Saturday, January 4, 2020


পুত্রদা একাদশী
♥♥শুভ একাদশী♥♥ ♥♥শুভ একাদশী♥♥ ♥♥শুভ একাদশী♥♥

হরে কৃষ্ণ, আগামী ০৬/০১/২০২০ ইং রোজ -সোমবার পুত্রদা একাদশী I
(পারণ - পরদিন পূর্ব্বাহ্ন ০৮.০৩ মিঃ গতে ০৯.৫৭  মিঃ মধ্যে একাদশীর পারণ)

আপনি নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন।

পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম 'পুত্রদা' ব্রহ্মাণ্ডপুরাণে যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে এই তিথির মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে।

যুধিষ্ঠির বললেন, হে কৃষ্ণ! পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম কি, বিধিই বা কি,কোন দেবতা ঐদিন পূজিত হন এবং আপনি কার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে সেই ব্রতফল প্রদান করেছিলেন কৃপা করে আমাকে সবিস্তারে তা বলুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে রাজন! এই একাদশী `পুত্রদা' নামে প্রসিদ্ধ। সর্বপাপবিনাশিনী কামদা I এই একাদশীর অধিষ্ঠাতৃ দেবতা হলেন সিদ্ধিদাতা নারায়ণ। ত্রিলোকে এর মতো শ্রেষ্ঠ ব্রত নেই। এই ব্রতকারীকে নারায়ণ বিদ্বান যশস্বী করে তোলেন।এখন আমার ব্রতের মাহাত্ম্য শ্রবণ করুন।

ভদ্রাবতী পুরীতে সুকেতুমান নামে এক রাজা ছিলেন। তার রানীর নাম ছিল শৈব্যা। রাজদম্পতি বেশ সুখেই দিনযাপন করছিলেন। বংশ রক্ষার জন্য বহুদিন ধরে ধর্ম-কর্মের অনুষ্ঠান করেও যখন পুত্রলাভ হল না, তখন রাজা দুশ্চিন্তায় কাতর হয়ে পড়লেন। তাই সকল ঐশর্য্যবান হয়েও পুত্রহীন রাজার মনে কোন সুখ ছিলনা। তিনি ভাবতেন, পুত্রহীনের জন্ম বৃথা গৃহশূন্য। পিতৃ-দেব-মনুষ্যলোকের কাছে যে ঋণ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, তা পুত্র বিনা পরিশোধ হয়না। পুত্রবানজনের জগৎ এ যশলাভ উত্তম গতি লাভ হয় তাদের, আয়ু আারোগ্য, সম্পত্তি প্রভৃতি বিদ্যমান থাকে। নানা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে রাজা আত্মহত্যা করবেন বলে স্থির করলেন। কিন্তু পরে বিচার করে দেখলেন, আত্মহত্যা মহাপাপ, এর ফলে কেবল দেহের বিনাশমাত্র হবে,কিন্তু আমার পুত্রহীনতা তো দূর হবে না।

তারপর একদিন রাজা নিবিড় বনে গমন করলেন। বন ভ্রমণ করতে করতে দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত হলে রাজা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর হলেন। এদিক ওদিক জলাদির অনুসন্ধান করতে লাগলেন। তিনি চক্রবাক, রাজহংস এবং নানারকম মাছে পরিপূর্ণ একটি মনোরম সরোবর দেখতে পেলেন।সরোবরের কাছে মুনিদের একটি আশ্রম ছিল। তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। সরোবর তীরে মুনিগণ বেদ পাঠ করছিলেন। মুনিবৃন্দের শ্রীচরণে তিনি দণ্ডবৎ প্রণাম করলেন।

