Friday, April 17, 2020


শ্রীএকাদশী
বরুথিনী একাদশী
♥♥শুভ একাদশী♥♥ ♥♥শুভ একাদশী♥♥
হরে কৃষ্ণ, আগামী ১৮/০৪/২০২০ ইং রোজ - শনিবার বরুথিনী একাদশী I
(পারণ - পরদিন পূর্ব্বাহ্ন ০৯।৩০ মিঃ মধ্যে একাদশীর পারণ)

আপনি নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন ও অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন।

শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়তঃ
সকল সাধু,গুরু,বৈষ্ণব গৌর ভক্তবৃন্দের শ্রীচরণে আমার দণ্ডবৎ প্রণাম।
''হরি - গুরু - বৈষ্ণব তিনিহেঁ স্মরণ।
তিনেহেঁ স্মরণ হইতে বিঘ্ন বিনাশন।।
অনায়াসে হয় নিজ বাঞ্ছিত পূরণ ।।‘’

গুরবে গৌরচন্দ্রায় রাধিকায়ৈ তদালয়ে।
কৃষ্ণায় কৃষ্ণভক্তায় তদ্ভক্তায় নমো নমঃ।।

একাদশী পালনের নিয়ম ও মাহাত্ম্য
বছরে ছাব্বিশটি একাদশী আসে। সাধারণত বার মাসে চব্বিশটি একাদশী। এইগুলি হচ্ছে,- ''উৎপন্না, মোক্ষদা, সফলা, পুত্রদা, ষটতিলা, জয়া,বিজয়া, আমলকি, পাপমোচনী, কামদা, বরুথিনী, মোহিনী, অপরা, নির্জলা, যোগিনী, শয়ন, কামিকা, পবিত্রা, অন্নদা, পরিবর্তিনী বা পার্শ্ব, ইন্দিরা, পাশাঙ্কুশা, রমা এবং উত্থান।'' কিন্তু যে বৎসর পুরুষোত্তমাস, অধিমাস বা মলমাস থাকে, সেই বৎসর পদ্মিনী ও পরমা নামে আরও দুটি একাদশীর আবির্ভাব হয়।

একাদশীব্রতের নিত্যতা চারটি I  যথা…
) শ্রীভগবান হরির সন্তুষ্টি বিধান
) শাস্ত্রোক্ত বিধি প্রাপ্তি
) আহারের নিষিদ্ধতা
) ব্রতের অকারণে অনিষ্টোৎপত্তি

) শ্রীভগবান হরির সন্তুষ্টি বিধান
শুক্লা বা কৃষ্ণ পক্ষের একাদশী দিনে উপবাসী থাকিয়া দ্বাদশী দিনে আহার করিলে ব্রতে হরির পরমা প্রীতি সঞ্চার হয় (মৎস পুরাণ ভবিষৎ পুরাণ)
একাদশী দিনে আহার নিষিদ্ধ, এই ব্রত নিশ্চয়ই হরির প্রীতিকর (অগ্নি পুরাণ)
কি বিপ্র, কি ক্ষত্রিয়, কি বৈশ্য, কি শূদ্র, কি নারী যে কেহই হউক না কেন, ভক্তি সহকারে বিষ্ণু প্রীতিকর একাদশী ব্রত পালন করিলে মোক্ষ লাভ করিতে পারেন (বৃহন্নারদীয় পুরাণ)

) শাস্ত্রোক্ত বিধি প্রাপ্তি
আয়ুক্ষয় যাবৎ একাদশীতে উপবাস কর্তব্য (অগ্নিপুরাণ)
যাবৎজীবন দ্বাদশী পরিত্যাগ করিতে নাই (বিষ্ণুরহস্য)

) আহারের নিষিদ্ধতা
পূর্বদিনে (সংযমদিনে, দশমীতে) রাত্রীভোজন, অপরদিনে (পারণ দিনে, দ্বাদশীতে) রাত্রীভোজন এবং মধ্য দিনে (উপবাস দিনে, একাদশীতে) দিবাভোজন রাত্রী ভোজন, উপবাস ফলকামী ব্যক্তি এই ভোজন চতুষ্টয় ত্যাগ করবে (বৃহদন্নারদীয় পুরাণ)

