শ্রীল অভিরাম ঠাকুর
তিরোভাব
''পুরা শ্রীদাম নামাসদভি রামহধুনা মহান।
দ্বাত্রিংশতা জনৈরের বাহ্যং কাষ্ঠ মুবাহ যঃ।।''
শ্রীঅভিরাম ঠাকুর শ্রীনিত্যানন্দের প্রাণ দ্বাদশগোপালের অন্যতম ব্রজের 'শ্রীদাম' সখা।হুগলী জেলায় অন্তর্গত খানাকুল কৃষ্ণনগরে ইঁহার শ্রীপাট।পত্নীর নাম মালিনী দেবী।শ্রীপাটস্থ মন্দিরের দ্বারে একটি বকুলবৃক্ষ আছে।স্থানটি 'সিদ্ধবকুলকুঞ্জ' নামে অভিহিত।এই বকুলবৃক্ষের নিম্নে অভিরাম ঠাকুর সর্ব্বপ্রথমে আসিয়া উপবেশন করিয়াছিলেন। শ্রীমন্দিরের সম্মুখে পুস্করিণী খনন কালে শ্রীগোপীনাথ বিগ্রহ পাওয়া যায়। তদবধি পুস্করিণীটি 'অভিরাম কুণ্ড' নামে খ্যাত।
শ্রীমন্দিরে শ্রীব্রজবল্লভ মূর্ত্তি,শ্রীশালগ্রাম ও শ্রীগোপাল মূর্ত্তি ও বিরাজিত আছেন।শ্রীঅভিরাম ঠাকুর অত্যন্ত তেজীয়ান শক্তিশালী আচার্য্য ছিলেন।শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর আদেশে ভক্তিধৰ্ম্ম প্রচার কালে তিনি বহু পাষণ্ডকে উদ্ধার করিয়া ছিলেন।
''শতাধিক লোকে যারে নারে চালাইতে।
হেন কাষ্ঠে বংশী করি ধরিলেন হাতে।।''
শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে লিখিত ৩২ জনের বাহিত ও ভক্তিরত্নাকরে লিখিত একশতাধিক জনের বাহিত একখানি বৃহৎ কাষ্ঠকে যিনি প্রেমোন্মত্ত অবস্থায় উঠাইয়া বাঁশীর ন্যায় ধারণ করিয়াছিলেন।
শ্রীল অভিরাম ঠাকুর প্রণাম করিলে বিষ্ণুশিলা বা বিষ্ণু অর্চ্চা ব্যতীত অন্যান্য শিলা বা মূর্ত্তি বিদীর্ণ ও চূর্ণ হইয়া যাইত বলিয়া একটি প্রবাদ অদ্যাপি প্রচলিত।অবৈষ্ণবগণও ইঁহার প্রণাম সহ্য করিতে পারিত না।শ্রীনিত্যানন্দাত্মজ শ্রীবীরভদ্র গোস্বামী ও শ্রীগঙ্গামাতা গোস্বামিনী ইঁহার প্রণাম সহ্য করিতে পারিয়াছিলেন। ইহা ঠাকুর রচিত শ্রীবীরভদ্রাষ্টকে ও গঙ্গা স্তোত্রে উল্লিখিত আছে।
পুরীর বালিমঠটি ইঁহারই প্রতিষ্ঠিত বলিয়া অনেকে বলেন। চৈত্র - কৃষ্ণা সপ্তমী তিথিতে শ্রীল অভিরাম ঠাকুরের তিরোভাব তিথিতে খানাকুলে কৃষ্ণনগরে মহোৎসবে বহু লোকের সমাগম হয়।
No comments:
Post a Comment