ভগবানকে দর্শন করার পন্থা
ভগবান প্রতিটি জীবের সুহৃদ বা প্রিয়তম বন্ধুরুপে সকলের হৃদয়ে বিরাজ করছেন । জীবকে তার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভগবান সর্বদাই অত্যন্ত আকুল হয়ে রয়েছেন । সাক্ষীরুপে জীবের সঙ্গে বিরাজ করে ভগবান জীবকে সমস্ত জড় - জাগতিক সুখভোগ করার সুযোগ প্ৰদান করেন , কিন্তু সুযোগ পেলেই ভগবান জীবকে জড় জগতে সুখভোগ করার চেষ্টা পরিত্যাগ করে , ভগবৎ - মুখী হওয়ার এবং ভগবানের শরণাগত হওয়ার উপদেশ দেন ।
কেউ যখন শ্ৰীগুরুদেবের আদেশ পালন করতে ঐকান্তিকভাবে আগ্রহী হন, তখন তার এই সংকল্প ভগবানকে দৰ্শন করারই সামিল হয় । বেদে বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে, শ্রীগুরু দেবের
নিৰ্দেশ পালন করার মধ্যেই ভগবানকে সাক্ষাৎ করা । তাকে বলা হয় বাণীসেবা ।
পুর্বতন আচার্য্যবৃন্দ উল্লেখ করেছেন যে , শ্রীগুরু দেবের বাণীর সেবা করা উচিত । শিষ্যের কৰ্তব্য হচ্ছে শ্রীগুরু দেবের
আদেশ পালনে দৃঢ়সংকল্প হওয়া । কেবলমাত্র তা করার ফলেই পরমেশ্বর ভগবানকে দর্শন করা যায় ।
শ্ৰীল বিশ্বনাথ চক্রবর্ত্তী ঠাকুর সেই সম্বন্ধে বলেছেন যে , যতক্ষণ পৰ্যন্ত ভগবৎ প্রেমের অতি উন্নত স্তরে উন্নীত না হওয়া যায় , ততক্ষণ পৰ্যন্ত ভগবানের স্বরপ দৰ্শন করা যায় না । কিন্তু , কেউ যদি নিষ্ঠা সহকারে শ্ৰীগুরুদেবের নিৰ্দেশ পালন করতে থাকেন, তা হলে বুঝতে হবে যে, তিনি কোন না কোনও ভাবে ভগবানের সঙ্গে রয়েছেন । ভগবান যেহেতু হৃদয়ে বিরাজমান, তাই তিনি ঐকান্তিক শিষ্যকে অন্তর থেকে উপদেশ দিতে পারেন ।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন…
''তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাং প্ৰীতিপূর্বক I
দদামি বুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপযান্তি তে''।।গীতা ১০/১০
দদামি বুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপযান্তি তে''।।গীতা ১০/১০
''অর্থাৎ যারা নিরন্তর প্রীতি সহকারে আমার আরাধনা করে, তাদের আমি বুদ্ধিযোগ প্ৰদান করি , যার ফলে তারা আমার কাছে ফিরে আসতে পারে''।
মূল কথা হচ্ছে , শিষ্য যদি ঐকান্তিকতা সহকারে শ্ৰীগুরুদেবের আদেশ পালন করেন , তা হলে তিনি তৎক্ষণাৎ বাণী অথবা বপুর দ্বারা পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গ লাভ করতে পারেন । সেটিই হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবানকে দৰ্শন করার একমাত্ৰ রহস্য ।
ইন্দ্ৰিয় তৃপ্তিসাধনে যুক্ত থেকে এবং সেই সঙ্গে বৃন্দাবনের কোন কুঞ্জে ভগবানকে দৰ্শন করার জন্য আকুল হওয়ার পরিবর্তে , যদি কেবল শ্ৰীগুরুদেবের বাণীর অনুসরণ করেন, তা হলে অনায়াসে ভগবানকে দৰ্শন করা যায়।।
শ্রীগুরু চরণ পদ্ম, কেবল ভক্তিসদ্ম।
বন্দোঁ মুঞি সাবধান মতে।।
বন্দোঁ মুঞি সাবধান মতে।।
যাঁহার প্রসাদে ভাই, এ ভব তরিয়া যাই।
কৃষ্ণ প্রাপ্তি হোয় যাঁহা হৈতে।।
গুরুমুখ পদ্মবাক্য, চিত্তেতে করিয়া ঐক্য।
আর না করিহ মনে আশা।।
শ্রীগুরুচরণে রতি এই সে উত্তম গতি।
যে প্রসাদে পুরে সর্ব আশা।।
চক্ষুদান দিলা যেই, জন্মে - জন্মে প্রভু সেই।
দিব্যজ্ঞান হৃদে প্রকাশিত।।
প্রেম ভক্তি যাঁহা হইতে, অবিদ্যা বিনাশ যাতে।
বেদে গায় যাঁহার চরিত।।
শ্রীগুরু করুণাসিন্ধু, অধম জনার বন্ধু।
লোকনাথ লোকের জীবন।।
হা হা প্রভো ! কর দয়া, দেহ মোরে পদ ছায়া।
এবে যশ ঘুষুক ত্রি - ভুবন, গুরুদেব পতিত পাবন।।
জয় প্রভুপাদ, জয় প্রভুপাদ, জয় প্রভুপাদ জয় প্রভুপাদ ।।
জয় গুরুদেব জয় গুরুদেব জয় গুরুদেব জয় গুরুদেব I I
No comments:
Post a Comment