) ব্রতের অকারণে অনিষ্টোৎপত্তি
হরিবাসর সমাগত হইলে ব্রহ্মহত্যাদি নিখিল পাতক অন্নমধ্যে অধিষ্টিত হয়, সুতরাং হরিবাসরে আহার করলে যাবতীয় পাতকই গৃহীত হইয়া থাকে একাদশী না করিলে বিধবা মহাত্মা যতিকেও আপ্রলয় অন্ধতামিশ্র নরকে পচ্যমান হইতে হয়
(
নারদীয় পুরাণ)
একাদশী দিনে আহার করিলে মাতৃঘাতী, পিতৃঘাতী, ভ্রাতৃঘাতী গুরুহন্তা পাপী বলিয়া পরিগণিত হইতে হয়, সে ব্যক্তি বিষ্ণুধাম হইতে বিচ্যুত হইয়া পড়ে (স্কন্ধ পুরাণ)
পাতকী ব্যক্তি একাকী নরকে গমন করে সত্য, কিন্তু যে ব্যক্তি একাদশীতে অন্ন ভোজন করে, সে পিতৃগণসহ নরকগামী হয় (বিষ্ণুধর্ম্মোত্তর)
হরিবাসর উপস্থিত হইলে তদ্দিনে যখন পুরোডাশও (যজ্ঞায় হবির্বিশেষ) অভক্ষ্য বলিয়া পরিগণিত হয়, তখন অন্নপাকের বিষয় আর কি বলব ? (পদ্মপুরাণ)
বিধবা হইয়া একাদশীতে আহার করিলে তাহার সমস্ত সুকৃত বিনাশ পায় (কাত্যায়নস্মৃতি )
একাদশীর নিত্যতা
শুক্লপক্ষ কৃষ্ণপক্ষ উভয় পক্ষে-
বিষ্ণুরহস্য, স্কন্ধপুরাণ, কুর্ম্মপুরাণ, নারদীয় পুরাণে লিখিত আছে শুক্লা একাদশী যেরূপ, কৃষ্ণাও তদ্রূপ জানিবে, উভয়ে বিন্দুমাত্রও প্রভেদ নাই
গো, তিল ব্রাহ্মন ইহারা কৃষ্ণ বর্ণ হইলেও যেরূপ দোষাবহ নহে, সেরূপ কি কৃষ্ণ, কি শুক্লা উভয়পক্ষীয় একাদশীই উপবাসের যোগ্য।
একাদশীদ্বয়ের ভেদজ্ঞান করিলে আজন্ম পরিত্রানের আর উপায় দৃষ্ট হয় না
(
সনৎকুমারের উক্তি)
সংক্রান্তি প্রভৃতিতে
সংক্রান্তি বা হরিবাসরে একাদশী হইলে তদ্দিনই উপবাসের উপযুক্ত তিথি পুণ্যস্বরূপা সর্ব্বপাপহারিণী
(
কাত্যায়নী স্মৃতি)
নিশ্চিত জানিবে যে, শনি রবিবার এবং সংক্রান্তি গ্রহণ এই সমস্ত কালে একাদশী ত্যাগ করিতে নাই (দেবলের উক্তি)
বিষ্ণুরহস্যভীষণ আপন্ন অবস্থায় বা বিপুল আনন্দ সময়ে অথবা জননাশৌচে মরণাশৌচেও কদাচ দ্বাদশীব্রত ত্যজ্য নহে (সূতকাদিতে)
উপবাস দিনে শ্রাদ্ধ নিষিদ্ধ
একাদশী দিনে শ্রাদ্ধ করিলে দাতা, ভোক্তা প্রেত তিন জনেরই নরকগতি লাভ হয়। (ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ)
একাদশী অধিকারী
আট বৎসর থেকে আশী বৎসর পর্যন্ত শুক্লা কৃষ্ণ উভয়পক্ষীয় একাদশীতে উপবাস করা মানবের বিধেয় (কাত্যায়ন স্মৃতি)
কি বৈষ্ণব, কি শৈব সকলের পক্ষেই একাদশীব্রত করা কর্তব্য I (বিষ্ণুধর্মোত্তর)
স্কন্ধ পুরাণে শিবের উক্তি
হরিবাসরে আহার করিলে তাহাকে শৈব বা সৌর অথবা আশ্রমী কিংবা তীর্থসেবী বলিয়া পরিগণিত করা যায় না, সে শ্বপচ অপেক্ষাও সমধিক পাপী হে শঙ্করী ! মদ্ভক্তি আশ্রয়পূর্বক হরিবাসরে আহার করিলে সেই দুষ্ট পাতকীকে মদীয় অপ্রিয়কারী বলে জানবে
মহাভারতের  উদ্দ্যোগ পর্বে প্রকাশিত আছে,- জল, ফল, মূল, ক্ষীর, ঘৃত, ব্রাহ্মণ কামনা, গুরুর বচন ঔষুধ এই আটটি ব্রত নাশক নহে
কাশ্যপ পঞ্চরাত্রে লিখিত আছে, দীক্ষিত ভক্তনিষ্ঠ যে বৈষ্ণব ইহধামে মদীয় উত্থান দিবসে, শয়নাহে পার্শ্ব- পরিবর্তনে ফল মূল সেবন করে আমি কদাচ তদীয় অপরাধ মার্জ্জনা করি না, আপ্রলয় তাহাকে ভীষণ নরকে নিপাতিত করিয়া রাখি
একাদশী মাহাত্ম্য
যেরূপ দাবানল সমুদ্রগত হইয়া গহবরস্থ শুষ্ক আর্দ্র কাষ্ঠ্রাশিকে ভস্মীভূত করে, তদ্রুপ শ্রীহরিবাসরে শ্রীহরি নিখিল পাতক বিনাশ করিয়া দেন (ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ)
হে বিপ্র ! কলিযুগে যে সকল ব্যক্তি উচ্ছন্ন পথাবলম্বী নিষ্ঠুরতা নিবন্ধন কলূষিতাত্মা হইয়াছে, একাদশী ভিন্ন সংসারে তাহাদিগের উদ্ধারের উপায় আর নেই। সর্বশেষ লিখিত আছে একাদশী- ব্রত-কথা শ্রবণ করিলে, তদব্রতানুষ্ঠানে অনুমোদন করিলে এবং একাদশী ব্রতাচরণার্থ  মানবগণের (হৃদয়) শ্রদ্ধা জন্মাইয়া দিলে অখিল পাপ হইতে পরিত্রাণ  লাভ করতঃ গরুড়ধ্বজের অত্যুত্তমপদ বৈকুন্ঠধামে গতি লাভ করিতে পারে।
জয় শ্রীকৃষ্ণের জয়জয় শ্রীএকাদশী মহাব্রতের জয়

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...