Wednesday, April 8, 2020


রাধাকুণ্ড
🌻🌼🍁🌷🍁🌼🌻
রাধাকুণ্ড তাতে একবার স্নান করার মহিমা
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার দণ্ডবৎ প্রণাম I
''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।
তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।
অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

গুরবে গৌরচন্দ্রায় রাধিকায়ৈ তদালয়ে।
কৃষ্ণায় কৃষ্ণভক্তায় তদ্ভক্তায় নমো নমঃ।।

শ্রীমতি রাধারাণী, শ্রীকৃষ্ণের ব্রজভূমির প্রেমময়ী গোপবালিকাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তাঁর সরোবরও তাঁরই মতো শ্রীকৃষ্ণের অতি প্রিয়। শাস্ত্রে মুনিগণ এইরূপে বর্ণনা করেছেন। এমন কি এই রাধাকুণ্ড মহান মুনিগণেরও দুর্লভ বস্তু। সুতরাং সাধারণ ভক্তের নিকট তা পরম দুর্লভ। সুতরাং কেউ যদি সেই পবিত্র সরোবরে একবার অবগাহন করে, তা হলে তাঁর অন্তরে ভগবৎ প্রেমের উদয় হবে।

সেই কুণ্ডে নিত্য কৃষ্ণ,  রাধিকার সঙ্গে।
জলে জলকেলি,   তীরে রাসরঙ্গে।।
সেই কুণ্ডে যেই,   একবার করে স্নান।
তারে রাধাসম প্রেম,   কৃষ্ণ করে দান।।
কুণ্ডের মাধুরী যেন,   রাধার মধুরিমা।
কুণ্ডের মহিমা যেন,   রাধার মহিমা।।

এই সরোবর শ্রীকৃষ্ণের   শ্রীমতি রাধারাণীর 'জলকেলি' স্থান। সকল গোপীদের মধ্যে তিনিই শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তমা; তাই রাধারাণীর সরোবর 'রাধাকুণ্ড', রাধারাণীর মতোই শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তম স্থান। বাস্তবিক ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাধাকুণ্ডকে রাধারাণীর মতোই ভালোবাসেন। শুধু বৈধীভক্তি অনুশীলন কারীই নয়, এমনকি নিবিষ্টভাবে ভগবদ্ভজনকারী মহাত্মারাও সহজে রাধাকুণ্ড লাভ করতে পারেন না। তাই রাধাকুণ্ড সত্যই  সু - দুর্লভ।

শাস্ত্রে উল্লেখ আছে,- একবার মাত্র রাধাকুণ্ডে স্নান করলে, ভক্তের গোপীভাবের উদয় হয়; তাই শ্রীল রূপ গোস্বামীর মতে কেউ যদি রাধাকুণ্ড তটে স্থায়ীভাবে বসবাস না করতে পারে,তথাপি ভক্ত মাত্রেই যতবার সম্ভব রাধাকুণ্ডে স্নান করা উচিত। ভগবদ্ভজনে রাধারাণীর সখী - মঞ্জরীদের ভাব নীয়ে কৃষ্ণসেবা করতে হলে ভজনোন্নতি কামীদের পক্ষে রাধাকুণ্ডই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ভক্তদের মধ্যে য়ারা সিদ্ধদেহ লাভ করে অপ্রাকৃত ধাম, গোলক - বৃন্দাবনে যেতে চান, তাঁদের রাধাকুণ্ড তটে ভজন করা উচিত এবং রাধারাণীর ঘনিষ্ঠ কোন মঞ্জরীর আশ্রয়ে তাঁর নির্দ্দেশে কৃষ্ণসেবা করা উচিত।

গৌড়ীয় কৃষ্ণভক্তদের কৃষ্ণভজনের এই হচ্ছে সর্বোত্তম পথ। নারদ মুনি, সনকাদি মহান ভক্তরা পর্যন্ত রাধাকুণ্ডে স্নান করার সুযোগ পান না। সেক্ষেত্রে সাধারণ ভক্তদের কথাই ওঠে না।সৌভাগ্যক্রমে কেউ যদি রাধাকুণ্ডে গিয়ে একবার স্নান করতে পারে, তা হলে সে গোপীদের মতো কৃষ্ণপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। রাধাকুণ্ড তটে বাস করে ভগবদ্ভজনে  আবিষ্ট থাকবার কথা শাস্ত্রে লেখা আছে। সব রকম জড় বাসনা ত্যাগ করে রাধারাণীর সখী বা তাঁর মঞ্জরীর অধীনে রাধাকুণ্ড তটে ভজন করা উচিত।

