মরন্তি নন্দন্তি তবেহিতং জনাঃ।
ত এব পশ্যন্ত্যচিরেণ তাবকং
ভবপ্রবাহোপরমং পদাম্বুজম্॥‘’
হে শ্রীকৃষ্ণ! যাঁরা তোমার অপ্রাকৃত চরিত্র-কথা নিরন্তর শ্রবণ করছেন,
কীর্ত্তন করেন,স্মরণ করেন,এবং যাঁরা তোমার নাম অবিরাম উচ্চারণ করেন,অথবা অন্যে তোমার গুণমহিমা আলোচনা করলে আনন্দিত হন,তাঁরা অবশ্যই তোমার শ্রীপাদপদ্ম অচিরেই দর্শন করতে পারেন,যা একমাত্র জন্ম-মৃত্যুর প্রবাহকে নিবৃত্ত করতে পারে।"(শ্রীমদ্ভাগবত ১/৮/৩৬)
আমাদের মনুষ্য জন্মের তথা এই কলিযুগে র একমাত্র উদ্দেশ্য হল…সৎগুরু চরণাশ্রিত হয়ে নিরন্তর ভগবানের নাম,গুণ,লীলামহিমা কীর্ত্তন
করা, হরিনাম সংকীর্ত্তনে পাগল হওয়া ও ভগবানের নিত্য প্রেমময়ী সেবায় নিয়োজিত হয়ে সাধু,গুরু, বৈষ্ণবের সেবা করা,আর এতেই হবে সেই অমুল্যধন "কৃষ্ণপ্রেম" লাভ ও ভগবদ্ প্রাপ্তি।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর উপদেশ:-
“কলিযুগ-ধর্ম হয় নাম- সংকীর্ত্তন
চারিযুগে চারি ধর্ম-জীবের কারণ॥
চারিযুগে চারি ধর্ম-জীবের কারণ॥
অতএব কলিযুগে নামযজ্ঞ সার।
আর কোন ধর্ম কৈলে নাহি হয় পার॥
আর কোন ধর্ম কৈলে নাহি হয় পার॥
দিনরাত্রি নাম লয় খাইতে শুইতে।
তাঁহার মহিমা বেদে নাহি পারে দিতে॥
তাঁহার মহিমা বেদে নাহি পারে দিতে॥
শুন, মিশ্র, কলিযুগে নাহি তপ-যজ্ঞ।
যেই জন ভজে কৃষ্ণ, তাঁর মহাভাগ্য II
যেই জন ভজে কৃষ্ণ, তাঁর মহাভাগ্য II
অতএব গৃহে তুমি কৃষ্ণভজ গিয়া।
কুটিনাটি পরিহরি একান্ত হইয়া॥
কুটিনাটি পরিহরি একান্ত হইয়া॥
সাধ্য-সাধন-তত্ত্ব যে-কিছু সকল।
হরিনাম- সংকীর্ত্তনে মিলিবে সকল॥
হরিনাম- সংকীর্ত্তনে মিলিবে সকল॥
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
এই শ্লোক নাম বলি লয় মহামন্ত্র।
ষোল নাম বত্রিশ-অক্ষর এই তন্ত্র॥
ষোল নাম বত্রিশ-অক্ষর এই তন্ত্র॥
সাধ্যসাধন-তত্ত্ব জানিবে সে তবে॥”
(চৈঃ ভাঃ আঃ ১৪ অধ্যায়)
No comments:
Post a Comment