মুনিগণ রাজাকে বললেন, হে মহারাজ, আমরা আপনার প্রতি প্রসন্ন হয়েছি।আপনার কি প্রার্থনা বলুন।রাজা বললেন, আপনারা কে এবং কি জন্যই বা এখানে সমবেত হয়েছেন?মুনিগণ বললেন, হে মহারাজ, আমরা `বিশ্বদেব' নামে প্রসিদ্ধ। এই সরোবরে স্নান করতে এসেছি। আজ থেকে পাঁচদিন পরেই মাঘ মাস আরম্ভ হবে। আজ পুত্রদা একাদশী তিথি। পুত্রদান করে বলেই এই একাদশীর নাম পুত্রদা।তাদের কথা শুনে রাজা বললেন, হে মুনিবৃন্দ, আমি অপুত্রক। তাই পুত্রকামনায় অধীর হয়ে পড়েছি। এখন আপনাদের দেখে আমার হৃদয়ে আশার সঞ্চার হয়েছে। দুর্ভাগা পুত্রহীনের প্রতি অনুগ্রহ করে একটি পুত্র প্রদান করুন।
মুনিগণ বললেন, হে মহারাজ, আজ সেই পুত্রদা একাদশী তিথি। তাই আপনি এই একাদশী ব্রত পালন করুন। ভগবান শ্রীকেশবের অনুগ্রহে অবশ্যই আপনার পুত্রলাভ হবে। মুনিদের কথা শোনার পর যথাবিধানে রাজা কেবল ফলমূলাদি আহার করে সেই ব্রত অনুষ্ঠান করলেন।দ্বাদশী দিনে উপযুক্ত সময়ে শস্যাদি সহকারে পারণ করলেন।মুনিদের প্রণাম নিবেদন করে নিজগৃহে ফিরে এলেন। ব্রতের প্রভাবে রাজার যথাসময়ে একটি তেজস্বী পুত্র লাভ হল।

হে মহারাজ, এই ব্রত সকলেরই পালন করা কর্তব্য। মানব কল্যাণ কামনায় আপনার কাছে আমি এই ব্রতকথা বর্ণনা করলাম। নিষ্ঠাসহকারে যারা এই পুত্রদা একাদশী ব্রত পালন করবে, তারা `পুত' নামক নরক থেকে পরিত্রাণ লাভ করবে। এই ব্রতকথা শ্রবণ-কীর্ত্তনে অগ্নিষ্টোম যজ্ঞের ফল লাভ হয়।

অতএব, আমাদের প্রত্যেকেরই পৌষ মাসের শুক্লপক্ষ তিথিতে ভক্তি ভরে এই ‘’পুত্রদা’’ একাদশী ব্রত পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

★★★সবাইকে অনুরুধ অবশ্যই মনে রাখবেন যে, একাদশী ব্রত বা কোন উপবাস মানেই কিন্তু শুধু না খেয়ে থাকা নয়,বরং শুদ্ধ/পবিত্র দেহ,মন নিয়ে ব্রত/উপবাস রেখে নিরন্তর "ভগবানের নাম জপ" হরিকথা শ্রবন, কীর্ত্তন,গীতাপাঠ করে "ভগবান কে প্রসন্ন/খুশি করাই  ব্রত/উপবাসের মূল উদ্দেশ্য"★★★
‘’একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব।
প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব।।
এই মন্ত্র পাঠ করে নির্দিষ্ট সময়ের আগে পারণ করতে হয়।
গীতার মাহাত্ম্যে উল্লেখ আছে-

যোহধীতে বিষ্ণুপর্বাহে গীতাং শ্রীহরিবাসরে।
স্বপন জাগ্রৎ চলন তিষ্ঠন শত্রুভির্ন হীয়তে।।

অর্থাৎ শ্রীবিষ্ণুর উৎসবের দিনে, একাদশী জন্মাষ্টমীতে যিনি গীতা পাঠ করেন , তিনি চলুন বা দাড়িয়ে থাকুন, ঘুমিয়ে বা জেগে থাকুন,(যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন) শত্রু কখনো তার কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
জয় শ্রীকৃষ্ণের জয়জয় শ্রীএকাদশী মহাব্রতের জয়

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...