এইভাবে সারা জীবন ভগবদ্ভজন করলে দেহত্যাগের পর ভগবদ্ধামে গিয়ে এইভাবে অধীনে ভগবদ্ভজন করা যাবে। রাধাকুণ্ডের মাহাত্ম্য অপরিসীম, সুতরাং রাধাকুণ্ড তটে ভগবদ্ভজন করে গোপীগণের অধীনে রাধারাণীর সেবা লাভের সুযোগ পাওয়া যায়।

রাধাকুণ্ডতট - কুঞ্জকুটীর।
গোবর্দ্ধন - পর্ব্বত, যামুনতীর॥১॥

কুসুম - সরোবর, মানসগঙ্গা।
কলিন্দনন্দিনী  বিপুল   তরঙ্গা॥২॥

বংশীবট, গোকুল, ধীরসমীর।
বৃন্দাবন - তরুলতিকা - বানীর॥৩॥

খগ - মৃগকুল,  মলয় - বাতাস।
ময়ূর, ভ্রমর, মুরলী - বিলাস॥৪॥

বেণু, শৃঙ্গ, পদচিহ্ণ, মেঘমালা।
বসন্ত, শশাঙ্ক, শঙ্খ, করতালা॥৫॥

যুগলবিলাসে অনুকূল জানি
লীলাবিলাস   উদ্দীপক মানি ॥৬॥

সব ছোড়ত কাঁহা নাহি যাউঁ
সব ছোড়ত পরাণ হারাউঁ ॥৭॥

ভকতিবিনোদ কহে শুন কান !
তুয়া উদ্দীপক হামার পরাণ ॥৮॥

রাধাকুণ্ড শ্যামকুণ্ড স্নান মন্ত্র !
রাধাকুণ্ডাদি তীর্থ আহ্বান মন্ত্র---

শ্রীশ্রীরাধাকুণ্ড শ্যামকুণ্ড পাবন সরোবর।
স্নান কালে ইহাগচ্ছ মানস জাহ্নবি তথা।।

গঙ্গে যমুনে চৈব গোদাবরি! সরস্বতী।
নর্মদে সিন্ধো কাবেরি জলেহস্মিন সন্নিধিং কুরু।।

কুরুক্ষেত্র গয়া গঙ্গা প্রভাস পুষ্করাণী চ।
তীর্থান্যেতানি পুণ্যানি স্নানকালে ভবন্তিহ।।

মন্ত্রে স্নানীয় জলে রাধাকুণ্ডাদি তীর্থ আহ্বান করে "হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র" নাম উচ্চারণ করে "শ্রীশ্রী রাধাকুণ্ড শ্রীশ্রী শ্যামকুণ্ডের " স্নান মন্ত্র বলে স্নান করবেন সকলে।

শ্রীশ্রী রাধাকুণ্ডের স্নান মন্ত্র---
"রাধিকাসম - সৌভাগ্যং সর্ব্বতীর্থ প্রবন্দিতম।
প্রসীদ রাধিকাকুণ্ডে!স্নামি তে সলিলে শুভে।।"

শ্রীশ্রী শ্যামকুণ্ডের স্নান মন্ত্র---
"উদ্ভূতং কৃষ্ণপাদাব্জাদরিষ্ট - বধতশ্ছলাৎ।
পাহি মাং পামরং স্নামি শ্যামকুণ্ড! জলে তব।।"
বলে স্নানীয় জলে সকলে মিলে স্নান করবেন।।

🌼🌼♥♥জয় শ্রী কুণ্ডেশ্বরী🌼♥♥🌼জয় শ্রীকুণ্ডরাজ🌼♥♥🌼জয় শ্রীরাধে ♥♥ 🌼🌼   

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...