Tuesday, January 21, 2020


কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্ !

ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ, সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ
অনাদিরঃ আদি গোবিন্দ, সর্বকারণঃ কারণম্ ।।

অর্থাৎ কৃষ্ণই পরম ঈশ্বর, যাঁর বিগ্রহ সর্বদা আনন্দদায়ক। তিনি সকল অবতারেরও আদি, এবং সকল কারণের  কারণ।।
চৈতন্যচরিতামৃতে বলা আছে- একলা ঈশ্বর কৃষ্ণ আর সব ভৃত্য।
আবার শ্রীমদ্ভাগবতম   বলা আছে- কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্ ! অর্থাৎশ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন  ভগবান।
ব্যাস দেবের পিতা পরাশর মুনি ভগবানের সম্বন্ধে বলেছেন- সমগ্র ঐশ্বর্য,সমগ্র বীর্য,সমগ্র যশ,সমগ্র সৌন্দর্য,সমগ্র শক্তি সমগ্র বৈরাগ্য যার মধ্যে বিদ্যমান তিনিই ভগবান।"একমাত্র কৃষ্ণের মাঝেই
সব কিছু বিদ্যমান।‘’

বৈদিক শাস্ত্রমতে সিদ্বান্ত আছে যে ,পারমাৰ্থিক উন্নতির চরম পরীক্ষা হয় মৃত্যুর সময় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন,…

"
যং যং বাপি স্মরণ  ভাবং ত্যজতন্তে কলেবরম I
তং তমেবৈতি কৌন্তেয় সদা তদ্ভাবভাবিত"।।

অর্থাৎ যাঁরা কৃষ্ণভক্তির অনুশীলন করছেন ,তারা জানেন যে ,তাদের পরীক্ষা হবে মৃত্যুর সময় মৃত্যুর সময় যদি পরমেশ্বর ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণকে স্মরণ করা যায় ,তা হলে তৎক্ষণাৎ গোলোক বৃন্দাবন বা কৃষ্ণলোকে পৌছানো যায় এবং তার ফলে তার জীবন সাৰ্থক হয়।

পরমেশ্বর ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণের কৃপায় ভক্ত বুঝতে পারেন যে ,জীবনের অস্নিম সময় ঘনিয়ে এসেছে এবং তাই তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে ভগবৎ সেবার পন্থায় ব্ৰহ্মভূত স্তরে স্থিত হয়ে,দেহত্যাগ করতে প্ৰস্তুত হন
শ্রীমদ্ভবগদ্গীতার অনেক শ্লোকে বৰ্ণনা করা হয়েছে , কিভাবে স্বেচ্ছায় এই দেহত্যাগ করে ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়া যায় মৃত্যুর সময় ভক্ত ভক্তিযোগের পন্থা অনুশীলন করে,পরমেশ্বর ভগবানের দিব্য নাম হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কীর্ত্তন প্রচার করে তারপর দৈহিক মানসিক সুস্থ অবস্থায় দেহত্যাগ করার জন্য মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে।প্ৰত্যেক ভক্তই কামনা করেন যে ,দৈহিক মানসিক সুস্থ অবস্থায় যেন দেহত্যাগ করা যায়। যেন আমরা সুস্থ অবস্থায় হরিনাম করে মৃত্যুবরণ করতে পারি। মহারাজ কুলশেখর তার মুকুন্দমালা স্তোত্রপাঠ করে এই বাসনা ব্যক্ত করেছেন,…

"
কৃষ্ণ তদীয়পদপঙ্কজপঞ্জরান্ত,মদ্যৈ মে বিশতু মানসরাজহংসঃ।
প্ৰাণপ্ৰয়াণসময়ে কফবাতপিত্ত,কণ্ঠাবরোধনবিধৌ স্মরণং কুতন্তে"
"
অর্থাৎ মহারাজ কুলশেখর সুস্থ অবস্থায় দেহত্যাগ করতে চেয়েছিলেন এবং তাই তিনি পরমেশ্বর ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণের কাছে প্ৰাৰ্থনা করেছিলেন যে,তিনি যেন শরীর মন সুস্থ থাকাকালে দেহত্যাগ করতে পারেন" মৃত্যুর সময় কফ,বায়ু পিত্তের দ্বারা মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায় তখন যেহেতু কোন কিছু উচ্চারণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়,তাই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপাতেই কেবল মৃত্যুর সময় হরেকৃষ্ণ নাম উচ্চারণ করা যায়।
"
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে I
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে II‘’

ভক্তিযোগে স্থিত হয়ে যোগী তার দেহত্যাগ করে চৌদ্দভুবনের কোন এক উর্ধ্বলোকে গমন করতে পারেন সিদ্ধযোগী যোগ অভ্যাসের দ্বারা,তার ইচ্ছা অনুসারে যে কোনও সময়ে দেহত্যাগ করতে পারেন।
যেহেতু ভক্ত নিরন্তর পরমেশ্বর ভগবানের চিন্তায় মগ্ন, তার সেবা প্রীতি ভরে করেন,তার নাম রুপ যশ লীলা শ্রব কীর্ত্তন প্রচার করেন। তাই তিনি তার গুরুদেবের আদেশ মত পরমেশ্বর ভগবানের চরণে সমর্পিত হয়ে মৃত্যু বরন করেন।

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...