Thursday, April 2, 2020



নিত্যলীলা প্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ পরিব্রাজকাচার্য্য ত্রিদণ্ডিস্বামী ১০৮ শ্রী - শ্রীমদ্ভক্তিসৌধ আশ্রম গোস্বামী মহারাজ
(তিরোভাব)
বঙ্গদেশের উত্তর অংশে পশ্চিম বঙ্গ কুচবিহারের নাটাবাড়িতে ১৯১৪ সালে,বৈশাখ মাসে অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে পিতা শ্রীযুক্ত যোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মাতা শ্রীমতী বিলাসিনী দেবীকে অবলম্বন করিয়া পঞ্চম পুত্র রূপে জন্ম গ্রহণ করিলেন।পিতা - মাতা পুত্রের নাম রাখিলেন,- শ্রীভূপেন্দ্র নাথ চট্টোপাধ্যায়।‘ ১৯১৭ সালে মাত্র তিন বৎসর বয়সে শ্রীভূপেন্দ্র নাথ পিতৃহারা হন এবং মাত্র দশদিনের ব্যবধানে ইনি মাতৃহারাও হইলেন।পিতৃ - মাতৃহীন নিতান্ত অসহায় শিশুগণকে মাতামহ উপায়ন্তর না দেখিয়া নিজ নিকটে অর্থাৎ ঢাকা জেলান্তর্গত রাড়িখাল নামক স্থানে মাতুলালয়ে দেশের বাড়িতে লইয়া আসিলেন। সন্তান - সন্ততিদের যথাযথ লালন পালন দেখাশুনার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তিনি যেমন পার্থিব জাগতিক বিদ্যায় সুকীর্তিমান ছিলেন,তেমনই অপার্থিব পরমার্থানুশীলনেও সুবিচারক সুবুদ্ধিমানের পরিচয় দিয়েছেন।একদিন শ্রীভগবৎ ইচ্ছায় শ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণব জগতে শ্রীমন্মহাপ্রভুর নিত্য পার্ষদ পরমহংস কুল চূড়ামণি জগৎগুরু শ্রীশ্রীলপ্রভুপাদ ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের এক যুগান্তকারী ভাব ধারায় লেখনী 'শ্রীগৌড়ীয় পত্রিকা' তাঁহার হাতে পড়ে। তিনি পত্রিকা খানি অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পাঠ করিয়া অত্যন্ত মুগ্ধ হইলেন।

শ্রীলপ্রভুপাদের বাণী পড়িয়া এবং বিশেষ গম্ভীর ভাবে অনুভব করিয়া তাঁহার হৃদয়ে শুদ্ধভক্তি কুসুম প্রস্ফুটিত হইল। তিনি ভাবিয়া স্থির করিলেন যে,- ''এই কয়দিনের জীবনে আমরা কেহ কর্ম্মবীর,জ্ঞানবীর,ধর্মবীর অথবা কোন দানবীর হইতে আসি নাই।কেবল বিশুদ্ধ ভক্তি সেবা সৌন্দর্য্যের দ্বারা সেই অদ্বয় জ্ঞান তত্ত্ব বস্তু সাক্ষাৎ ব্রজেন্দ্রানন্দন করুণাঘন প্রেমপুরুষোত্তম পরমৌদার্য্য লীলাময় বিগ্রহ স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবাতেই জীবের চরম পরম সার্থকতা লাভ হয়,এই কর্ত্তব্য সাধনের জন্যই মনুষ্য জন্ম লইয়া জগতে আসা।ইহাই পরম কর্ত্তব্য শেষ কথা। ফলে তৎক্ষণাৎ সমস্ত কিছু পরিত্যাগ করিয়া প্রাপ্ত পত্রিকার ঠিকানা অনুযায়ী কোলকাতা বাগবাজারস্থিত 'শ্রীগৌড়ীয় মিশনে' প্রত্যহ যাতায়াত করিতে থাকিলেন।

