Wednesday, April 29, 2020



জহ্নু - সপ্তমী
আজ পবিত্র জহ্নু সপ্তমী। বৈদিক সংষ্কৃতির ইতিহাসে আজ একটি বিশেষ দিন। এই দিনেই গঙ্গামাতা জহ্নু মুনির ডান কান থেকে প্রবাহিতা হয়ে জাহ্নবী নামে পরিচিতা হয়েছিলেন।

কলিযুগে গঙ্গাই পরমতীর্থ-
‘’সর্ব্বং কৃতযুগে পুণ্যং, ত্রেতায়াং পুষ্করং স্মৃতম।
দ্বাপরে তু কুরুক্ষেত্রং গঙ্গা কলিযুগে স্মৃতা।।‘’

মহাভারতে (বন পর্ব ৭০/৯০) বলা হয়েছে- সত্যযুগে সকল স্থানই তীর্থ, ত্রেতায় পুষ্করের শ্রেষ্ঠত্ব, দ্বাপরের শ্রেষ্ঠ তীর্থ কুরুক্ষেত্র আর কলিযুগের শ্রেষ্ঠতীর্থ হলো গঙ্গা।

গঙ্গার প্রণাম মন্ত্র
সদ্যঃ পাতকসংহন্ত্রী সদ্যোদুঃখবিনাশিনী।
সুখদা মোক্ষদা গঙ্গা গঙ্গৈব পরমা গতিঃ।।
অর্থাৎ,- যিনি তত্ক্ষণাৎ পাপ হরণ করেন, দুঃখ বিনাশ করেন, সুখদাত্রী মোক্ষদাত্রী গঙ্গা, সেই গঙ্গাই আমার পরম গতি।

কিংবদন্তি আছে কপিল মুনির ক্রোধে ভষ্মীভূত মহারাজ সগরের ষাটহাজার মৃতপুত্রদের সদগতি কামনায়, মহারাজ ভগীরথ গঙ্গাকে পৃথিবীতে নিয়ে আসেন। গঙ্গা মাতার প্রচণ্ড বেগ ধারাকে থামানোর জন্য মহাদেব গঙ্গামাতাকে নিজের শিরের উপরে ধারণ করেন। শিবের জটা থেকে মুক্তি পেয়ে গঙ্গা আসছিলেন ভগীরথকে অনুসরণ করে। পথে গঙ্গামাতা দেখেন আশ্রমে জপতপে মগ্ন রয়েছেন ঋষি জহ্নু। ভগবৎ ইচ্ছায় তিনি জলের স্রোতে আশ্রমটি ভাসিয়ে নেন। এই  ঘটনায় অত্যন্ত রেগে গিয়ে জহ্নু ঋষি গঙ্গাকে গিলে ফেলেন। পরে ভগীরথের অনুনয়ে প্রসন্ন হয়ে বেরও করে দেন ডান কান দিয়ে। সেই জন্য মানুষের ডান কানকে পবিত্র মানা হয়। বিশেষ করে ব্রাহ্মণ বৈষ্ণবরা শৌচ ক্রিয়ার সময়ে পইতে ডান কানের উপরে রেখে পবিত্র হন। সেই থেকে গঙ্গা পরিচিত হয়েছেন জাহ্নবী বা জহ্নু ঋষির কন্যা নামে।

পুরাণ মতে, বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের সপ্তম দিনটিতেই ঋষি জহ্নুর কান থেকে নির্গত হয়েছিলেন গঙ্গা। তাই এই দিনটিকে যেমন গঙ্গোৎপত্তি নামে অভিহিত করা হয়, তেমনই ঋষির নামে জহ্নু সপ্তমী এবং দেবীর নামে গঙ্গা সপ্তমী বলেও চিহ্নিত করা হয়।

মাতা গঙ্গা সমগ্র পৃথিবীর সকল মানুষের হৃদয়ের সমস্ত কলুষ বহিষ্কৃত করে শুদ্ধভক্তির পথে অগ্রসর হতে সহায়তা করুন। হরেকৃষ্ণ!!

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...