Thursday, April 16, 2020


শ্রী বৃন্দাবন দাস ঠাকুর
তিরোভাব
''বেদব্যাসো এবাসীদ্দাসো বৃন্দাবনোহধুনা।
সখা যঃ কুসুমাপীড়ঃ কাৰ্য্যতস্তং সমাবিশৎ।।''
শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস মুনি শ্রীমদ্ভাগবতে কৃষ্ণলীলা বর্ণন করিয়াছেন।শ্রীব্যাসভিন্ন বিগ্রহ শ্রীল বৃন্দাবনদাস ঠাকুর কতৃক শ্রীচৈতন্যভাগবতে শ্রীচৈতন্য লীলা  বর্ণিত হইয়াছে।

১৪২৯ শকাব্দে বৈশাখী কৃষ্ণা দ্বাদশীতে মামগাছিতে (মতান্তরে কুমারহট্টে) শ্রীল বৃন্দাবনদাস ঠাকুর জন্ম হইলেও ইনি বসবাস করিয়াছিলেন বর্দ্ধমান জেলায় মক্রেশ্বর থানার অন্তর্গত দেনুড় গ্রামে।এইজন্য বৃন্দাবনদাস ঠাকুরের শ্রীপাট দেনুড়। তাঁহার পিতার নাম শ্রীবৈকুণ্ঠনাথ বিপ্র,মাতার নাম শ্রী নারায়ণী দেবী। নারায়ণী দেবী শ্রীবাস পণ্ডিতের ভ্রাতুষ্পুত্রী ছিলেন।

শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুর বাল্যবয়সে মাতৃসঙ্গে মামগাছি গ্রামে ছিলেন।তাঁহার পিতৃবিয়োগ হইলে তাঁহার জননী নারায়ণী দেবী শ্রীবাস পণ্ডিতের গৃহে আসেন;সেখানে তিনি মহাপ্রভুর বিশেষ কৃপা লাভ করেন।শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুর শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর কৃপা লাভ করিয়াছিলেন,এজন্য তাঁহাকে শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর মন্ত্র - শিষ্য বলা হয়।
'শ্রীমন্নিত্যানন্দ - কৃপাপাত্র বৃন্দাবনদাস।
চৈতন্যলীলায়  তেঁহো হয়েন আদিব্যাস।।'
শ্রীবাসপত্নী মালিনী দেবীর মামগাছি গ্রামে পিত্রালয় ছিল।নারায়ণী দেবীর মামগাছি গ্রামে বিবাহ হয়।এই গ্রামে এখনও ঠাকুর বৃন্দাবনদাসের সেবিত শ্রীগৌরনিত্যানন্দ শ্রীমূর্ত্তি পূজিত হইতেছেন।শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুর ১৪৫৭ শকাব্দে শ্রীচৈতন্যভাগবত রচনা করেন।

শ্রীল বৃন্দাবনদাস ঠাকুরের শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর লীলাবর্ণনে আবেশ হওয়ায় গ্রন্থবিস্তার ভয়ে কোনও কোনও লীলা সূত্ররূপে বর্ণন করেন।বিশেষতঃ শ্রীমন্মহাপ্রভুর শেষলীলা বর্ণন অসম্পূর্ণ থাকিয়া যায়।শ্রীল কবিরাজ গোস্বামী প্রভু শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে শ্রীল বৃন্দাবনদাস ঠাকুর কতৃক শ্রীচৈতন্যভাগবতে যাহা সূত্ররূপে বর্ণিত হইয়াছে,তাহা এবং শ্রীমন্মহাপ্রভুর শেষলীলা বিস্তৃত ভাবে বর্ণন করেন।
''চৈতন্য - লীলার ব্যাস,- দাস বৃন্দাবন।
মধুর করিলা লীলা করিলা রচন।।
গ্রন্থ - বিস্তার - ভয়ে ছাড়িলা যে যে স্থানে।
সেই সেই স্থানে কিছু করিব ব্যাখ্যানে।।''

শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুরের কৃষ্ণবহির্মুখ দীনজীবগণের প্রতি অপরিসীম কৃপার নিদর্শনরূপ শাসন বাক্য,-
''এত পরিহারেও যে পাপী নিন্দা করে। 
তবে লাথি মারো তার শিরের উপরে।।''
যাহা শ্রীচৈতন্যভাগবতে আদি,মধ্য খণ্ডে পুনঃ পুনঃ উল্লসিত হইয়াছে, তাহাতে জগতের দুর্ভাগা অভিমানী ব্যক্তিগণ অনেকেই ভুল বুঝিয়া শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুরের চরিত্র সমালোচনা করিতে গিয়া অপরাধপঙ্কে নিমজ্জিত হইয়াছেন। শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর প্রভুপাদ উক্ত বিষয়ে যে বিচার প্রদর্শন করেছেন তাহা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য।

শ্রীনিত্যানন্দগুরুদাস - সাক্ষাৎ ব্যাসবতার বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীল ঠাকুর বৃন্দাবনের অপ্রাকৃত পদাঘাতাভিনয় কালে একটি ধূলিকণাও যে সকল সৌভাগ্যবান নিন্দকের শিরে পতিত হইবে,তাহাদের সুমঙ্গল অর্থাৎ অনর্থ নিবৃত্তি সর্ব্বতোভাবে অবশ্যম্ভাবী।

বৈশাখী কৃষ্ণা দশমী তিথিতে শ্রীবৃন্দাবনদাস ঠাকুর তিরোধান লীলা করেন।

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...