একদিন অতিমূর্ত্ত্য মহাপুরুষ জগদগুরু শ্রীশ্রীলপ্রভুপাদ ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের দিব্য দর্শন লাভ হয়। প্রথম দর্শনেই তাঁহার শ্রীচরণে সমস্ত মন - প্রাণ - আত্মা পর্য্যন্ত বিক্রয় করিয়া অনন্ত জীবন ধরিয়া সংসার কারাগারে অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমণের ক্লান্তি শ্রম হইতে চিরদিনের মত বিশ্রাম লাভ করিয়া শ্রীলপ্রভুপাদের শ্রীচরণে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। শ্রীলপ্রভুপাদের শ্রীচরণাশ্রিত পরম সুহৃদ শ্রীমতনবদ্বীপ প্রভু যথাযথ ভাবে সময় উপযোগী বিশেষ সহায়তা করেন।সময় বুঝিয়া শ্রীলপ্রভুপাদের সহিত সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা,পত্র - পত্রিকাদি সমর্পণ করা এবং মহা - মহাপ্রসাদ শ্রীল প্রভুপাদের উচ্ছিষ্ট দেওয়া প্রভৃতি।ঐ মহান বৈষ্ণবের সৎসঙ্গ প্রভাবে এবং পরম প্রীত্যস্পদ স্নেহও ব্যবহারে তাঁহার হৃদয় বিগলিত হয়,ফলে একদিন চরম সৌভাগ্যের উদয় হয়। ''১৯৩৫ সালে ৮ই মে মহাপুণ্য লগ্নে কোলকাতা বাগবাজার শ্রীগৌড়ীয় মিশনে তাঁহার শ্রীনারদ পাঞ্চরাত্রিক বিধানানুসারে শ্রীহরিনাম দীক্ষা গ্রহণ লীলা সুসম্পন্ন হয়।তাঁহার নাম হইল ''শ্রীপাদ ভূতবৃৎ ব্রহ্মচারী''

দীক্ষার পর শ্রীপাদ ভূতবৃৎ ব্রহ্মচারী,শ্রীপাদ নবদ্বীপ প্রভুর সঙ্গে সর্বপ্রথম সাধু - গুরু - বৈষ্ণব - ভগবানের সেবার জন্য মাধুকরী ভিক্ষা সেবা আরম্ভ করেন। শ্রীল প্রভুপাদ তাঁহার গুরুনিষ্ঠা পরীক্ষার্থে নিজে সঙ্গে করিয়া শ্রীধাম মায়াপুরে লইয়া আসেন এবং তাঁহাকে শ্রীচৈতন্যমঠের সেবায় কৃষিকার্য্যে নিযুক্ত করেন।একদিন ব্রিটিশ শাসন,স্যর বড়লাট তাঁহার সকল পরিকরগণ সহ শ্রীধাম মায়াপুরে পরিদর্শনের ইচ্ছায় শ্রীচৈতন্যমঠে আসেন। শ্রীলপ্রভুপাদের কৃপাদেশে শ্রীমৎ ভূতবৃৎ ব্রহ্মচারী জী তাঁহাদের নিকট অপূর্ব ভাবে উদীপ্ত কন্ঠে অত্যন্ত তেজস্বীতার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিজ্ঞান সমন্বিত বক্তৃতা দেন।তাঁহার ঐরূপ বিশেষ গাম্ভীর্য্য পূর্ণ ভাষণে শ্রীলপ্রভুপাদ অত্যন্ত প্রীতিলাভ করেন।ফলে অতি শীঘ্রই শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীভক্তিবিনোদ ইনষ্টিটিউটে শিক্ষকতার কার্য্যে তাঁহাকে নিযুক্ত করেন।

পরবর্ত্তীকালে ১৯৩৬ সালের প্রথম দিকে শ্রীলপ্রভুপাদ তাঁহাকে মান্দ্রাজ মঠের ইনচার্জ করিয়া পাঠান।শ্রীলপ্রভুপাদ তাঁহাকে মান্দ্রাজ মঠের দায়িত্বে নিযুক্ত করিয়া বলিয়াছিলেন,- ''অন্ততঃ যদি একটি পৃথক রুম বাথরুম - পায়খানার ব্যবস্থা হয়,তবে অনায়াসে তিনি সেখানে ব্যাপক ভাবে প্রচার কার্য্য করিতে পারেন।'' সেই মহতী সেবার সৌভাগ্য লোভে পূর্ণোদ্যমে তিনি খুব পরিশ্রম করিয়া প্রচারাদি সেবা করিতে থাকেন। অনেক বিদেশী সাহেবগণের নিকটও মঠের শ্রীবৃদ্ধির জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিক্ষা করেন,ফলে শ্রীলপ্রভুপাদের ইচ্ছামত তাঁহার থাকিবার সামান্যতম ব্যবস্থা বা অন্যান্য বিষয়েও সু - ব্যবস্থা কল্পে তিনি যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেন।

শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীমন্মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথি বাসরে অনুষ্ঠিত শ্রীনবদ্বীপ ধাম প্রচারিনী সভার বার্ষিক অধিবেশনে শ্রীলপ্রভুপাদ শ্রীসভাপতির আসন অলংকৃত করিয়াছিলেন। উক্ত সভায় তিনি স্বয়ং সংস্কৃত ভাষায় লিখিত লিপিবদ্ধ করিয়া এক অনবদ্য শ্রীশ্রীগৌরাশীর্বাদ পত্র স্বহস্তে শ্রীল শ্রীপাদ ভূতবৃৎ ব্রহ্মচারী প্রভুর হস্তে তুলিয়া দেন।পত্রের মর্ম্মার্থে শ্রীলপ্রভুপাদ তাঁহাকে প্রচুর প্রশংসা পূর্বক প্রচারোৎসাহী - সত্যানুরাগ সংযুক্ত বলিয়াছেন এবং শ্রীপাদ ভূতবৃৎ ব্রহ্মচারী প্রভুকে ''ভক্তি সৌধ'' উপাধি প্রদান করেন।ঐ সময় শ্রীলপ্রভুপাদের আদেশে তিনি শ্রীগৌর - জয়ন্তীতে যোগ দিয়া শ্রীগৌর পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রচুর ভিক্ষাদি সংগ্রহ করিয়া শ্রীধামের সেবা করেন।

১৯৩৯ সালে ভক্তগণের একান্ত ইচ্ছায় তিনি রেঙ্গুনে অর্থাৎ ব্রহ্মদেশে প্রচারে যান।যাত্রাপথে জাহাজের মধ্যে তিনি ভয়ঙ্কর ঝড় তুফানের মধ্যে পড়েন।তাহাতে তিনি একমাত্র শ্রীহরিনামের আশ্রয়ে সকল যাত্রীসহ নিজেকে রক্ষা করেন।শ্রীলপ্রভুপাদের কৃপাদেশ আশীর্বাদকে সম্বল করিয়া তিনি বিপুল উৎসাহে শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুর শ্রীলপ্রভুপাদের কথা প্রচার করিয়া যথেষ্ট সম্মান সাফল্যের সঙ্গে স্বদেশে ফিরিয়া আসেন।বৈষ্ণবের সমস্তগুণ তাঁহার মধ্যে নিত্য বিরাজিত ছিল।
শ্রীমন্মহাপ্রভুর ''তৃণাদপি সুনীচ'' সর্বমহোত্তমতা তাঁহার জীবনাদর্শে দেখা যায়।

শ্রীপাদ ভূতবৃৎ প্রভু ব্রহ্মচারী অবস্থায় জ্যেষ্ঠ গুরুভ্রাতাদের আনুগত্যে এবং পরামর্শে নবদ্বীপ ধামে কোলের ডাঙ্গা তথা কোলদ্বীপে,আবার মায়াপুরে গঙ্গার তীরে ভজন করিবার অভিলাষে একটি ভজন কুটীর করিয়া বেশ কিছুদিন তথায় একান্তে ভজন করেন।তারপর শ্রীল মাধব গোস্বামী মহারাজ শ্রীল শ্রীধর গোস্বামী মহারাজের আনুগত্যে তিনি কলিকাতা দমদমে ''শ্রীচৈতন্যমঠ''  নামে একটি ছোট্ট মঠ স্থাপন করেন।
 
১৯৫২ সালে শ্রীপুরীধামে শ্রীটোটা গোপীনাথ মন্দিরে একই দিনে একই সাথে শ্রীমৎ হয়গ্রীব প্রভু (শ্রীল ভক্তিদয়িত মাধব গোস্বামী মহারাজ),শ্রীমৎ প্রণবানন্দ প্রভু (শ্রীল ভক্তিপ্রমোদ পুরি গোস্বামী মহারাজ) শ্রীপাদ ভূতবৃৎ প্রভু (শ্রীল ভক্তিসৌধ আশ্রম গোস্বামী মহারাজ) সকলেই জ্যেষ্ঠ গুরুভ্রাতা শ্রীল ভক্তিগৌরব বৈখানস গোস্বামী মহারাজের কাছে শ্রীনারদ পাঞ্চরাত্র বৈদিক বিধান অনুসারে ত্রিদণ্ডি সন্ন্যাস গ্রহণ করিলেন।

সেইদিন হইতে শ্রীমৎ ভূতবৃৎ প্রভু ''শ্রীল ভক্তিসৌধ আশ্রম গোস্বামী মহারাজ'' শুভ নামে সমস্ত বৈষ্ণব জগতে সুপরিচিত  হইলেন।গুরুভ্রাতা শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী মহারাজ তাঁহাকে অজাত শত্রু বলিয়া সম্বোধন করিয়াছিলেন।জ্যেষ্ঠ গুরুভ্রাতা শ্রীল ভক্তিহৃদয় বনদেব গোস্বামী মহারাজের সহিত তাঁহার অতীব অন্তরঙ্গ ভাব বন্ধুত্ব ছিল।শ্রীল ভক্তিহৃদয় বনদেব গোস্বামী মহারাজ শ্রীবৃন্দাবনে একটি ইউনিভার্সিটি স্থাপন করেন যার নাম করণ করেন ''ইনষ্টিটিউট অফ ওরিয়েন্ট্যাল ফিলোজফি''।তিনি ইনষ্টিটিউট এর ফাউণ্ডার এবং প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং শ্রীল ভক্তিসৌধ আশ্রম মহারাজকে সংস্থার 'ভাইস প্রেসিডেন্ট' পদে অলংকৃত করেন জীবনের শেষ সময় পর্য্যন্ত ১৯৫০ হইতে ১৯৭৭ সালের পরেও কিছুদিন পর্য্যন্ত সর্বোত্তম ভাবে নিজ দায়ীত্বের সঙ্গে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টের কার্য্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করেন।''

শ্রীল মহারাজ জীবনে কেদারনাথ বদ্রীনাথ ১১ বার দর্শন করেন এবং কৈলাস অমরনাথ প্রথম জীবনে দর্শন করেন।১৯৭৮ সালে অনেক ভক্ত শিষ্যগণের সঙ্গে শেষবার কেদারনাথ বদ্রীনাথ দর্শন শেষে আগষ্ট মাসে তিনি অসুস্থ লীলা করেন।ক্রমে ক্রমে অসুস্থতা বৃদ্ধি হইতে থাকে।নানা প্রকার চিকিৎসার সাহায্যে বেশ কিছুদিন সম্পূর্ণ সুস্থ থাকেন।১৯৮১ সালে কিছুদিন শ্রীধাম মায়াপুরে নিজ ভজন কুটিরে সুরধুনী গঙ্গা তীরে বাস করিয়া ভজন করেন শ্রীচৈতন্যমঠের সেবায় নিযুক্ত হন। ১৯৮২ সালে জানুয়ারী মাসে কোলকাতা শ্রীচৈতন্যগৌড়ীয় মঠের বার্ষিক উৎসবে তিনি মহা উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করিয়া দীর্ঘ দিন ব্যাপী মহতী ধর্ম্ম সভায় অত্যন্ত তেজস্বীতার সহিত উদ্দীপ্ত কন্ঠে মহা বীর্য্যবতী ভাষণ হরিকথা পরিবেশন করেন।  

বৎসর ফেব্রুয়ারী মাসে শ্রীপুরীধামে অনুষ্ঠিত শ্রীলপ্রভুপাদের আবির্ভাব উপলক্ষে যে বিরাট মহতী ধর্ম্ম সভার আয়োজন হয় তাহাতে তিনি বিশেষ অসুস্থতার কারণে যোগদান করিতে অসমর্থ  হন।ইহার পর ৯ই ফেব্রুয়ারী কতিপয় শিষ্যও  ভক্তগণের সঙ্গে পানিহাটিতে মহোৎসব করেন।তারপর থেকেই ক্রমশঃ শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে যাইতে থাকে।ইং ১৯৮২ সাল,১লা এপ্রিল বৃহস্পতিবার শ্রীরাম নবমী তিথির পূর্ব রাত্রি ঠিক /৩০ মিঃ,হঠাৎ সকলে তাঁহার শয়ন কক্ষ হইতে শুনিতে পাইলেন তিনি বেশ উচ্চস্বরে ''হরেকৃষ্ণ'' বলিলেন এবং সেই সঙ্গে তিনি শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের নিত্য গোলক বৃন্দাবনীয় নিভৃত নিকুঞ্জ সেবায় নিশান্ত লীলায় প্রবিষ্ট হইলেন।

No comments:

Post a Comment

🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴🌴🌳 🌻🌼 শ্রীবলরামের রাসযাত্রা 🌹 শ্রীকৃষ্ণের বসন্তরাস 🌼🌻 🌳🌴🪴🌲🦚🍁💐🏵️🌺🌷🌺🏵️💐🍁🦚🌲🪴...